স্বদেশী আন্দোলন বলতে ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের একটি অংশকে বোঝায়, যা ১৯০৫ সালের বঙ্গভঙ্গকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছিল। এই আন্দোলনের মূল লক্ষ্য ছিল ভারত থেকে ব্রিটিশ শাসনের উচ্ছেদ এবং দেশের অর্থনৈতিক উন্নতি সাধন।
স্বদেশী আন্দোলনের প্রধান রণকৌশল ছিল ব্রিটিশ পণ্য বয়কট এবং দেশীয় শিল্প ও উৎপাদন প্রক্রিয়ার উন্নতি সাধন। আন্দোলনকারীরা ব্রিটিশ পণ্য ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকেন এবং দেশীয় পণ্য ব্যবহারে উৎসাহিত করেন। তারা দেশীয় শিল্পের প্রচারণা চালান এবং দেশীয় শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার জন্য কাজ করেন।
স্বদেশী আন্দোলন ভারতের জনগণের মধ্যে ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে ব্যাপক গণজাগরণ সৃষ্টি করে। এ আন্দোলনের ফলে ভারতীয় জাতীয়তাবাদের প্রসার ঘটে এবং ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হয়।
স্বদেশী আন্দোলনের প্রধান প্রবক্তাগণ ছিলেন অরবিন্দ ঘোষ, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, বাল গঙ্গাধর তিলক, লালা লাজপত রায় প্রমুখ। এ আন্দোলন বাংলায় সবচেয়ে বেশি শক্তিশালী ছিল।
স্বদেশী আন্দোলনের কিছু উল্লেখযোগ্য ঘটনা হলো:
- ১৯০৫ সালে কলকাতায় বঙ্গভঙ্গ-বিরোধী দাঙ্গা
- ১৯০৬ সালে কলকাতায় স্বদেশী সম্মেলন
- ১৯০৬ সালে অরবিন্দ ঘোষের বন্দে মাতরম সংগঠনের প্রতিষ্ঠা
- ১৯০৭ সালে লালা লাজপত রায়ের বয়কট আন্দোলন
- ১৯০৮ সালে মানিকতলা বোমা মামলা
১৯১১ সালে লর্ড হার্ডিঞ্জের বঙ্গভঙ্গ রদ করার ফলে স্বদেশী আন্দোলনের তীব্রতা কিছুটা কমে যায়। তবে এ আন্দোলন ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের পথকে সুগম করে দেয়।