উত্তর ঃ ভূমিকা : সামাজিক নীতি একটি দেশের উন্নয়নে ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করে থাকে। সামাজিক নীতির প্রভাব সমূহকে যদি যথার্থভাবে গুরুত্ব দিয়ে নীতি প্রণয়ন করা হয়। তাহলে কর্মসূচি সঠিকভাবে বাস্তবায়িত হয়। সামাজিক নীতি বাস্তবায়নে সমাজকল্যাণ নীতি সহায়তা করে।
→ সামাজিক নীতি বাস্তবায়নে বিবেচ্য বিষয় : সামাজিক নীতি বাস্তবায়নে যে সব বিষয়ে বিবেচ্যপূর্ণ নিম্নে সে সব বিষয় আলোকপাত করা হলো :
১. রাষ্ট্রীয় সংবিধান : সামাজিক নীতি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রীয় সংবিধান গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার হিসেবে কাজ করে। সংবিধানের আলোকে রাষ্ট্র পরিচালিত হয়ে থাকে। রাষ্ট্রের সকল নীতি, পরিকল্পনা, কর্মসূচি সংবিধান অনুযায়ী করা হয়। দেশের সংবিধানের উপর সামাজিক নীতি নির্ভরশীল। সামাজিক নীতি সম্পর্কিত দিক নির্দেশনা দেয়া হয় সংবিধানে।
২. সামাজিক আইন ঃ সামাজিক আইনের দ্বারা নীতি প্রণীত হয়ে থাকে। সামাজিক আইন সামাজিক নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে। সামাজিক নীতি বাস্তবায়নে সামাজিক আইন তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। যেমন নারী উন্নয়নের জন্য নারী নীতি সম্পর্কে জানতে হলে নারী আইনগুলো অধ্যয়ন করতে হবে। গুরুত্বপূর্ণ নারী আইনগুলো হলো ১৯৮০ সালের যৌতুক বিরোধী আইন, ১৯৬১ সালের মুসলিম পারিবারিক আইন ইত্যাদি ।
৩. জাতীয় পরিকল্পনা : জাতীয় পরিকল্পনার আলোকে সামাজিক নীতি প্রণীত হয়ে থাকে। সামাজিক নীতি বাস্ত বায়নের জন্য বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। এ সকল কর্মসূচি জাতীয় পরিল্পনার মাধ্যমে বাস্তবায়িত হয়। সামাজিক নীতি জাতীয় পরিকল্পনার মাধ্যমে বাস্তবায়িত হয়। সামাজিক নীতি সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করতে হলে জাতীয় পরিকল্পনার
বিশ্লেষণ অপরিহার্য । যদি অবাস্তব বিষয় সংযুক্ত হয় তা সফলতা অর্জন করে না এবং এ সম্পর্কে ধারণা অর্জনের ক্ষেত্রে সমস্যা দেখা দেয়।
৪. জটিলতা ঃ সামাজিক নীতি সহজ, স্পষ্ট হওয়া জরুরি। কিন্তু নীতি জটিল প্রকৃতির হয়ে তা সকলের বুঝা কঠিন হয় এবং বাস্তবায়ন করা সহজ হয় না।
৫. ভিনদেশী অনুসরণ ঃ সামাজিক নীতি সমাজের প্রচলিত মূল্যবোধ, আদর্শ, ধ্যান-ধারণা, দৃষ্টিভঙ্গির প্রতি লক্ষ্য রেখে প্রণয়ন করতে হয়। কিন্তু ভিনদেশীদের অনুসরণ করে সামাজিক নীতি প্রণয়ন করা হলে এতে অসামঞ্জস্যতা বিরাজ করে। ফলে সামাজিক নীতি জানার ক্ষেত্রে সমস্যার সৃষ্টি হয়।
৬. বিশেষজ্ঞের অভাব ঃ নীতি প্রণয়নের ক্ষেত্রে দক্ষ বিশেষজ্ঞের সহায়তা জরুরি। দক্ষ বিশেষজ্ঞের সহায়তা ব্যতীত নীতি সাফল্য লাভ করতে পারে না। বিশেষজ্ঞের অভাব নীতি প্রণয়নে সীমাবদ্ধতা লক্ষ্য করা যায়। ফলে এটি অকার্যকরী হয়ে পড়ে।
৭. উৎসগত বহুমুখিতা ঃ সামাজিক নীতি একটি সুনির্দিষ্ট উৎসকে কেন্দ্র করে প্রণয়ন করা হয়ে থাকে। কিন্তু উৎসগত বহুমুখিতার কারণে নীতি তার কার্যকারিতা হারায়। যা নীতিকে পারস্পরিক সম্পর্কহীন করে তোলে।
উপসংহার ৪ পরিশেষে বলা যায় যে, সামাজিক নীতি প্রণয়ন করা হয়। সামাজিক উদ্দেশ্য নির্দিষ্টকরণ এবং সেই।উদ্দেশ্য অর্জনের পর্যাপ্ত সম্পদ সংগ্রহ ও তার বিনিয়োগের প্রকৃতি বা ধরন নির্ধারণের জন্য জনগণের কল্যাণার্থে সরকার কর্তৃক স্বতঃস্ফূর্তভাবে গৃহীত নীতিকে সামাজিক নীতি বলে।