সাংখ্য দর্শন একটি প্রাচীন ভারতীয় দর্শন, যা মূলত একটি জনসংখ্যার সিদ্ধান্ত ও বিস্তারিত প্রকৃতির ব্যাখ্যা দেয়। এই দর্শনটির মূল সূত্র হলো ইশ্বরকে অজ্ঞেয়, অবিকৃত এবং নির্গুণ ধরে নেয়া, এবং প্রকৃতির বিবেচনা করে সংখ্যা এবং তার ব্যবহারে ভিত্তি রেখেছে।
সাংখ্য দর্শনে প্রকৃতি কেবল একটি সংখ্যামূলক ব্যক্তিত্ব হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। ইতিহাসে, সাংখ্য দর্শনটি বিশেষভাবে মহর্ষি কপিল দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয় এবং মহাভারত যুদ্ধের সময়ে এটি প্রচলিত হয়েছিল। সাংখ্য দর্শনে প্রকৃতির অস্তিত্ব ও প্রকৃতির কারণ সম্পর্কে কয়েকটি মুখ্যমূলক বিষয়বস্তু রয়েছে:
- প্রকৃতির কারণ: সাংখ্য দর্শনে মনে করা হয়েছে যে, প্রকৃতি নিজেই অবিকৃত, নির্গুণ এবং অবিচ্ছেদ্য এক সাংখ্যিক বস্তু, যা সব সৃষ্টির কারণ।
- মহত্ (মহাত্তত্ব): সাংখ্য দর্শনে ধারণা করা হয়েছে যে প্রকৃতি থেকে আসা অসংখ্য তত্ত্বগুলির প্রথম রূপকে মহত্ বলা হয়, যা মনোবুদ্ধি এবং অন্যান্য সমঝে মানববুদ্ধির মূল হিসেবে চিহ্নিত হয়।
- আহঙ্কার (মহত্কারণ): পরবর্তীতে, মহত্তত্ব থেকে প্রকৃতির প্রথম ভাগ আহঙ্কার বা মহত্কারণ উত্পন্ন হয়, যা একটি সংকীর্ণ, বিচ্ছিন্ন, ইচ্ছাশক্তির পূর্বরূপ।
- তন্মাত্রা (মহত্তত্ব গুলির বিভিন্ন রূপ): আহঙ্কার থেকে প্রকৃতির এক অংশ, যা তন্মাত্রা বা সূক্ষ্মভূতের রূপে বিভিন্ন ভৌতিক মাধ্যম গুলির রূপে পরিণত হয়। এগুলি মূলত মহাভূতগুলির সূক্ষ্মরূপ।
- **পঞ্চভূত (পৃথিবী, জল, অগ্নি, বায়ু, আকাশ)**: সাংখ্য দর্শনে প্রকৃতির এই পঞ্চভূত বিভিন্ন ভৌতিক মাধ্যমগুলির উত্পন্ন রূপ। সব সৃষ্টি এই পঞ্চভূতগুলি হতে চলে।
সংখ্যা, তার গুণগণ, সংযোজন, অপক্ষয় ইত্যাদি সাংখ্য দর্শনে প্রকৃতি এবং মানব বিষয়বস্তুগুলির বিভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি বা দষ্টিভঙ্গির মাধ্যমে বিশ্লেষণ করা হয়। সাংখ্য দর্শনে বলা হয়েছে যে, মানব বুদ্ধির মূল নিয়ম এবং সৃষ্টির প্রক্রিয়ায় সংখ্যা এবং সংখ্যাগুলির সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করা সম্ভব।