সমাজবিজ্ঞান ও অর্থনীতির মধ্যে পার্থক্য আলোচনা কর।

অথবা, সমাজবিজ্ঞান ও অর্থনীতির মধ্যে কী কী পার্থক্য থাকতে পারে বলে তুমি মনে কর?
অথবা, সমাজবিজ্ঞান ও অর্থনীতির মধ্যে বিদ্যমান পার্থক্যগুলো আলোচনা কর।
উত্তর৷ ভূমিকা :
সমাজবিজ্ঞান সমাজ ও তার মানুষ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করে। আর অর্থনীতি মানুষের জীবনের অর্থ সম্পর্কিত সবদিক আলোচনা করে। সমাজে অর্থনৈতিক কার্যক্রম যত জোরদার হয় ততই তা সমাজজীবনকে প্রভাবিত করে। বিপরীতভাবে সমাজজীবন দ্বারাও অর্থনৈতিক প্রক্রিয়া প্রভাবিত। এ দু’য়ের মাঝে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকা সত্ত্বেও কিছু পার্থক্য রয়েছে। নিম্নে সেগুলো আলোচনা করা হলো :
পরিসরগত ভিন্নতা : অর্থনীতির চেয়ে সমাজবিজ্ঞানের পরিধি ব্যাপক। অর্থনীতি সমাজবদ্ধ মানুষের একটি দিক নিয়ে ব্যাপৃত। কিন্তু সমাজবিজ্ঞান মানুষের জীবনের সামগ্রিক দিক নিয়ে ব্যাপৃত।
বিষয়বস্তুগত ভিন্নতা : সমাজবিজ্ঞান ও অর্থনীতির বিষয়বস্তু ভিন্ন। অর্থনীতির বিষয়বস্তু হচ্ছে— উৎপাদন, বণ্টন, ভোগ, যোগান, চাহিদা প্রভৃতি। অন্যদিকে, সমাজবিজ্ঞানের বিষয়বস্তু হচ্ছে সমাজ এবং সমাজস্থ মানুষ।
আলোচনার ভিন্নতা : সমাজবিজ্ঞান মানুষ, সমাজের উৎপত্তি, প্রকৃতি, ক্রমবিকাশ প্রভৃতি নিয়ে আলোচনা করে। কিন্তু অর্থনীতি শুধু মানুষের অর্থ সম্পর্কিত দিক নিয়ে আলোচনা করে।
পদ্ধতি অনুসরণ : সমাজবিজ্ঞানে নির্দিষ্ট গবেষণা পদ্ধতি অনুসরণ করা হলেও অর্থনীতির ক্ষেত্রে তার তেমন প্রয়োজন পড়ে না ।
পরিধির ব্যাপকতা : অর্থনীতির পরিধির চেয়ে সমাজবিজ্ঞানের পরিধি ব্যাপক। তাই অনেকেই অর্থনীতিকে সমাজবিজ্ঞানের একটি শাখা হিসেবে উলেখ করেছেন।
আলোচনা ক্ষেত্রগত : সমাজবিজ্ঞান যেখানে সমাজের সামগ্রিক দিক নিয়ে আলোচনা করে, অর্থনীতি সেখানে শুধু মানুষের অর্থনৈতিক দিক নিয়ে আলোচনা করে।
সমস্যা সৃষ্টিতে : আমাদের সমাজজীবনে দেখা যায়, অনেক অর্থনৈতিক সমস্যা সামাজিক সমস্যার সৃষ্টি করে। তেমনি অনেক সামাজিক সমস্যা অর্থনৈতিক সমস্যার সৃষ্টি করে।
উপসংহার : দু’য়ের মাঝে যেমন পার্থক্য আছে, তেমনি আছে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক। মূল পার্থক্য যেটা সেটা হলো এদের একটি হলো বৃহত্তর অংশের নাম আর অন্যটি একটি শাখার মতোই।