উৎস : ব্যাখ্যেয় অংশটুকু বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শ্রেষ্ঠ ছোটগল্প ‘একরাত্রি’ থেকে চয়ন করা হয়েছে।
প্রসঙ্গ : রামলোচন রায়ের বাড়িতে সুরবালার উপস্থিতি নায়কের হৃদয়ে যে ঝড় তুলেছিল সে প্রসঙ্গে আলোচ্য উক্তিটির অবতারণা করা হয়েছে।
বিশ্লেষণ : সুরবালা ছিল নায়কের বাল্যসাথী। তারা একসাথে পাঠশালায় যেত এবং বউ বউ খেলতো। জজ আদালতের হেডক্লার্ক হবার বাসনায় নায়ক একদিন গ্রাম ছাড়ল। সে পাড়ি জমালো কলকাতায়। লেখাপড়ার পাশাপাশি সে জড়িয়ে পড়ল দেশের কাজে। ভারতবর্ষ তখন পরাধীন। ইংরেজ শাসনের নাগপাশে দেশ তখন জর্জরিত। দেশের এ করুণ অবস্থা তাকে পীড়িত করলো। সে কলকাতায় রাজনৈতিক নেতাদের বক্তৃতা শুনে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হলো। দেশের জন্য প্রাণবিসর্জন দেওয়া তার কাছে আশুকর্তব্য বলে মনে হলো। দেশের কাজ ফেলে সুরবালাকে বিয়ের প্রস্তাব সে প্রত্যাখ্যান করল। ঘটনাচক্রে নায়ককে একদিন কলকাতা ছেড়ে নোয়াখালীর একটি স্কুলের সেকেন্ড মাস্টারের চাকরি নিতে হলো। সেখানেই সুরবালা থাকে তার স্বামী সংসার নিয়ে। একদিন সুরবালার স্বামী রামলোচনের সাথে তার বাড়িতে গল্প করার সময় সে সুরবালার অস্তিত্ব সম্পর্কে নিশ্চিত হলো। তখনই সুরবালার সাথে তার শৈশব স্মৃতি মানসপটে ভেসে উঠল। সুরবালা এখন পরস্ত্রী। তার উপর তার কোন অধিকার নেই একথা ভাবতেই তার বুকের ভিতরটা টন টন করে উঠল।
মন্তব্য : যাকে একদিন খুব সহজেই পাওয়া যেত তাকেই আজ না পাওয়ার বেদনায় নায়কের হৃদয় হাহাকার করে উঠেছে।