অথবা, সাক্ষাৎকার পদ্ধতির কী কী গুণ রয়েছে?উত্তর :
ভূমিকা : সাক্ষাৎকার পদ্ধতি আধুনিক সমাজ মনোবিজ্ঞানীদের কাছে খুবই গ্রহণযোগ্যতা অর্জন করেছে। তাদের নিকট এর গুরুত্ব শুধু একটি পদ্ধতি নয়; বরং এটা একটি সামাজিক প্রক্রিয়া। নানা ক্ষেত্রে এ পদ্ধতিটি ব্যবহৃত হয়। সাক্ষাৎকার গ্রহণকারী সাধারণত জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে সাক্ষাৎকার প্রদানকারীর কাছ থেকে তথ্যসংগ্রহ করে থাকেন। এক্ষেত্রে সাক্ষাৎকার গ্রহণকারীকে বিশেষ প্রশিক্ষণ প্রদানের দরকার হয়। তবে এ পদ্ধতি সবক্ষেত্রে ব্যবহার করা সম্ভব নয়।
সাক্ষাৎকার পদ্ধতির সুবিধা : কর্মচারী নির্বাচনে সাক্ষাৎকার পদ্ধতি খুব আলোচিত একটি পদ্ধতি। এ পদ্ধতির কিছু সুবিধা রয়েছে, যা নিচে আলোচনা করা হলো :
১. অধিকতর নমনীয় : সাক্ষাৎকারে তথ্যসংগ্রহের ক্ষেত্রে নমনীয়তা দেখা যায় । এটি একটি সহজ পদ্ধতি। অর্থাৎ প্রশ্নকর্তা ইচ্ছা করলে বারবার প্রশ্ন করার মাধ্যমে সঠিক উত্তরটি বের করতে পারেন।
২. বাস্তব আচরণের সমন্বয় : এ পদ্ধতিতে সাক্ষাৎকার গ্রহণকারী এবং প্রদানকারীর মধ্যে সরাসরি কথোপকথন হয়। যার কারণে সাক্ষাৎকার গ্রহণকারী আবেদনকারীর দোষগুণ সরাসরি পর্যবেক্ষণ করতে পারেন। অর্থাৎ এখানে দু’জনের মধ্যে আচরণের বাস্তব সমন্বয় ঘটে।
৩. অধিক পরিমাণে উত্তর লাভ : সাক্ষাৎকার পদ্ধতিটি মৌখিক হওয়াতে ভাষার সাহায্যে উত্তরদাতা তুলনামূলকভাবে অধিক পরিমাণে তথ্য সরবরাহ করতে পারেন, যা ডাক বা | অন্যান্য মাধ্যম বা পদ্ধতি দ্বারা সম্ভব নয় ।
৪. সত্যতা যাচাই : সত্যতা যাচাই এ পদ্ধতির একটি অন্যতম সুবিধা। সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে আবেদনপত্র এবং সুপারিশ পত্রের মাধ্যমে বা সাহায্যে প্রাপ্ত তথ্যের সত্যতা যাচাই করা যায়।
৫. প্রশ্নের ধারাবাহিকতা রক্ষা : প্রশ্নের ধারাবাহিকতা রক্ষা করাও এ পদ্ধতির একটি অন্যতম সুবিধা। প্রশ্নপত্রে বিন্যাসকৃত প্রশ্নমালার পর্যায়ক্রমিকতা রক্ষা করা এখানে সফলভাবে সম্ভব ।
৬. সাক্ষাৎদাতা নিজেই উত্তর দিতে পারে : উত্তরদাতার নিকট হতে সরাসরি তথ্য সংগৃহীত হওয়ায় সে অন্য কারো সাহায্যে উত্তর প্রদান করে প্রতারণা করার সুযোগ পায় না।
৭. পরিপূর্ণ সাক্ষাৎ : এ পদ্ধতির একটি সুবিধা হলো পরিপূর্ণ সাক্ষাৎ। সাক্ষাৎকারে ব্যবহৃত প্রশ্নমালা সঠিকভাবে ব্যবহার করার কারণে প্রত্যাশিত সব প্রশ্নের উত্তর লাভ করা যায়।
৮. সময়ানুবর্তিতা : সাক্ষাৎকারের স্থান এবং সময় সঠিকভাবে লিপিবদ্ধ করা যায় বলে সময়ের পার্থক্যের কারণে উত্তরদাতার আচরণগত যেকোনো পরিবর্তন প্রয়োজন হলে তুলে ধরা যায়।
৯. পরিবেশগত নিয়ন্ত্রণ : সাক্ষাৎকারের উপযুক্ত পরিবেশ তৈরিতে সাক্ষাৎকার গ্রহীতার যথেষ্ট ভূমিকা থাকে। ব্যক্তিগত সম্পর্ক স্থান গোলযোগপূর্ণ, স্থান পরিত্যাগ, গোপনীয়তা রক্ষা, নিশ্চয়তা প্রদান এবং কাঠামোবদ্ধ প্রশ্ন ব্যবহারের মাধ্যমে অধিকতর নিয়ন্ত্রিত পরিবেশ তৈরি করার সুযোগ এখানে রয়েছে।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, শিল্প মনোবিজ্ঞানের কার্যকরী পদ্ধতিগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো সাক্ষাৎকার পদ্ধতি। এ পদ্ধতিতে প্রশ্নের জটিলতা দূরীভূত হয় এবং অপ্রাসঙ্গিক উত্তরের ব্যাখ্যা পাওয়া যায়। এ পদ্ধতিতে খুব কম সময়ের মধ্যে প্রার্থী বাছাই করা হয়। এ পদ্ধতিতে তথ্যসংগ্রহের ব্যাপারে ব্যক্তিতে ব্যক্তিতে প্রত্যক্ষ সংযোগ সৃষ্টি হয়। তাই শিল্প মনোবিজ্ঞানে সাক্ষাৎকার পদ্ধতির সুবিধার গুরুত্ব অনস্বীকার্য।