সমাজকর্মে সমাজসংস্কারের ৪টি গুরুত্ব আলোচনা কর।

অথবা, সমাজকর্মে সমাজসংস্কারের ৪টি তাৎপর্য আলোচনা কর।
অথবা, সমাজকর্মে সমাজসংস্কারের ৪টি প্রভাব বর্ণনা কর।
অথবা, সমাজকর্মে সমাজসংস্কারের ৪টি প্রয়োজনীয়তা আলোচনা কর।
উত্তর৷ ভূমিকা : সমাজকর্মের অন্যতম লক্ষ্য হচ্ছে সমাজ থেকে কুসংস্কার দূর করা। সমাজসংস্কারকগণ যুগে যুগে আন্দোলনের মাধ্যমে সমাজকর্ম অনুশীলনের উপযোগী পরিবেশ তৈরি করেছে। সমাজকর্মে সমাজসংস্কারের গুরুত্ব অত্যধিক। এ প্রসঙ্গে M.S Gore বলেছেন, “সামাজিক, অর্থনৈতিক বা কল্যাণমূলক কার্যাবলির ক্ষেত্রে সকল ব্যবস্থাই সমাজসংস্কারকদের দ্বারা প্রভাবিত ও অনুপ্রাণিত।”
সমাজকর্মে সমাজসংস্কারের ৪টি গুরত্ব : নিম্নে সমাজকর্মে সমাজসংস্কারের ৪টি গুরুত্ব বা অবদান আলোচনা করা হলো :
১. বাঞ্ছিত সামাজিক পরিবর্তন আনয়ন : সমাজসংস্কারের মাধ্যমে সমাজের কাঙ্ক্ষিত পরিবর্তন আনয়ন করা সম্ভব। এমনকি এর মাধ্যমে সমাজের ক্ষতিকর প্রথা বা দোষ-ত্রুটির সংশোধন এমনকি প্রয়োজনে সম্পূর্ণ পরিবর্তন করা যায়।
ফলে সুস্থ সমাজ কায়েম করা যায় সহজেই।
২. অধিকারবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর স্বার্থ সংরক্ষণ : অধিকারবঞ্চিত জনগণের স্বার্থ সংরক্ষণে সমাজসংস্কারের ভূমিকা অপরিসীম। বিশেষ করে নারী ও শিশুদের মানবিক অধিকার প্রদান এবং তাদের আর্থ-সামাজিক বৈষম্য দূরীকরণে সমাজসংস্কার আন্দোলন তাৎপর্যপূর্ণ অবদান রাখতে সক্ষম। সমাজসংস্কার আন্দোলন অধিকারহারাদের পাশে থেকে কাজ করে থাকে।
৩. সমস্যা সমাধানে জনমত তৈরি : সমাজের ক্ষতিকর প্রথা দূরীকরণে প্রথমেই দরকার হয় জনমত তৈরি। সমাজসংস্কার আন্দোলন জনমত তৈরিতে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করে। তাই সমাজের অনাকাঙ্ক্ষিত রীতি-নীতি ও
মূল্যবোধসমূহ দূরীকরণে সমাজ সংস্কারের পক্ষে জনমত তৈরি করে সামাজিক সমস্যা সমাধানে এগিয়ে আসে।
৪. জনগণকে সচেতন করা : সমাজসংস্কার আন্দোলনের ফলে জনগণ সচেতন হয়ে উঠে। ফলে সমাজের কুসংস্কার ও ধর্মীয় গোঁড়ামী হ্রাস পায়। সমাজসংস্কার আন্দোলনে জনগণের অংশগ্রহণের ফলে নতুন করে অবাঞ্ছিতকর অবস্থা সহজেই সৃষ্টি হতে পারে না।
উপসংহার : সমাজসংস্কারের গুরুত্ব দিন দিন বেড়েই চলেছে। অসহায়, নির্যাতিত নারী ও শিশুদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় সমাজসংস্কার আন্দোলন পূর্বে ছিল বর্তমানেও রয়েছে। সমাজকর্মের পূর্ণতা আনয়নে একে অস্বীকার করার উপায় নেই ।