উত্তর : ভূমিকা : মধ্যযুগের বাংলার ইতিহাস রচনার উপাদান হিসেবে সমসাময়িক কালে মীর্জা নাথান রচিত ‘বাহারিস্তান-ই-
গায়বী’ ছিল গুরুত্বপূর্ণ একটি গ্রন্থ। মধ্যযুগের ভারতবর্ষের ইতিহাস বিশেষ করে বাংলার সুবেদারদের শাসনব্যবস্থার উপর লিখিত গ্রন্থটি ছিল অন্যতম নির্ভরযোগ্য গ্রন্থ। নিম্নে ‘বাহারিস্তান- ই-গায়বী’ সম্পর্কে আলোকপাত করা হলো :
মধ্যযুগে বাংলার ইতিহাসের উৎস হিসেবে ‘বাহারিস্তান-
ই-গায়বী’ : প্রখ্যাত গ্রন্থ ‘বাহারিস্তান-ই-গায়বী’ এর গ্রন্থাগার বা রচয়িতার নাম আলাউদ্দিন ইস্পাহানি। তার সংক্ষিপ্ত নাম মীর্জা নাথান। ‘তুযুক-ই-জাহাঙ্গীরী’ তে তার সম্পর্কে জানা যায়। তিনি ছিলেন বসবাসকারী এক সম্ভ্রান্ত পারসিক পরিবারের সন্তান। বাহারিস্তান-ই-গায়বী’ র নামকরণ সম্পর্কে বলা হয়ে থাকে যে, গায়বী ছিল মীর্জা নাথানের ছদ্ম নাম। এ ছদ্ম নামানুসারে গ্রন্থের নামকরণ করা হয়। গ্রন্থটির সঠিক রচনাকাল সম্পর্কে জানা যায় না। তবে এটি ১০৫০ হিজরি অর্থাৎ ১৬৪০ খ্রিঃ পূর্বে পুস্তাকাকারে প্রকাশিত হয়েছে। এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই। এর মালিকানা স্বত্ব সর্বপ্রথম হস্তান্তরিত হয় সম্রাট শাহ-জাহানের রাজত্বকালে ১৬৬১ সালে। এ গ্রন্থটি চার খণ্ডে বিভক্ত খণ্ডগুলোর
নাম হলোঃ ১. ইসলামনামা; ২. ইব্রাহিমনামা; ৩. শাহজাহাননামা; ও ৪. ওয়াকিয়াতে জাহান শাহী। মীর্জা নাথান তাঁর বিখ্যাত এই
গ্রন্থে ভারতবর্ষে মুসলিম শাসন এবং বিশেষ করে বাংলার মুসলিম রাজত্বকাল সম্পর্কে বিশেষভাবে আলোচনা করেছেন। এখান
থেকে বহু তথ্য বেরিয়ে আসে, যা ছিল সুলতানি যুগের ইতিহাস রচনার সহায়ক।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, মধ্যযুগের বাংলার ইতিহাস রচনার এক মূল্যবান তথ্যের আকর এই ‘বাহারিস্তান-ই- গায়বী। এখান থেকে যেসব তথ্য পাওয়া যায় তার ঐতিহাসিক মূল্য অনেক বেশি।