অথবা, সাক্ষাৎকার পদ্ধতির কী কী বৈশিষ্ট্য রয়েছে?উত্তর:
ভূমিকা :শিল্পকারখানায় নিয়োজিত মনোবিজ্ঞানীদের প্রধান কাজ হলো কর্মচারী নির্বাচন। সঠিক কাজের জন্য সঠিক লোক নির্বাচন করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কর্মচারী নির্বাচন প্রক্রিয়ার সাথে সম্পর্কিত বিষয় হচ্ছে ভাবী কর্মচারীর পেশাগত প্রবৃদ্ধি ও বিকাশ এর সুযোগ-সুবিধা। নির্বাচনের সময় স্থির করা দরকার যে, শুধু তাৎক্ষণিক শূন্য পদের জন্য ন্যূনতম যোগ্যতা সম্পন্ন প্রার্থীদের নির্বাচন করা হবে না, বর্তমান দায়িত্ব ছাড়াও ভবিষ্যতে উচ্চতর দায়িত্ব পালন করতে পারবে এরূপ প্রার্থীদের নির্বাচন করা হবে। তাই শিল্প ক্ষেত্রে উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য কর্মচারী নির্বাচন খুবই তাৎপর্যপূর্ণ।
সাক্ষাৎকার পদ্ধতির বৈশিষ্ট্যসমূহ নীচে সাক্ষাৎকার পদ্ধতির বৈশিষ্ট্যসমূহ আলোচনা করা হলো :
১.সাক্ষাৎকার ব্যক্তিদের মধ্যে তথ্য বের করার একটি আন্তঃব্যক্তিক প্রক্রিয়া।
২.এটি প্রকৃতপক্ষে একটি ভাষাগত পদ্ধতি। এটি একটি গতিময় কৌশল।
৩. এ পদ্ধতিতে সরাসরি আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে তথ্যের বিনিময় করা হয়।
৪. এ পদ্ধতিতে তথ্যসপ্তাহের ক্ষেত্রে ব্যক্তিতে ব্যক্তিতে সরাসরি সংযোগ সৃষ্টি হয়।
৫.সাক্ষাৎকার প্রদানকারী কর্তৃক প্রদত্ত তথ্য সাক্ষাৎকার গ্রহণকারী লিপিবদ্ধ করেন।
৬. এ পদ্ধতিতে খুব কম সময়ে প্রার্থী নির্বাচন করা যায়।
৭. এ পদ্ধতিতে ব্যক্তির মনোভাব এবং আচরণকে অনেকটা পর্যবেক্ষণ করা যায়।
সাক্ষাৎকার পদ্ধতির উদ্দেশ্যসমূহ : শিল্পপ্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন উদ্দেশ্যে কর্মচারী নির্বাচনের জন্য সাক্ষাৎকার গ্রহণ করা হয়। নিচে সাক্ষাৎকারের প্রধান উদ্দেশ্যসমূহ উল্লেখ করা হলো :
১. নির্বাচন সংস্থাপন, পদোন্নতি এবং বদলির ক্ষেত্রে সাক্ষাৎকার গ্রহণ করা হয়।
২.চাকরি এবং সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে আবেদনকারীর মনোভাব জানার জন্য সাক্ষাৎকার গ্রহণ করা হয়। এ ধরনের সাক্ষাৎকারকে মনোভাব সাক্ষাৎকার বলা হয়।
৩.কর্মচারীদের ব্যক্তিগত এবং পেশাগত সমস্যা সম্বন্ধে তথ্যসংগ্রহ করার জন্য এবং ঐসব সমস্যাগুলো সমাধান কল্পে পরামর্শদানের উদ্দেশ্যে অনেক সময় সাক্ষাৎকার গ্রহণ করা হয়।
- কোনো বিশেষ কাজে অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের অভিজ্ঞতা সম্পর্কে জানার জন্য সাক্ষাৎকার গ্রহণ করা হয়।
৫.কোনো কঠিন এবং সংকটাপূর্ণ পরিস্থিতি প্রার্থী কীভাবে মোকাবিলা করে তা দেখার জন্য সাক্ষাৎকার গ্রহণ করা হয়।
৬. সংশ্লিষ্ট কাজের জন্য প্রার্থী কতটা উপযুক্ত তা যাচাই করার উদ্দেশ্যে সাক্ষাৎকার গ্রহণ করা হয়।
উপসংহার : উপরিউক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায় যে, কিছু অসুবিধা থাকলেও এ পদ্ধতিটি কর্মী নির্বাচনের ক্ষেত্রে খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। সাক্ষাৎকার গ্রহণকারী যতটা চৌকশ হবে, ততটা যোগ্য কর্মী নির্বাচিত হবে। সাক্ষাৎকার পদ্ধতি পক্ষপাতমুক্ত হলে সেক্ষেত্রে যোগ্য প্রার্থী নির্বাচন করা সহজ হয়। সাক্ষাৎকার গ্রহণকারী যদি অধিক প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত হয় এবং বাইরের কোনো দল যদি সাক্ষাৎকার পদ্ধতিকে প্রভাবিত করতে না পারে, তাহলে সঠিক তথ্য পাওয়া এবং যোগ্য প্রার্থী নির্বাচন করা সম্ভব, তা না হলে সম্ভব নয়।