অথবা, হরপ্রসাদ শাস্ত্রী তৈল দান শেখার জন্য স্কুল প্রতিষ্ঠার কথা বলেছেন কেন?
উত্তর : হরপ্রসাদ শাস্ত্রী বাংলা ভাষা ওও সাহিত্যের একজন নিষ্ঠাবান গবেষক ও অন্যতম প্রবন্ধকার রূপে প্রসিদ্ধি লাভ করেছেন। ‘তৈল’ প্রবন্ধে প্রাবন্ধিকের সুচিন্তিত সিদ্ধান্তমুখী মানসিকতা, রচনার মধ্যে বিশুদ্ধ কৌতুক রসের পরিবেশনা প্রবন্ধটিকে উপভোগ্য করে তুলেছে। প্রাবন্ধিক মনে করেন বাস্তবিক তৈল সর্বশক্তিমান, তার মহিমা অতি অপরূপ এবং তার মধ্যে সম্মিলনী শক্তি বিদ্যমান। হরপ্রসাদ শাস্ত্রীর শুধু তৈলের ব্যবহার সম্পর্কে বলেই শেষ করেননি। তৈল কখন কীভাবে, কাকে মারতে হয় এবং তার গুণাগুণ কীভাবে প্রকাশ পায় সে সম্পর্কেও আলোকপাত করেছেন। তিনি বলেছেন : “তৈল দিবার প্রবৃত্তি স্বাভাবিক। এ প্রবৃত্তি সকলেরই আছে এবং সুবিধামত আপন গৃহে ও আপন দলে সকলেই ইহা প্রয়োগ করিয়া থাকে।” কিন্তু তৈল দিলেই হয় না- কেননা তেল প্রয়োগ স্থান-কাল-পাত্র বুঝে না দিলে কোনো কাজেই আসে না। তাই তিনি তৈলদানের কৌশল রপ্ত করার জন্য একটি স্কুল প্রতিষ্ঠার উপর জোর দিয়ে দিয়েছেন। তিনি প্রস্তাব করেন : “তৈলদানের জন্য একটি স্কুলের নিতান্ত প্রয়োজন। অতএব, আমরা প্রস্তাব করি, বাছিয়া বাছিয়া কোন রায়বাহাদুর অথবা খা বাহাদুর প্রিন্সিপাল করিয়া শীঘ্র একটি স্নেহ নিষেকের কালেজ খোলা হয়।” এখানে উল্লেখ্য যে, প্রাবন্ধিক তৈলদানের স্কুলে রায়বাহাদুর অথবা খাঁ বাহাদুরকে কেন প্রিন্সিপাল করার প্রস্তাব করেছেন তা তিনি উল্লেখ না করলেও পাঠকের বুঝতে অসুবিধা হয় না যে তারা ইংরেজদেরকে বিভিন্নভাবে তোষামোদ করে এককথায় তৈল মেরে এ জাতীয় উপাধি লাভ করেছিলেন। সুতরাং তারাই এ স্কুলের যোগ্য শিক্ষক হিসেবে তাদের নাম প্রাবন্ধিক প্রস্তাব করেছেন।