সুলতানি আমলে সাহিত্য কতটা বিকশিত হয়েছিল?

উত্তর : ভূমিকা : সুলতানি শাসনামলে বাংলায় সাহিত্যের অভুতপূর্ব উন্নতি সাধিত হয়। বহু দেশের বহু পণ্ডিত সুলতানি দরবারে ভিড় জমান। এসব পণ্ডিতেরা রাজদরবারে উপস্থিত থেকে সুলতানদের জীবনীসহ বহু সাহিত্য রচনা করে সাহিত্যের ধারাকে আরো সমৃদ্ধ করে গেছেন। নিম্নে সুলতানি আমলে বাংলায়
সাহিত্যের বিকাশ বা ধারা সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা করা হলো- সুলতানি আমলে বাংলায় সাহিত্য চর্চার ধারা : সুলতানি
আমলে বাংলায় চর্চাকৃত সাহিত্যমূলক হচ্ছে-
১. আরবি সাহিত্য : সুলতান আলাউদ্দিন হুসেন শাহের আমলে জৌনপুরের কবি হায়স কুতবন আরবি ভাষায় ‘মৃগাবতী’ কাব্য রচনা করেন। তিনি ১৫০৩ খ্রি. এই কাব্য রচনা করেন। অমৃত কুণ্ড গ্রন্থটি আরবি ভাষায় অনুবাদ হয়েছিল। এছাড়া আরও অনেক সাহিত্য আরবি ভাষায় অনুবাদ হয়েছিল ।
২. ফারসি সাহিত্য : সুলতানি আমলে বহু গ্রন্থ ফারসি ভাষায় রচিত হয়। ‘বাহর-উল-হায়াত’, ‘নাম-ই-হক’, ‘শরফ নাস’ প্রভৃতি ফারসি ভাষায় রচিত গ্রন্থ। সুলতান রুকনউদ্দিন কাউকাউসের সময় বহু গ্রন্থ ফারসি ভাষায় রচিত হয়, আলাউদ্দিন হুসেন শাহের
সময় মুহাম্মদ বিন ইয়জদান বখস বিখ্যাত হাদিস সংকলন, সহী বুখারী অনুলিখন করেন। এছাড়া বিভিন্ন শাসকদের সময় তাদের
সভা-কবিগণ বহু ফারসি সাহিত্য রচনা করে গিয়েছেন।
৩. বাংলা সাহিত্য বাংলার মুসলিম শাসকদের
পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলা সাহিত্যের বিকাশ হয়। এসময় বিখ্যাত ‘চর্যাপদ’ রচিত হয় বলে ধারণা করা হয়। বিভিন্ন ধর্মীয় কাব্যগুলো এ যুগের অন্যতম নিদর্শন। বাংলা ভাষার অনেক বিখ্যাত কবি- সাহিত্যিক সুলতানদের দরবারে অলংকৃত করেছিলেন। তাদের মাধ্যমে বাংলা সাহিত্যের প্রভূত উন্নতি সাধিত হয়।
উপসংহার: পরিশেষে একথা বলা যায় যে, মধ্যযুগে সুলতানি আমলে বাংলায় বিভিন্ন ভাষা-ভাষীর সাহিত্য চর্চা হত। সাহিত্যচর্চাই
সে যুগের সামগ্রিক প্রেক্ষাপট কেমন ছিল তার পরিচয় বহন করে। এসময় আরবি, ফারসি, সংস্কৃতিসহ বাংলা ভাষায় সাহিত্যচর্চা হতো।
এসকল সাহিত্যগুলো যুগ যুগ ধরে ইতিহাসের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসেবেও যথেষ্ট অবদান রেখে আছে।

https://topsuggestionbd.com/%e0%a6%9a%e0%a6%a4%e0%a7%81%e0%a6%b0%e0%a7%8d%e0%a6%a5-%e0%a6%85%e0%a6%a7%e0%a7%8d%e0%a6%af%e0%a6%be%e0%a6%af%e0%a6%bc-%e0%a6%b8%e0%a7%81%e0%a6%b2%e0%a6%a4%e0%a6%be%e0%a6%a8%e0%a6%bf-%e0%a6%86/