সহযোগিতার শ্রেণিবিভাগ আলোচনা কর।

অথবা, সহযোগিতার প্রকৃতি উল্লেখ কর।
অথবা, সহযোগিতার প্রকারভেদগুলো লিখ।
অথবা, সহযোগিতার ধরনগুলো কী কী?
উত্তর৷ ভূমিকা : সমাজজীবনে বিভিন্নভাবে সহযোগিতার পরিচয় মিলে। অর্থাৎ দলীয় জীবনে সহযোগিতা নানাভাবে প্রকাশিত হয়। সহযোগিতার কতিপয় রূপ রয়েছে।
সহযোগিতার শ্রেণিবিভাগ : নিম্নে সহযোগিতার শ্রেণিবিভাগ বর্ণনা করা হলো :
১. প্রত্যক্ষ সহযোগিতা (Direct co-operation) : মানুষের জীবনে এমন অনেক কাজ রয়েছে যেগুলো মানুষ
পৃথক বা বিচ্ছিন্নভাবে করতে পারে। তবে মানুষ এসব কাজ একসাথে করে থাকে। এক্ষেত্রে এসব কাজের মধ্যে সামান্য পার্থক্য থাকতে পারে। মানুষ কাজকর্ম পৃথকভাবে না করে এক সঙ্গে করার এই প্রবণতাকে বলা হয় প্রত্যক্ষ সহযোগিতা। এ প্রসঙ্গে অধ্যাপক ম্যাকাইভার ও পেজ বলেছেন, “সেসব কাজকর্ম প্রত্যক্ষ সহযোগিতামূলক কাজকর্মের অন্তর্ভুক্ত বলে বিবেচিত হয় যেসব ক্ষেত্রে মানুষ অনুরূপ কাজ একসঙ্গে সম্পাদন করে।
২. পরোক্ষ সহযোগিতা (Indirect co-operation) : পরোক্ষ সহযোগিতার ক্ষেত্রে মানুষ একই উদ্দেশ্যে ভিন্ন ভিন্ন কাজ করে থাকে। বর্তমানে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিদ্যার অগ্রগতির ফলে শ্রমবিভাগের গুরুত্ব বৃদ্ধি পাওয়ায় পরোক্ষ সহযোগিতা অধিক মাত্রায় লক্ষ্য করা যায়। এক্ষেত্রে বৃহদায়তনবিশিষ্ট উৎপাদন প্রতিষ্ঠানের উৎপাদন প্রণালির কথা উল্লেখ করা যায়। উপর্যুক্ত প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সহযোগিতা ছাড়া আরো তিন প্রকার সহযোগিতার কথা উল্লেখ করা যায়। যথা :
৩. প্রাথমিক সহযোগিতা (Primary co-operation) : প্রাথমিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে অভিন্নতা লক্ষ্য করা যায় ব্যক্তিস্বার্থ ও দলীয় স্বার্থ থেকে। প্রাথমিক দলের মধ্যে প্রাথমিক সহযোগিতা পাওয়া যায়। উদাহরণ হিসেবে পরিবার ও পরিবারের সদস্যদের মধ্যে প্রাথমিক সহযোগিতার কথা উল্লেখ করা যায়।
৪. গৌণ সহযোগিতা (Secondary co-operation) : গৌণ সহযোগিতা লক্ষ্য করা যায় গৌণ দলের মধ্যে। এরকম সহযোগিতা লক্ষ্য করা যায়- সরকার, শ্রমিক সংগঠন, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান প্রভৃতি সংস্থা ও সংগঠনের মধ্যে।
৫. তৃতীয় শ্রেণির সহযোগিতা : সাধারণত ক্ষুদ্রাকৃতির ও বৃহদাকৃতির গোষ্ঠীসমূহের মধ্যে বিশেষ কোন পরিস্থিতি মোকাবিলার উদ্দেশ্যে তৃতীয় শ্রেণির সহযোগিতা পরিলক্ষিত হয়। উদাহরণ হিসেবে রাজনৈতিক দলের কথা
উল্লেখ করা যায়।
উপসংহার : সবশেষে অধ্যাপক বিদ্যাভূষণ ও সচদেবের অভিমতটি প্রণিধানযোগ্য। এ প্রসঙ্গে তাঁরা বলেন, “It is often said that the individual of modern industrialised society, increasingly separately from face to face co-operation tends to become highly individualized and even develops neurotic characteristics.”