উত্তর : ভূমিকা : সুলতানি আমল বাংলার ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে আছে। সুলতানি শাসনামলে বাংলায় শিল্প, সাহিত্য,
স্থাপত্য কলা প্রভৃতিসহ মানব জীবনযাত্রার মান উন্নত ছিল। সমস্তটাই সম্ভব হয় সুলতানদের পৃষ্ঠপোষকতার জন্য। এসময় শিক্ষা ব্যবস্থা প্রভূত উন্নতি সাধন করে, সব মিলিয়ে সুলতানি আমলে বাংলা উত্তোরোত্তর সমৃদ্ধির পথে ধাবিত হয়েছিল ।
→ সুলতানি আমলে বাংলার শিক্ষা ব্যবস্থা : নিম্নে সুলতানি যুগে বাংলার শিক্ষা ব্যবস্থা সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোকপাত করা হলো :
সুলতানি শাসনামলে মুসলিম ও অমুসলিম সকল নাগরিকই শিক্ষা ও বিদ্যা লাভে সমান সুযোগ পেতেন। মুসলমান শাসকেরা
প্রথম থেকেই। মসজিদ মাদ্রাসা ও খানকাহ নির্মাণ করেছিলেন। এ সকল প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদেরকে বিদ্যা শিক্ষা দেওয়া হতো। মসজিদে প্রাথমিক বিদ্যা শিক্ষা ও মাদ্রাসায় উচ্চ শিক্ষা দেওয়া হতো। মসজিদে অক্ষর জ্ঞান, পবিত্র কোরআন পাব, নামাজ, রোজা
প্রভৃতি সম্পর্কে জ্ঞান দেওয়া হত। অন্যদিকে উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বা মাদ্রাসায় আরবি ও ফারসি ভাষা ও সাহিত্য, হাদিস, কোরআন
এবং ফিকহ প্রভৃতি বিষয়ে পড়ানো হত। দর্শন, চিকিৎসা বিদ্যা, ইতিহাস প্রভৃতি শিক্ষা দেওয়ার জন্য শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়।
অমুসলিমদেরকে শিক্ষা দানের জন্য পাঠশালা ও চতুষ্পঠী ছিল ।
১. পাঠশালা : প্রাথমিক শিক্ষা কেন্দ্র ও
২. চতুষ্পাঠী : উচ্চ শিক্ষা কেন্দ্র।
এসকল প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন বিষয়ে পাঠদান হত।
উপসংহার : উপর্যুক্ত আলোচনা শেষে বলা যায় যে, সুলতানি আমল অন্যান্য যুগের চেয়ে শিক্ষা-দীক্ষায় অনেক এগিয়ে ছিল। এর ফলে বাংলার এবং বাংলার মানুষের কল্যাণের
দ্বার উন্মোচিত হয়েছিল। মধ্যযুগের মত সময়ে সুলতানগণ সাধারণ জনতার জন্য যথা উপযুক্ত শিক্ষা ক্ষেত্র প্রস্তুত করার জন্য নিরলস প্রচেষ্টা চালায়। শিক্ষাই জাতির মেরুদণ্ড। একটি জাতির উন্নতি সম্পর্কে জানতে হলে সে জাতির শিক্ষা ব্যবস্থার
দিকে দৃষ্টি দিতে হয়। একথা বলতে পারি যে, সুলতানি আমলে বাংলার বিদ্যা শিক্ষা বা শিক্ষা ব্যবস্থা যথেষ্ট উন্নত ছিল বা সময় উপযোগী ছিল।