অথবা, সম্মোহনী নেতৃত্ব সম্পর্কে যা জান লিখ ।
উত্তর৷ ভূমিকা : ‘ক্যারিসমা’ শব্দটি আধুনিক বিশ্বের রাজনীতির ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ আলোচ্যবিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। যখন তখন ক্যারিসমা বা সম্মোহনী শক্তির অধিকারী নেতার আবির্ভাব ঘটে না। দেশের চরম দুর্দিনে জাতি যখন গভীর সংকটের আবর্তে হাবুডুবু খেতে থাকে তখন কোনো কোনো স্থানে জাতির ত্রাণকর্তা হিসেবে ‘ক্যারিসম্যাটিক’ নেতার আবির্ভাব ঘটে। রাজনীতিতে এটি হলো সম্মোহনী শক্তি।
ক্যারিসমা : ক্যারিসমা বা সম্মোহনী শক্তি বলতে দৈবচক্রে প্রাপ্ত ক্ষমতাকে বুঝায়। ক্যারিসমা সুলভ নেতা এ ক্ষমতা বলে দেশবাসীকে একতাবদ্ধ করে দেশকে সংকটমুক্ত করার জন্য তাদেরকে সাথে নিয়ে এগিয়ে চলেন। জনগণের পূর্ণ সমর্থন ও সহযোগিতায় তিনি সফলকাম হয়ে বিশ্বে স্মরণীয় ও বরণীয় হয়ে থাকেন।
প্রামাণ্য সংজ্ঞা : বিভিন্ন লেখক ও মনীষী বিভিন্নভাবে ক্যারিসমা সম্পর্কে বিভিন্ন সংজ্ঞা দিয়েছেন। নিচে তাঁদের কয়েকটি সংজ্ঞা দেওয়া হলো :
ম্যাক্স ওয়েবার বলেছেন, “ক্যারিসমা হচ্ছে কোনো ব্যক্তির নেতৃত্বের প্রতি চরম ব্যক্তিগত ভক্তি বা আসক্তি এবং তাঁর অন্যান্য গুণাবলির প্রতি ব্যক্তিগত আসক্তি।”
লেভার আইরোম্যান এর মতে, “ক্যারিসমা হচ্ছে নেতা ও তাঁর অনুসৃত গুণের মধ্যে একটি আবেগময় বন্ধন।” ডেভিড এর ভাষায়, “যখন ঐতিহ্য অথবা যুক্তি এ দুটি শক্তিই ক্রমবর্ধমান রাজনৈতিক সংকট মোকাবিলায় যথেষ্ট বলে বিবেচিত হয় না তখনই ক্যারিসমা সৃষ্টি হবার সম্ভাবনা দেখা দেয়।”
ক্যারিসমার দৃষ্টান্ত : কোনো সমাজে বা দেশে যখন নানাবিধ কারণে আর্থসামাজিক ও রাজনৈতিক জীবনে গভীর সংকট দেখা দেয় তখন সেখানে ক্যারিসমা সুলভ নেতৃত্বের আবির্ভাবের পরিবেশ সৃষ্টি হয়। যেমন- ভারতের মহাত্মা গান্ধী, আফ্রিকার নেলসন ম্যান্ডেলা ও বাংলাদেশের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রমুখ। tastar
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, জাতীয় জীবনে দুর্যোগকালীন সময়ে দেশ, সমাজ তথা জাতিকে মুক্ত করতে সম্মোহনী নেতৃত্বের আবির্ভাব ঘটে। দেশ ও জাতির কল্যাণসাধনই ক্যারিসম্যাটিক নেতৃত্বের লক্ষ্য হয়। যার জন্য তিনি স্মরণীয় হয়ে থাকেন।