উত্তর : ভূমিকা : বাংলার ইতিহাসে কররানী বংশের শাসনামল একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। সুলায়মান খান কররানী কররানী বংশের দ্বিতীয় শাসক। বাংলার উন্নয়নে তিনি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন। তিনি অভ্যন্তরীণ ও বহিঃআক্রমণ থেকে দেশকে রক্ষা করার জন্য কূটনৈতিক পরিচয় দেন।
● সুলায়মান খান কররানীর পরিচয় : সুলায়মান খান কররানী ছিলেন বাংলার সুলতান। তার বড় ভাই তাজ খান কররানী ১৫৬৫ সালে মৃত্যুবরণ করেন। ভাইয়ের মৃত্যুর পর তিনি সিংহাসনে অধিষ্ঠিত হন। রিয়াজুম সানাতিন অনুযায়ী তিনি গৌড় থেকে তান্ডার রাজধানী স্থানান্তর করেন। তিনি ছিলেন একজন বিচক্ষণ দক্ষ শাসক। সুলায়মান খান কররানী তার শাসনামলে নিজ নামে মুদ্রা চালু করেননি। তিনি আকবরের সাথে সম্পর্ক বজায় রাখেন। ১৫৬৮ শাসক সুলায়মান তার পুত্র বায়েজিদ খান কররানী ও তার বিখ্যাত সেনাপতি কালাপাহাড়কে উড়িষ্যা আক্রমণের জন্য পাঠান। কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ যুদ্ধের পর সুলায়মান উড়িষ্যা দখল করেন। সুলায়মান খান কররানী লোদি খান ও কুতুব খানকে যথাক্রমে উড়িষ্যা ও পুরীর গভর্নর নিয়োগ করেন। সুলায়মান খান কররানী কালাপাহাড়কে কামতা দখলের জন্য অভিযান প্রেরণ করেন। কালাপাহাড় কামতার সেনাপতি
শুক্লধজকে পরাজিত ও বন্দী করেন। সুলায়মান খান একজন ধার্মিক মুসলিম ছিলেন। তিন পুরনো মালদায় সোনা মসজিদ নির্মাণ করেন। ইতিহাসবিদ আব্দুল কাদির বাদাউনি উল্লেখ করেছেন সুলায়মান খান প্রতিদিন সকালে ১৫০ জন আলেমের সাথে ধর্মীয় আলাপ করতেন। এরপর অন্যান্য কাজ করতেন। সুলায়মান খান কররানী ৭ বছর শাসন করার পর ১৫৭২ সালের ১১ অক্টোবর মৃত্যুবরণ করেন। তার পুত্র বায়েজিদ খান কররানী এরপর সুলতান হন।
উপসংহার: পরিশেষে বলা যায় যে, স্বাধীন বাংলার ইতিহাসে সুলায়মান খান কররানীর অবদান অনেক। বাংলা কররানী বংশের
শাসকেরা বাংলা, বিহার ও উড়িষ্যা শাসন করেন। সুলায়মান খান কররানী বাংলার উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সুলায়মান খান কররানী বাংলার শক্তিশালী শাসক ছিলেন।