অথবা, সমাজবিজ্ঞান ও সমাজকল্যাণের মধ্যে কী কী পার্থক্য থাকতে পারে বলে তুমি মনে কর?
অথবা, সমাজবিজ্ঞান ও সমাজকল্যাণের মধ্যে কী কী পার্থক্য আলোচনা কর।
অথবা, সমাজবিজ্ঞান ও সমাজকল্যাণের মধ্যে কী কোন পার্থক্য আছে? থাকলে আলোচনা
উত্তর৷ ভূমিকা : সমাজবিজ্ঞান ও সমাজকল্যাণ উভয়ই সামাজিক বিজ্ঞানের দুটি গুরুত্বপূর্ণ শাখা। সমাজকল্যাণ মানবসমাজের একটি বিশেষ দিক নিয়ে আলোচনা করে। কিন্তু সমাজবিজ্ঞান সকল সামাজিক বিজ্ঞানকে নিয়ে আলোচনা করে থাকে।
সমাজবিজ্ঞান ও সমাজকল্যাণের পার্থক্য : দু’য়ের মাঝে সম্পর্ক থাকা সত্ত্বেও বেশকিছু পার্থক্য আছে। পার্থক্যগুলো নিম্নরূপ :
পরিধিগত ভিন্নতা : সমাজকল্যাণের পরিধি অপেক্ষা সমাজবিজ্ঞানের পরিধি ব্যাপক। কেননা সমাজ শুধু সমাজস্থ মানুষের কল্যাণ নিয়ে ব্যস্ত থাকে আর সমাজবিজ্ঞান মানুষের সমগ্র বিষয় নিয়ে আলোচনা করে।
লক্ষ্যগত ভিন্নতা : সমাজবিজ্ঞানের তাত্ত্বিক জ্ঞানের উপর ভিত্তি করেই সমাজকল্যাণ কাজ করে। সমাজবিজ্ঞানী স্যামুয়েল কোনিগ এর মতে, “সমস্যার সমাধান করা সমাজবিজ্ঞানের প্রধান লক্ষ্য নয়, বরং এসবের কারণ নির্ধারণ এবং সমস্যা সমাধানের সাহায্য করাই সমাজবিজ্ঞানের চরম লক্ষ্য।”
আলোচনার ভিন্নতা : সমাজবিজ্ঞান সমাজের সামগ্রিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করে। যেমন মানুষের জীবনযাপন প্রণালী, নানাবিধ সামাজিক, সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান ও সংগঠন ইত্যাদি। পক্ষান্তরে, সমাজকল্যাণ স্বীকৃত সামাজিক সমস্যাবলির সমাধান, ব্যক্তি, গোষ্ঠী বা দলের উন্নতি নিয়েই ব্যস্ত থাকে।
কার্যকারিতার পার্থক্য : সমাজবিজ্ঞান একটি তাত্ত্বিক বিষয়, কিন্তু সমাজকল্যাণ একটি প্রায়োগিক বিষয়। সমাজবিজ্ঞান সামাজিক সমস্যার তথ্য ও কারণ উদ্ঘাটন করে কিন্তু সমাজকল্যাণ সামাজিক সমস্যার সমাধানের চেষ্টা করে।
উপসংহার : উপর্যুক্ত আলোচনার শেষে বলা যায় যে, সমাজবিজ্ঞান একদিকে যেমন সমাজের সমস্যা খুঁজে বের করে তার উপর তত্ত্ব নির্মাণ করে, সমাজকল্যাণও তত্ত্ব নির্মাণ করে ও সমস্যা সমাধানের পথ বা দিকনির্দেশনা প্রদান করে। সুতরাং উভয়ের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বিদ্যমান।