উত্তর : ভূমিকা : সুলতানি আমলে বাংলার শাসনব্যবস্থা বিস্তৃত বিবরণ সমসাময়িক গ্রন্থাদিতে পাওয়া না গেলেও দিল্লিতে
রচিত ঐতিহাসিক গ্রন্থাদি, বাংলার সুলতানদের বিভিন্ন শিলালিপি, মুদ্রা, সাহিত্য ও পরবর্তীতে লিখিত ইতিহাস গ্রন্থাদি থেকে বাংলার শাসনব্যবস্থা সম্পর্কে তথ্য পাওয়া যায়। সুলতানি আমলে বাংলার শাসনব্যবস্থা বিচ্ছিন্নভাবে গড়ে ওঠেনি। দিল্লির অনুকরণেই বাংলার শাসনব্যবস্থা গড়ে উঠেছিল, বাংলার মুসলিম শাসনের বিস্তৃতির সাথে সাথে শাসনব্যবস্থা ও নির্দিষ্ট রূপ গ্রহণ করেছিল। সুলতানি আমলে বাংলার প্রাদেশিক ব্যবস্থা সম্পর্কে নিচে সংক্ষেপে আলোচনা করা হলো :
→ সুলতানি আমলে বাংলার প্রাদেশিক শাসনব্যবস্থা : সুলতানি আমলে সমগ্র সমাজ কতকগুলো প্রদেশে বিভক্ত ছিল। প্রত্যেক প্রদেশে একজন ‘ওয়ালী’ বা শাসনকর্তা থাকতেন। প্রাদেশিক শাসনকর্তা সামরিক ও বেসামরিক শাসনের জন্য দায়ী থাকতো। তারা স্থায়ী একটি সামরিক দল রক্ষণাবেক্ষণ করতেন এবং প্রয়োজন অনুসারে সুলতানকে সাহায্য করতেন। তাদের শ্রেণি নিযুক্তি, বদলি ও পদচ্যুতি সুলতানের ইচ্ছার উপর নির্ভর করতো। প্রদেশের রাজস্ব হতে তাদের বেতন দেয়া হতো। অবশ্য প্রাদেশিক শাসনকর্তা ও জমিদারগণ কখনো কখনো ইচ্ছাকৃতভাবে অবহেলা দ্বারা সুলতানকে বিপদে ফেলত।
উপসংহার : সুলতানি শাসনামলে রাজ্যকে সুষ্ঠু ও সুশৃঙ্খলভাবে পরিচালনার জন্য সমগ্র রাজ্য কয়েকটি ভাগে (প্রাদেশিক) বিভক্ত করা হয়। এতে করে সমগ্র সাম্রাজ্যের সুনিয়ন্ত্রিতভাব পরিচালনা করা যায়। জবাবদিহিতার মাধ্যমে সুষ্ঠু বিচারকার্য, অর্থনৈতিক ও সামাজিক কর্মকাণ্ড সম্পাদন করা সম্ভব হয়। যার ফলে প্রজা সাধারণেরও মঙ্গল সাধিত হয়।