অথবা, সাহায্যকারী পদ্ধতিসমূহের সাথে ব্যক্তি সমাজকর্মের উপাদানসমূহের পারস্পরিক সম্পর্ক বিশ্লেষণ কর।
অথবা, সাহায্যকারী পদ্ধতিসমূহের সাথে ব্যক্তি সমাজকর্মের উপাদানসমূহের মানদণ্ড বিশ্লেষণ কর।
উত্তরা৷ ভূমিকা : আধুনিক সমাজকর্ম একটি সাহায্যকারী পেশা। সমাজকর্মের সমস্যা সমাধানের জন্য কতিপয় পদ্ধতির আশ্রয় নেওয়া হয়। এর মধ্যে ব্যক্তি সমাজকর্ম একটি। ব্যক্তি সমাজকর্ম সমস্যাগ্রস্ত ব্যক্তির মনস্তাত্ত্বিক, দিকে হস্তক্ষেপ করে ব্যক্তিকে স্বাবলম্বী করে গড়ে তুলতে চায়। সাধারণভাবে বলতে গেলে কোন ব্যক্তির সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে পেশাদার সমাজকর্মী প্রধানত যে পদ্ধতি অবলম্বন করে থাকেন তাকেই ব্যক্তি সমাজকর্ম পদ্ধতি বলে।
সাহায্যকারী পদ্ধতিসমূহের সাথে ব্যক্তি সমাজকর্মের উপাদানসমূহের পারস্পরিক সম্পর্ক :
১. সামাজিক প্রশাসন ও সামাজিক গবেষণার ক্ষেত্রে : আধুনিক সমাজকল্যাণ সমাজসেবা ও প্রতিষ্ঠানে সুসংগঠিত পদ্ধতি । সাধারণত কোন সংগঠন, প্রতিষ্ঠান বা এজেন্সির মাধ্যমে এসব সেবা প্রদান করা হয়। সুষ্ঠুভাবে সংগঠন বা এজেন্সি পরিচালনা করে উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য অর্জন করার জন্য সামাজিক প্রশাসনের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। অন্যদিকে, এজেন্সির লক্ষ্য নির্ধারণ, পরিকল্পনা ও পদ্ধতির উপর কর্মসূচি প্রণয়ন ও মূল্যায়নের জন্য সামাজিক প্রশাসন ও সামাজিক গবেষণা
অত্যন্ত জরুরি।
২. তথ্যভিত্তিক জ্ঞানের ক্ষেত্রে : ব্যক্তি, দল ও সমষ্টির সমস্যা সমাধানের জন্য তাদের সামর্থ্য, যোগ্যতা, সম্পদ মূল্যবোধ ও দৃষ্টিভঙ্গি অনুভূত চাহিদা প্রভৃতি সম্পর্কে তথ্যভিত্তিক জ্ঞান আবশ্যক। সামাজিক গবেষণার মাধ্যমে
সমাজকর্মীরা এসব প্রয়োজনীয় জ্ঞান আহরণ করে থাকে।
৩. পদ্ধতিসমূহের পরিবর্তন ও গতিশীলতা : পেশা হিসেবে সমাজকর্ম নবীন এবং এর গতিশীলতা এখনও পূর্ণরূপ ধারণ করে নি। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে চাহিদা মোতাবেক সমাজকর্মের পদ্ধতিসমূহের বিশেষ করে মৌলিক পদ্ধতিতে প্রয়োজনীয় পরিবর্তন আনয়ন করা অত্যাবশ্যক। পদ্ধতিসমূহের পরিবর্তন ও কার্যকারিতা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে সামাজিক গবেষণার অবদান সবচেয়ে বেশি।
৪. সমস্যা সমাধান প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রে : সমস্যা সমাধান প্রক্রিয়ার তিনটি ধাপ রয়েছে। যথা :
ক. মনোসামাজিক তথ্য সংগ্রহ, খ. সমস্যা নির্ণয় এবং গ. সমাধান। সমাজকর্মের সব মৌলিক পদ্ধতিতে এ তিনটি ধাপ বিদ্যমান। এ সমাধান প্রক্রিয়ার সফলতা বহুলাংশে নির্ভর করে সাহায্যকারী পদ্ধতি বিশেষ করে সামাজিক গবেষণা এবং সামাজিক প্রশাসনের উপর।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায়, ব্যক্তি সমাজকর্ম একটি মৌলিক পদ্ধতি। একে সমস্যা সমাধানের বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি বলা যায়। ব্যক্তি সমাজকর্ম সমাজকর্মের একটি মৌলিক পদ্ধতি হিসেবে কতিপয় নির্দিষ্ট উপাদানের সমন্বয়ে গঠিত। এ পদ্ধতির উপাদানসমূহ চিহ্নিত করার জন্য এইচ. এইচ. পার্লম্যান তাঁর আলোচ্য সংজ্ঞা প্রদান করেছেন।