সাহায্যার্থীর প্রতি সমাজকর্মীর যে কোনো ৪টি নৈতিক মানদণ্ড লিখ।

অথবা, আমেরিকার জাতীয় সমাজকর্মী সমিতি কর্তৃক প্রণীত সাহায্যার্থীর প্রতি সমাজকর্মীর ৪টি নৈতিক দায়িত্বগুলো উল্লেখ কর।
অথবা, সাহায্যার্থীর প্রতি সমাজকর্মীর যে কোনো ৪টি ধরনের নৈতিক দায়িত্বসমূহ উল্লেখ কর।
অথবা, সাহায্যার্থীর প্রতি সমাজকর্মীর কয়েকটি দায়িত্ব তুলে ধর।
উত্তর।৷ ভূমিকা :
প্রত্যেক পেশারই পেশাদার ব্যক্তিদের আচরণ নিয়ন্ত্রণের জন্য কতকগুলো সুনির্দিষ্ট নৈতিক মানদণ্ড রয়েছে। সমাজকর্মের ক্ষেত্রেও তেমনি কতকগুলো নৈতিক মানদণ্ড রয়েছে। আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত এসব মানদণ্ডগুলো অনুসরণ করেই সমাজকর্মীদেরকে তাদের পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে হয়। National Association Social Worker (NASW) ১৯৯৯ সালে সমাজকর্মের ৬টি নৈতিক মানদণ্ড (Ethical Standards) নির্ধারণ করেছে।এর মধ্যে একটি হলো সাহায্যার্থীর প্রতি সমাজকর্মীর নৈতিক দায়িত্ববোধ ।
সাহায্যার্থীর প্রতি সমাজকর্মীর ৪টি নৈতিক দায়িত্ব
সমাজকর্মীদের বিভিন্ন সাহায্যার্থীর প্রতি বহুমুখী দায়িত্ব পালন করতে হয়। নিম্নে সাহায্যার্থীর প্রতি সমাজকর্মীর ৪টি নৈতিক দায়িত্ব বর্ণনা করা হলো :
১. সাহায্যার্থীর প্রতি প্রতিশ্রুতি (Commitment to Clients) : প্রাথমিক দায়িত্ব হলো সাহায্যার্থীর কল্যাণসাধন করা। সমাজকর্মী সাহায্যার্থীর সব ধরনের কল্যাণসাধনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। সাহায্যার্থী যদি এমন কোনো আচরণ করে যা সমাজের জন্য ক্ষতিকর বা তার নিজের জন্যই ক্ষতিকর সেক্ষেত্রে সমাজকর্মী সাহায্যার্থীকে এমনভাবে সাহায্য করবেন যাতে সে সমস্যা কাটিয়ে উঠতে পারে।
২. আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার ( Self Determination) : সমাজকর্মী সাহায্যার্থীর আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখেন । ক্লায়েন্ট যাতে নিজের কল্যাণের ব্যাপারে ও নিজের সমস্যা সমাধানে নিজেই সিদ্ধান্ত নিতে পারে সমাজকর্মী সাহায্যৰ্থীকে সেভাবেই সাহায্য করেন । এখানে সাহায্যার্থীর অধিকার প্রতিষ্ঠায় সমাজকর্মী কাজ করেন । তবে কোনো কোনো সময় ক্লায়েন্টের স্বার্থেই সাহায্যার্থীর আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার সীমিত করা যায় ।
৩. যৌন নিপীড়ন (Sexual harssment) : সমাজকর্মী তার ক্লায়েন্টকে কোনোভাবেই যৌন নিপীড়ন করতে পারবে না । যৌন কাজের জন্য ইশারায় বুঝানো, সরাসরি প্রস্তাব দেয়া, অনুরোধ করা বা অন্য কোনোভাবে সমাজকর্মী কোনো ক্লায়েন্টকে ব্রিবত করতে পারবে না ।
৪. মর্যাদাহানিকর ভাষা (Derogatory Language) : সমাজকর্মী তার ক্লায়েন্টের সাথে মানহানিকর বা সম্মানে আঘাত লাগে এ ধরনের কোনো ভাষায় কথা বলতে পারবে না । সমাজকর্মীর ভাষা হবে শালীন এবং মুগ্ধকর ।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, সমাজকর্মীদের পেশাগত অনুশীলনের ক্ষেত্রে অবশ্যই উপরিউক্ত নৈতিক মূল্যবোধসহ সকল মূল্যবোধ মেনে চলতে হয়। সমাজকর্মীগণ যদি এসব মূল্যবোধ মেনে চলতে ব্যর্থ হন তাহলে তারা পেশাগত চর্চাও করতে পারেন না। এগুলো মেনে চললে সেবার মান বৃদ্ধি পায় এবং সমাজকর্মী নিরপেক্ষতা বজায় রেখে পেশাগত সেবার কাজ চালিয়ে নিতে পারেন।