সামাজিক কার্যক্রমের প্রতিবন্ধকতা দূরীকরণের উপায় লিখ।

অথবা, সামাজিক কার্যক্রমের বাধা দূরীকরণের উপায় লিখ।
অথবা, সামাজিক কার্যক্রমের সমস্যাগুলো দূরীকরণের উপায় কী লিখ।
অথবা, সামাজিক কার্যক্রমের সীমাবদ্ধতা দূরীকরণের উপায় কী লিখ।
উত্তর৷ ভূমিকা : সামাজিক কার্যক্রম পরিচালনা ও বাস্তবায়নে প্রতিবন্ধকতা রয়েছে, একথা অস্বীকার করার উপায় নেই। তবে সামাজিক কার্যক্রম বাস্তবায়নে বাস্তবসম্মত ও কার্যক্রম পদক্ষেপ গ্রহণ করলে সহজে এর প্রতিবন্ধকতা বা বাধা দূর করা যায়।
সামাজিক কার্যক্রমের প্রতিবন্ধকতা দূরীকরণের উপায় : নিম্নে সামাজিক কার্যক্রম বাস্তবায়নের পথে প্রতিবন্ধকতা দূরীকরণের উপায় বর্ণনা করা হলো :
১. সহজ-সরল ভাষার ব্যবহার : সামাজিক কার্যক্রমের ভাষা হতে হবে সহজসরল। তাই সামাজিক কার্যক্রমের বাস্তবায়নে এমন ভাষা প্রয়োগ করতে হবে যাতে তা সহজেই বুঝতে সম্মত হয়।
২. স্বার্থগত দ্বন্দ্ব হ্রাস : সামাজিক কার্যক্রমে অংশগ্রহণকারী জনগণ এবং সমাজকর্মীর মধ্যে বিরাজমান স্বার্থগত দ্বন্দ্ব হ্রাস করতে হবে। এর ফলে সামাজিক কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা সহজতর হবে।
৩. গবেষণামূলক কাজ : সামাজিক কার্যক্রমকে সফল করার জন্য গবৈষণামূলক কার্যক্রম বাড়াতে হবে। এজন্য এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় তথ্যসংগ্রহ ও তা বিশ্লেষণ করে প্রতিবন্ধকতা দূর করতে হবে।
৪. জনগণকে সচেতন করা : সামাজিক কার্যক্রম ফলপ্রসূ করার জন্য সংশ্লিষ্ট জনগণকে সচেতন করতে হবে। জনগণকে সচেতন করতে পারলে তারা সামাজিক কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করবে। যা সামাজিক কার্যক্রমকে গতিশীল করবে।
৫. যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন : সামাজিক কার্যক্রম কর্মী এবং এতে অংশগ্রহণকারী জনগণ যথাযথভাবে নিজ নিজ দায়িত্ব-কর্তব্য পালন করলে এর কার্যক্রমকে ত্বরান্বিত করা যাবে।’
৬. গণতন্ত্রের অনুশীলন : সামাজিক কার্যক্রমে অংশগ্রহণকারী সকলের মধ্যে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার চর্চা অব্যাহত রাখতে হবে। এর ফলে সামাজিক কার্যক্রম ফলপ্রসূ হবে।
৭. কমিটি গঠন : সামাজিক কার্যক্রমকে পরিচালনা ও বাস্তবায়নের জন্য কার্যকর কমিটি গঠন করতে হবে। কমিটির তৎপরতা এর প্রতিবন্ধকতা দূরীকরণে অনেকাংশেই সহায়ক হবে।
৮. সমস্যা শনাক্তকরণ : সামাজিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য সুনির্দিষ্ট সমস্যা চিহ্নিত করে তা দূরীকরণের জন্য সামাজিক কার্যক্রমকে বাস্তবায়ন করতে হবে।
৯. লক্ষ্য স্থির করা : সামাজিক কার্যক্রমের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য ঠিক করতে হবে। সাথে সাথে এর কার্যকর সংজ্ঞা ও
ব্যাখ্যা প্রদান করতে হবে। তাহলে সামাজিক কার্যক্রমে কোন সমস্যা দেখা দিবে না।
১০. সুষ্ঠু যোগাযোগ রক্ষা : সামাজিক কার্যক্রমকে কার্যকর ও ফলপ্রসূ করার জন্য এর মধ্যে সুষ্ঠু যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। যোগাযোগ ব্যবস্থা সতেজ থাকলে এর মধ্যে তেমন সমস্যা দেখা দিবে না।
১১. সাংগঠনিক কাঠামো গঠন : সকল সামাজিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য সুষ্ঠু সাংগঠনিক কাঠামো গড়ে তুলতে হবে। এজন্য আইনগত কর্তৃপক্ষের সহায়তা নেয়া যেতে পারে।
১২. বহুমুখী নির্দেশনা প্রদান : বহুমুখী নির্দেশনা ও পদক্ষেপ গ্রহণ করা হলে সামাজিক কার্যক্রমকে সফল করা সহজ
হয়। এজন্য সামাজিক সমস্যা তথা চাহিদার দিকে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে।
১৩. জনমত সৃষ্টি করা : সামাজিক কার্যক্রমকে সফল করার জন্য জনমত একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তাই প্রবল জনমত সৃষ্টি করে সামাজিক কার্যক্রমের গতি ত্বরান্বিত করতে হবে।
১৪. তথ্য সংরক্ষণ : সামাজিক কার্যক্রমে ব্যবহৃত সকল তথ্য সংরক্ষণ করতে হবে। রেকর্ডকৃত এ তথ্যগুলো পরবর্তীতে সামাজিক কার্যক্রম বাস্তবায়নে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।
১৫. জনপ্রতিনিধি নির্ধারণ : উচ্চ পর্যায়ের জনপ্রতিনিধি নির্ধারণ করা সামাজিক কার্যক্রমের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
এ জনপ্রতিনিধি সামাজিক কার্যক্রমকে ফলপ্রসূ করার জন্য সহায়তা করবে।
উপসংহার : সামাজিক কার্যক্রমের সফলতা-ব্যর্থতা মূল্যায়নের ব্যবস্থা থাকতে হবে। ফলে এর দোষত্রুটি চিহ্নিত করে পরবর্তীতে সংশোধনের মাধ্যমে সামাজিক কার্যক্রমকে আরো সফল করা সম্ভব হবে।