উত্তর : ভূমিকা : সোনারগাঁও পূর্বে বাংলার রাজধানী ছিলেন। বাংলার ইতিহাস সোনারগাঁও একটি ঐতিহাসিক স্থান। বারো
ভূঁইয়াদের নেতা ঈসা খাঁর রাজধানী ছিল সোনারগাঁও। ঈসা খান বাংলায় স্বাধীনভাবে শাসন পরিচালনা করেতেন। সোনারগাঁওয়ের
ঐতিহ্য বাংলার পরিচয় বহন করে।
→ সোনারগাঁও : সোনারগাঁও পূর্ব বাংলার রাজধানী হিসেবে সমধিক পরিচিত। সোনারগাঁও ঢাকা থেকে ২৭ কিলোমিটার
দক্ষিণ-পূর্ব এবং ২৩.৬৫৮৩ উত্তর ৯০.৬০৮৩ পূর্ব দিকে অবস্থিত। সোনারগাঁও নারায়ণগঞ্জের একটি উপজেলা। এই উপজেলার পশ্চিমে শীতলক্ষা নদী, পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদী ও বন্দর উপজেলা, উত্তরে রূপগঞ্জ উপজেলা ও আড়াইহাজার উপজেলা অবস্থিত এবং দক্ষিণ-পূর্বে মেঘনা নদী ।
২. সোনারগাঁওয়ের নামকরণ : সোনারগাঁও নামকরণের ইতিহাস রহস্যাবৃত। আর সি মজুমদার স্যার যদুনাথ সরকার যে
সুবর্ণ ভূমির কথা বলেছেন, তা এই সোনারগাঁও ভূমি। যার মাটির বর্ণ সুবর্ণ বা বহু বর্ণ ছিল এবং যাকে সুবর্ণ ভূমি বলা হতো। নিহাররঞ্জন রায় তার বাংলার ইতিহাস গ্রন্থে বলেন, প্রাচীন নিম্নবঙ্গে কোনো সোনার খনি ছিল অথবা বুড়িগঙ্গা পার্শ্ববর্তী নদীগুলোতে সোনার
গুড়ো ভেসে আসত বলে এই নামকরণ সোনারগাঁও।
৩. ইতিহাস : সোনারগাঁওয়ের প্রাচীন ইতিহাস খুবই সমৃদ্ধ সোনারগাঁও বাংলার মুসলিম শাসকদের অধীনে পূর্ব বঙ্গের
তৎকালীন প্রশাসনিক কেন্দ্র ছিল। শুর, পাল, সেন ও দেব রাজাদের আমলে সোনারগাঁয়ের গোড়াপত্তন শুরু শুরু হলেও সোনারগাঁওয়ের সমৃদ্ধ এবং গৌড়ের উজ্জ্বল যুগের শুরু হয়
১৩৩৮ খ্রিস্টাব্দে ফখরুদ্দিন মোবারক শাহের আমল থেকে। ১৩৩৮ খ্রিস্টাব্দে তিনি স্বাধীনতা ঘোষণা করলো। সোনারগাঁও স্বাধীন বাংলার রাজধানী হলো। পরবর্তীতে গিয়াসউদ্দিন আজম শাহ, শেরশাহ, ঈসা খাঁ পরবর্তীতে সোনারগাঁও রাজত্ব করেন। সোনারগাঁয়ের মুসলিম কাপড় বিশ্বজুড়ে প্রসিদ্ধ ছিল।
সোনারগাঁও হতে পাঞ্জাব পর্যন্ত পৃথিবীর দীর্ঘতম সড়ক গ্রান্ড ট্রাঙ্ক রোড অবস্থিত ।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, মুসলিম শাসনামলে বাংলার বারো ভূঁইয়াদের উৎপত্তি হয়। বারো ভূঁইয়াদের শক্তিশালী কেন্দ্র সোনারগাঁও। সোনারগাঁও ছিল বন্দর ও বাণিজ্য কেন্দ্র। চাল ও সুঁতিকাপড় বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে রপ্তানি হতো।।বাংলার ব্যবসা-বাণিজ্য সোনারগাঁওয়ের ভূমিকা অনেক।