সামাজিক কার্যক্রমের ৪টি প্রয়োগক্ষেত্রে আলোচনা কর।

অথবা, সামাজিক কার্যক্রমের ৪টি অনুশীল ক্ষেত্র আলোচনা কর।
অথবা, সামাজিক কার্যক্রমের ৪টি পরিসীমা বর্ণনা কর।
অথবা, সামাজিক কার্যক্রমের ৪টি ক্ষেত্রগুলো আলোচনা কর।
উত্তর৷ ভূমিকা : সামাজিক কার্যক্রমের পরিধি ব্যাপক ও বিস্তৃত। এর মাধ্যমে নারীকল্যাণ, শিশুকল্যাণ ও অসহায় মানুষের কল্যাণ সাধনের একটি রূপরেখা প্রণয়ন করা যায়।
সামাজিক কার্যক্রমের ৪টি প্রয়োগক্ষেত্র : নিচে সামাজিক কার্যক্রমের পরিধি বা প্রয়োগক্ষেত্র আলোচনা করা হলো :
১. নারী নির্যাতন : নারী নির্যাতন দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর প্রধান কারণ হচ্ছে নারীদের মর্যাদা, অধিকার প্রভৃতি সম্পর্কে জনগণের মনোভাবের কোন পরিবর্তন হয় নি এবং এ ব্যাপারে তেমন জনমতও গড়ে তোলা হয় নি। কাজেই নারীদের প্রতি মনোভাবের পরিবর্তন এবং প্রয়োজনীয় জনমত গড়ে তুলে নারী নির্যাতন বন্ধ করা সামাজিক কার্যক্রমের
পরিধির অন্তর্ভুক্ত।
২. জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ : জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের জন্য দেশে বর্তমানে একমাত্র পদ্ধতি হচ্ছে জন্মনিয়ন্ত্রণ। কিন্তু রক্ষণশীল সমাজব্যবস্থা এবং মনোভাবের জন্য এক্ষেত্রে জনগণ তেমন এগিয়ে আসছে না। তাই সামাজিক কার্যক্রমের মাধ্যমে তাদের মাঝে গঠনমূলক পরিবর্তন আনয়ন করা অত্যাবশ্যক। তাছাড়া নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রয়োজনীয় আইন প্রণয়ন করা দরকার।
সামাজিক কার্যক্রম আইন প্রণয়নের সুযোগ সৃষ্টি এবং আইন প্রণয়ন উভয় ক্ষেত্রেই সহায়তা করে থাকে।
৩. যৌতুক প্রথা : যৌতুক প্রথা বর্তমানে বাংলাদেশে একটি মারাত্মক সামাজিক ব্যাধি হিসেবে স্বীকৃত। এক্ষেত্রে আইন প্রণয়ন করেও আশানুরূপ যৌতুক দেয়া নেয়া বন্ধ করা যায় নি। এর অন্যতম কারণ জনগণের মূল্যবোধ ও
দৃষ্টিভঙ্গিতে পরিবর্তন সাধন করে যৌতুক প্রথা বন্ধ করার জন্য শক্তিশালী জনমত গড়ে তোলা হয় নি। সামাজিক কার্যক্রমের গণযোগাযোগ ও শিক্ষামূলক কৌশল অবলম্বন করে যৌতুক প্রথা উচ্ছেদের জন্য শক্তিশালী জনমত গড়ে তোলা যেতে পারে। এটি তার পরিধির আওতাভুক্ত!
৪. সামাজিক দুর্নীতি : বাংলাদেশের সমাজব্যবস্থার প্রতিটি রন্ধ্রে রন্ধ্রে বিভিন্ন ধরনের দুর্নীতি প্রবেশ করেছে। এর মূলোৎপাটনের জন্য সামাজিক সচেতনতা সৃষ্টি এবং জনমত গঠনসহ ব্যাপক সামাজিক আন্দোলনের মাধ্যমে শক্তিশালী সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তোলা আবশ্যক। এ ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণের ক্ষেত্রে সামাজিক কার্যক্রম সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনে সক্ষম। ফলে এটিও এর অন্তর্ভুক্ত।
উপসংহার : উপরিউক্ত ক্ষেত্রসমূহ ছাড়াও অন্যান্য ক্ষেত্রে, যেমন- নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠা, গৃহসংস্থান, জনগণকে সচেতন করা, সামাজিক সামঞ্জস্যহীনতা, সামাজিক বিপর্যয় প্রভৃতি ক্ষেত্রে এদেশে সামাজিক কার্যক্রম প্রয়োগ করা যেতে পারে। এসব ক্ষেত্রসমূহে সামাজিক কার্যক্রম প্রয়োগের মাধ্যমে সামাজিক সমস্যার কার্যকর সমাধান করা যেতে পারে। এজন্য ব্যাপক প্রচারণা, সেমিনার, পোস্টার, ফিচার, প্রতিবেদন ইত্যাদির মাধ্যমে অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে