অথবা, সমাজকর্মের মৌলিক পদ্ধতিগুলোর সংক্ষিপ্ত ধারণা দাও।
অথবা, সমাজকর্মের তিনটি মূল পদ্ধতি বর্ণনা কর।
উত্তর৷ ভূমিকা : পেশাগত অনুশীলনের ক্ষেত্রে সমাজকর্মীগণ যেসব পদ্ধতি সরাসরি প্রয়োগ করে থাকেন তাকে, মৌলিক পদ্ধতি বলা হয়। মৌলিক পদ্ধতিকে প্রত্যক্ষ পদ্ধতি বলেও অভিহিত করা হয়।
সমাজকর্মের মৌলিক পদ্ধতি : সমাজকর্মের মৌলিক পদ্ধতি তিনটি। যথা :
১. ব্যক্তি সমাজকর্ম,
২. দল সমাজকর্ম ও
৩. সমষ্টি সমাজকর্ম।
নিম্নে এসব মৌলিক পদ্ধতি সম্পর্কে ধারণা দেয়া হলো :
১. ব্যক্তি সমাজকর্ম : সমস্যাগ্রস্ত ব্যক্তির সমস্যা সমাধানের জন্য পেশাদার সমাজকর্মীগণ যে পদ্ধতির আশ্রয় গ্রহণ
করেন তাকে ব্যক্তি সমাজকর্ম পদ্ধতি বলা হয়। এইচ. এইচ. পার্লম্যান এর মতে, “সাহায্যার্থী যাতে সামাজিক ভূমিকা পালনের মাধ্যমে অধিকতর কার্যকরভাবে সামাজিক সমস্যার সমাধান করতে পারে সেজন্য মানবকল্যাণধর্মী এজেন্সি কর্তৃক প্রদত্ত সহায়তামূলক ব্যবস্থাই ব্যক্তি সমাজকর্ম।”
২. দল সমাজকর্ম : দলীয় অভিজ্ঞতা প্রয়োগের মাধ্যমে দলের সমস্যা মোকাবিলা করার জন্য সমাজকর্মীগণ যে পদ্ধতির আশ্রয় নেন তাই হলো দল সমাজকর্ম পদ্ধতি।
৩. সমষ্টি সমাজকর্ম : পেশাদার সমাজকর্মী কর্তৃক একটি সমষ্টির বস্তুগত ও অবস্তুগত সম্পদের সদ্ব্যবহারের মাধ্যমে তাদের অবস্থার উন্নয়নের লক্ষ্যে গৃহীত কৌশল বা উপায় হচ্ছে সমষ্টি সমাজকর্ম। সমষ্টি সমাজকর্মকে আবার দু’ভাগে ভাগ করা যায়। যথা :
ক. সমষ্টি সংগঠন : সমাজকর্মের যে প্রক্রিয়া বা কৌশল প্রয়োগ করে সমাজকর্মীগণ সমষ্টির চাহিদা নিরূপণ করে এবং সমষ্টির প্রতিনিধিদের সহায়তায় তাদের বস্তুগত ও অবস্তুগত সম্পদের সদ্ব্যবহারের প্রচেষ্টা চালান তাকে সমষ্টি সংগঠন বলে।
খ. সমষ্টি উন্নয়ন : সমষ্টি উন্নয়ন এমন একটি প্রক্রিয়া যে প্রক্রিয়ার সাহায্যে সমষ্টির চাহিদা ও প্রয়োজন অনুযায়ী তাদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের লক্ষ্যে সরকার ও জনগণ যৌথভাবে বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করে।
উপসংহার : সবশেষে আমরা বলতে পারি, ব্যক্তি, দল ও সমষ্টির সমস্যা মোকাবিলার ক্ষেত্রে সমাজকর্ম পদ্ধতিগুলোর যথেষ্ট গুরুত্ব রয়েছে। বাঞ্ছিত উপায়ে সমাজের পরিবর্তন সাধন ও বিভিন্ন সমস্যাকে গভীরভাবে বিশ্লেষণ করে তার কার্যকারণ সম্পর্ক নির্ণয়ের ক্ষেত্রে সমাজকর্ম পদ্ধতিগুলো ব্যাপক ভূমিকা রাখে।