উত্তর : ভূমিকা : মধ্যযুগের গুরুত্বপূর্ণ স্থান বা সময় দখল করে আছে সুলতানি আমল। এ সময় বাংলার সর্ববিষয়ে পরিবর্তন এসেছিল। সুলতানেরা সুশাসন ও সমাজ জীবনের শান্তি-শৃঙ্খলার মাধ্যমে নতুন পরিবেশের সৃষ্টি করেছিলেন। সুলতানের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ব্যবসা বাণিজ্যের পৃষ্ঠপোষকতা করতেন। সুলতানদের এ নীতির ফলে বাংলার ব্যাপক আর্থ-সামাজিক উন্নতি হয়। নিম্নে সুলতানি আমলে বাংলার ব্যবসা-বাণিজ্য সম্পর্কে সংক্ষেপে বর্ণনা করা হলো-
→ সুলতানি আমলে বাংলার ব্যবসা-বাণিজ্য : সুলতানি শাসনামলে বাংলায় ব্যবসা-বাণিজ্যের বহুল সম্প্রসারণ ঘটে। কৃষিজাত ও শিল্পজাত দ্রব্যের প্রচুর উদ্বৃত্ত ব্যাপক বাণিজ্যের অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করে। মুসলিম শাসনের শুরুতে চট্টগ্রাম, সাতগাঁও প্রভৃতি সমুদ্র বন্দর দিয়ে রেশম, মরিচ, আদা, লাক্ষা, হরিতকি, পান, সুপারি, নারিকেল, গুড় প্রভৃতি ছিল রপ্তানি পণ্য। বিপুল পরিমাণ পণ্য রপ্তানির জন্য বাংলায় বৈদেশিক বাণিজ্য খুবই অনুকূল ছিল। সাধারণ প্রয়োজনীয় দ্রব্য বাংলায়ই উৎপাদন হত। সমগ্র সুলতানি আমলে বাংলায় এই ব্যাপক অনুকূল বাণিজ্য বজায় ছিল। বিদেশ থেকে সোনা, রুপা, তামা, মসলা, সুগন্ধি, কার্পেট, মূল্যবান পাথর প্রভৃতি সরঞ্জাম আমদানি করা হত।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, সুলতানি আমলের উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি বাংলাকে প্রভূত সমৃদ্ধ করে তুলেছিল। এজন্য বহু ঐতিহাসিক সুলতানি আমলের ভূয়াসী প্রশংসা করেছেন। সুলতানি শাসনামলে ও প্রজাহিতৈষীর জন্য প্রজারা শান্তিতে ছিল। বাংলায় উৎপাদন ভালো হত। বাংলার অনেক পণ্য বিদেশে রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন হত। আমদানি পণ্য ছিল সীমিত পরিমতো সুলতানদের বিলাসপণ্য সামগ্রীর বেশির ভাগ আমদানি করা হত। অর্থাৎ সুলতানি আমলে ব্যবসা-বাণিজ্যের অবস্থা ভালো ছিল।