উত্তর : ভূমিকা : সুলতানি শাসনামলে হিন্দু-মুসলিম সৌহার্দ্যপূর্ণ | ধর্মীয় সম্পর্ক বিদ্যমান ছিল। বাংলার সামাজিক জীবনে এটি
গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল। দীর্ঘদিন ধরে পারস্পরিক সহাবস্থান, আদান-
প্রদান ও সর্বপোরি সমঝোতা ও সহযোগিতামূলক মনোভাব হিন্দু- মুসলিম সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এতে করে বাংলায় হিন্দু-মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে প্রীতির সম্পর্ক ওঠে। সমাজ এর উন্নয়নে সহযোগিতামূলক মনোভাব অত্যন্ত প্রয়োজনীয় উপাদান। সুলতানি আমলে হিন্দু-মুসলিম সম্পর্কের ধর্মীয় দিক সম্পর্কে নিম্নে সংক্ষেপে আলোকপাত করা হলো:
→ সুলতানি আমলে হিন্দু-মুসলিম ধর্মীয় সম্পর্ক : সুলতানি আমলে অন্যান্য ক্ষেত্রের মত ধর্মীয় ক্ষেত্রেও হিন্দু-মুসলমানদের মধ্যে একটি সুসম্পর্ক লক্ষ করা পায়। মুসলিম শাসকেরা হিন্দুদের ধর্মীয় ব্যাপারে হস্তক্ষেপ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। সুলতানি শাসনামলে বাংলার হিন্দু জনগোষ্ঠী ধর্মীয় অনুষ্ঠানাদি উদযাপন, শিক্ষা ও ধর্মীয় প্রচারে পূর্ণ স্বাধীনতার দান করা হয়েছিল। হিন্দু জনগোষ্ঠী ধর্মানুষ্ঠান পালনে কখনই মুসলমানদের নিকট থেকে বাধার সম্মুখীন হননি। সমসাময়িক বৈষ্ণব সাহিত্য থেকে জানা যায় যে, ব্রাহ্মণরা বৈষ্ণব গুরু শ্রী চৈতন্যের বিপ্লবাত্মক চিন্তাধারার প্রতি খুবই বিরূপ
ছিল। তারা বৈষ্ণবগুরুকে নিরস্ত করার জন্য সুলতান আলাউদ্দিন হুসেন শাহের সাহায্য কামনা করেন। সুলতান বাস্তবতার নিরিখে
বিচার-বিশ্লেষণ করে শ্রী-চৈতন্যকে নির্বিঘ্নে তার ধর্ম প্রচারের অনুমতি দেন ও তাকে সর্বপ্রকার সহায়তা প্রদান করেন।.বলা যায় যে, মুসলিম রাষ্ট্রের এই সহিষ্ণু ও শোভন
দৃষ্টিভঙ্গির জন্যই ধর্মীয় ক্ষেত্রে হিন্দু-মুসলমানদের মধ্যে একটি সহিষ্ণুতামূলক সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
উপসংহার: পরিশেষে বলা যায় যে, সুলতানি যায় যে,.সুলতানি আমলে বাংলায় হিন্দু-মুসলিম ধর্মীয় সম্পর্ক ছিল এক
প্রদীপে দুটি শিখা । হিন্দুধর্মের ধর্মগ্রন্থের প্রতি মুসলমানদের অনুরাগ ছিল। অনেক মুসলিম কবি হিন্দু ধর্মগ্রন্থ রচনা ও পঠন-পাঠন
করেন। হিন্দু ধর্মগ্রন্থের প্রতি মুসলমানদের এই অনুরাগই মুসলিম ধর্ম গ্রন্থের প্রতি শিক্ষিত হিন্দুদের ভক্তি জাগরিত করেছিল ।