Download Our App

সামাজিক নিরাপত্তা ব্যবস্থার সুবিধা লেখ।

উত্তর. ভূমিকা ঃ মানবকল্যাণের সাথে সংশ্লিষ্ট সর্বজনীন প্রত্যয় হলো সামাজিক নিরাপত্তা। কারণ সামাজিক নিরাপত্তার নিশ্চয়তা ব্যতীত মানুষের কল্যাণ সম্ভব নয়। সমাজের প্রতিটি সদস্যকে কোনো না কোনো সময়ে আকস্মিকভাবে এসব ঝুঁকির সম্মুখীন হতে হয়। যার ফলে প্রতিনিয়ত মানুষ অক্ষম, বিকলাঙ্গ, কর্মহীন ও অকাল মৃত্যুবরণ
করে নিজেকে এবং পরিবারের নির্ভরশীল সদস্যদের আর্থিক নিরাপত্তাহীনতার দিকে ঠেলে দিচ্ছে। তাই নিরাপত্তার জন্য প্রথম তিন ধরনের কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়। সামাজিক বিমা, সাহায্য ও সমাজসেবামূলক কর্মসূচি নেওয়া হয় ।
→ সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির সুবিধা ঃ সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিসমূহের অনেক সুবিধা রয়েছে। নিচে তা বর্ণনা করা হলো :
১. অংশগ্রহণ ঃ সামাজিক নিরাপত্তায় সামাজিক বিমা কর্মসূচির সুবিধাভোগীদের নির্দিষ্টহারে চাঁদা প্রদানের মাধ্যমে অংশগ্রহণ বাধ্যতামূলক। এজন্য এ বিমাকে Contributory Social Security System বা বাধ্যতামূলক চাঁদা প্রদানের মাধ্যমে অংশগ্রহণ বলা হয়। এর মাধ্যমে প্রতিটি সদস্য এ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করতে পারে।
২. অনুমতি চাহিদা ঃ সামাজিক বিমায় সুবিধার আনুমানিক চাহিদা নির্ধারণের ভিত্তিতে আর্থিক সুবিধা প্রদান করা হয় ।
প্রমাণসাপেক্ষে চাহিদার ভিত্তিতে সুবিধা প্রদান করা হয় না।
৩. আইনগত সুবিধা : সামাজিক বিমা বিধিবদ্ধ আইন দ্বারা অনুমোদিত। আইনের আওতায় রাষ্ট্রীয় পরিকল্পনার মাধ্যমে সামাজিক বিমা পরিচালিত ।
৪. ঝুঁকির বিরুদ্ধে নিরাপত্তা : সামাজিক নিরাপত্তা ব্যবস্থার মাধ্যমে দেশের জনগণের সব ধরনের ঝুঁকির বিরুদ্ধে সাহায্য লাভকারীর জন্য আইনগত অধিকার হিসেবে বিবেচিত হয়।
৫. আর্থিক সাহায্য ঃ সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির মাধ্যমে আর্থিক সাহায্য প্রাপ্তির সর্বোচ্চ সীমা নির্ধারিত থাকে। তাই উপকৃত ব্যক্তিবর্গ অলস ও পরনির্ভরশীল হয়ে পড়ে না।
অন্যান্য সুবিধা ঃ সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির অন্যান্য সুবিধার মধ্যে রয়েছে –
১. মানুষের প্রয়োজন ও চাহিদা পূরণের জন্য পর্যাপ্ত সম্পদ পেতে সাহায্য করে।
২. সন্তান ও পোষ্যদের সেবাযত্ন করার ক্ষমতা মূল্যায়ন করে।
৩. সুবিধাভোগী এবং সম্পদের মধ্যে সংযোগ স্থাপন।
৪. স্বাস্থ্যসেবার সুযোগ সুবিধার উন্নতি।
৫. সামাজিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা জীবন বিমা, স্বাস্থ্য বিমা, শস্যবিমা, কল্যাণ তহবিল, বার্ধক্য বিমা, শিল্প দুর্ঘটনা বিমার ব্যবস্থা করে থাকে । সাহায্য লাভের জন্য কোনো রূপ চাঁদা দিতে হয় না।
উপসংহার ঃ পরিশেষে বলা যায় যে, সামাজিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা এমন এক ধরনের কল্যাণমূলক ব্যবস্থা যার মাধ্যমে সমাজের বেকারত্ব, দুর্ঘটনা, অসুস্থতা ইত্যাদি দুঃসময়ে জনগণের আয়ের নিশ্চয়তা দিয়ে বেঁচে থাকার ব্যবস্থা করে। এ ব্যবস্থার মাধ্যমে সমাজে সংগঠিত প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা আকস্মিক সৃষ্ট আর্থিক বিপর্যয়ের প্রাক্কালে সরকারি উদ্যোগে গৃহীত সাহায্যাবলি সামাজিক নিরাপত্তা নামে পরিচিত। তাই সামাজিক নিরাপত্তা হলো জনগণের দুঃসময়ের জন্য গৃহীত এক
ধরনের কল্যাণমূলক ব্যবস্থা।