অথবা, কমাজকর্ম পদ্ধতির মূলনীতি আলোচনা কর।
অথবা, সমাজকর্ম পদ্ধতির কি কি মূলনীতি রয়েছে।
উত্তর৷ ভূমিকা : ব্যক্তি, দল ও সমষ্টির সমস্যা সমাধান বা নিয়ন্ত্রণের উদ্দেশ্যে পেশাদার সমাজকর্মীগণকে যেসব সুশৃঙ্খল পদ্ধতি, কৌশল, পন্থা বা উপায় অবলম্বন করতে হয় তাকে সমাজকর্ম পদ্ধতি বলে। অন্যভাবে বলা যায়, সমাজকর্ম পদ্ধতিগুলো প্রয়োগের ক্ষেত্রে যেসব নীতিমালা অনুসরণ করতে হয় সেগুলোই সমাজকর্ম পদ্ধতির সাধারণ নীতিমালা।
সমাজকর্ম পদ্ধতিগুলোর সাধারণ নীতিমালা : নিম্নে সমাজকর্ম পদ্ধতির সাধারণ নীতিমালা আলোচনা করা হলো :
১. আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার : আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার প্রদান সমাজকর্মের একটি সাধারণ নীতি। এ নীতিতে বিশ্বাস করা হয় মানুষ নিজেই তার নিজের ভাগ্য নির্মাতা।
২. সকলের সমান সুযোগ : সমাজের সকল মানুষকে সমান সুযোগ ও সমান অধিকার প্রদান করতে হবে। এটা সমাজকর্মের একটা অন্যতম নীতি ও মূল্যবোধ।
৩. স্বনির্ভরতা অর্জন : সমাজকর্মের একটি অন্যতম নীতি হলো স্বনির্ভরতা বা আত্মনির্ভরতা অর্জন। স্বনির্ভরতা অর্জন
মানে নিজের উপর নির্ভর করে চলার ক্ষমতা অর্জন।
৪. গণতান্ত্রিক অধিকার : সমাজকর্মের পদ্ধতিগুলোর অপর একটি সাধারণ নীতিমালা হলো গণতান্ত্রিক অধিকার। এটি এমন এক নীতি যে নীতিতে বিশ্বাস করা হয় মানুষ স্বাধীনভাবে মতামত প্রকাশ করবে, সমান অধিকার ভোগ করবে, ন্যায়বিচার পাবে এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করতে পারবে।
৫. শ্রমের মর্যাদা : সকল ধরনের বৃত্তি ও পেশার প্রতি শ্রদ্ধা পোষণের নাম হলো শ্রমের মর্যাদা। সমাজকর্ম পদ্ধতিগুলোর সাধারণ নীতিগুলোর অপর একটি হচ্ছে শ্রমের মর্যাদা প্রদান।
৬. সম্পদের সদ্ব্যবহার : সমাজকর্ম ব্যক্তিগত, দলীয় ও সমষ্টির উন্নয়নের জন্য সম্পদের সদ্ব্যবহার নীতিতে বিশ্বাস করে। সম্পদ ব্যক্তিগত, দলীয় কিংবা সমষ্টিগত হতে পারে, কিংবা রাষ্ট্রীয়, ব্যক্তিগত, জাতীয় হতে পারে। এসব সম্পদ যথাযথভাবে আহরণ করতে হবে ও তা কাজে লাগাতে হবে।
৭. পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ ও সহনশীলতা : মানুষের সামাজিক ভূমিকা পালন ও পদমর্যাদা অনুযায়ী সম্মান প্রদর্শনই হলো শ্রদ্ধাবোধ । সামাজিক বন্ধনকে সুদৃঢ় করার জন্য পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ ও সহনশীলতার প্রয়োজন।
৮. সামাজিক দায়িত্ব : সমাজের এক মানুষের প্রতি মানুষ হিসেবে অন্য মানুষের যে দায়িত্ব রয়েছে তাকে সামাজিক দায়িত্ব বলে। এটা পালন করা সমাজকর্ম পদ্ধতিগুলোর একটি সাধারণ নীতি।
উপসংহার : সমাজকর্মের উপর্যুক্ত নীতিগুলো মেনে চলার মাধ্যমে সমাজকর্মীরা সমাজকর্মের অনুশীলন করেন। উপর্যুক্ত নীতিগুলো অনুসরণ করলে সমাজের সকল মানুষের সার্বিক কল্যাণ নিশ্চিত করা সম্ভব হয়। এ নীতিগুলো সমাজকর্মীদের জন্য দিকনির্দেশনা হিসেবে কাজ করে।