অথবা, অন্তর্বর্তীকালীন ব্যবস্থা কী? অন্তর্বর্তীকালীন ব্যবস্থা হিসেবে কোন বিষয়গুলোর প্রতি অধিক দৃষ্টি রাখতে হয় ?
অথবা, সমস্যা সমাধানে অন্তর্বর্তীকালীন ব্যবস্থা কাকে বলে? এ ব্যবস্থায় কোন বিষয়গুলোর প্রতি অধিকগুরুত্ব দিতে হয়?
অথবা, অন্তর্বর্তীকালীন ব্যবস্থার সংজ্ঞা দাও। অন্তর্বর্তী ব্যবস্থায় অধিক দৃষ্টিপূর্ণ বিষয়গুলো কী কী? আলোচনা কর।
উত্তর৷ ভূমিকা : সমাজকর্মীরা সমস্যা সমাধানের ক্ষেত্রে প্রাথমিকভাবে কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করে থকেন। এই প্রাথমিক পদক্ষেপই অন্তর্বর্তীকালীন ব্যবস্থা হিসেবে বিবেচিত।
সমস্যা সমাধানে অন্তর্বর্তীকালীন ব্যবস্থা : ব্যক্তি সমাজকর্মের সমস্যা নিরূপণ প্রক্রিয়ার প্রাথমিক পর্যায়কে সমস্যা সমাধান কার্যক্রমে অন্তর্বর্তীকালীন ব্যবস্থা বলা হয়। অর্থাৎ সমস্যা সমাধান প্রক্রিয়ার প্রাথমিক পর্যায়ে সমস্যার তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া (যেমন- উদ্বিগ্নতা, অস্থিরতা, উত্তেজনা, চাপ অনুভব ইত্যাদি) থেকে সাহায্যার্থীকে সাময়িকভাবে মুক্ত করার লক্ষ্যে যেসব ব্যবস্থা গৃহীত হয় সেগুলোকে Prognosis বা অন্তর্বর্তীকালীন ব্যবস্থা বলে।সমস্যা সমাধানের সার্বিক কার্যক্রম প্রক্রিয়ায় কোন স্থিতাবস্থা বিরাজ না করার কারণে সকল পর্যায় বা পদক্ষেপকে সূক্ষ্মভাবে ভাষার আঙ্গিকে আনা কঠিন। তবে এ পর্যায়টি সমস্যার গতি নির্ধারণে সহায়ক ভূমিকা পালন করে থাকে। সমস্যা যাই হোক এবং যে কারণেই সৃষ্ট হোক না কেন, প্রাথমিক পর্যায়ে ব্যক্তির উপর সমস্যার তাৎক্ষণিক প্রভাব বিশেষভাবে লক্ষ্য করা যায়।সাধারণত সমস্যাগ্রস্ত কোন ব্যক্তি যখন এজেন্সির সাহায্যের জন্য আগমন করে তখন তার মধ্যে এক ধরনের চাপমূলক অবস্থা ও অস্বস্তি বিরাজ করে। এ অবস্থায় তার নিকট থেকে পর্যাপ্ত তথ্যসংগ্রহ অসম্ভব হয়ে পড়ে এবং সমস্যা নির্ণয় ও সমাধান পরিকল্পনা তৈরিতেও প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। এক্ষেত্রে অন্তর্বর্তীকালীন কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হলে সাহায্যার্থীর মধ্যে সাময়িক স্বস্তির ভাব ফিরে আসে। তাই ব্যক্তিকে অপেক্ষাকৃত সহজে বুঝার জন্য এ সাময়িক উপশমকারী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হয়।এতে তার সমস্যাসংকুল অবস্থার গতিপ্রকৃতি বুঝার উপায় বা পথ উন্মুক্ত হয়।তবে সকল।সাহায্যার্থীর ক্ষেত্রে এ ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ প্রয়োজন রয়েছে বলে নিশ্চিত করে কিছু বলা যায় না। তাছাড়া এ অবস্থা ব্যক্তি সমাজকর্মের সমস্যা সমাধান প্রক্রিয়াতে গতিশীলতা আনয়নে সহায়তা করে।
অন্তর্বর্তীকালীন ব্যবস্থা হিসেবে যে বিষয়গুলোর প্রতি অধিক দৃষ্টি রাখতে হয় : অন্তর্বর্তীকালীন ব্যবস্থা হিসেবে নিম্নোক্ত বিষয়গুলোর প্রতি অধিক দৃষ্টি রাখতে হয়।
১. সমস্যাগ্রস্ত ব্যক্তির প্রাথমিক অবস্থা;
২.সমস্যাগ্রস্ত ব্যক্তির তাৎক্ষণিক প্রয়োজন:
৩. তার উদ্বিগ্নতা, অস্থিরতা, উত্তেজনা, চাপ অনুভব ইত্যাদি পরিমাপ করা;
৪. সমস্যাগ্রস্ত ব্যক্তির অবস্থা বিবেচনা করে তাৎক্ষণিক প্রয়োজন মিটানো;
৫. সমস্যাগ্রস্ত ব্যক্তির পরিচয় গ্রহণ;
৬. তার জন্য সাময়িক সর্বোত্তম ব্যবস্থা গ্রহণ;
৭. আগে সেবা পরে চুক্তি করা;
৮. পরিস্থিতি বুঝে ব্যবস্থা গ্রহণ;
৯. সাহায্যার্থীর মধ্যে সাময়িক স্বস্তি ফিরিয়ে আনা।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে,সমস্যা সমাধানের ক্ষেত্রে অন্তর্বর্তীকালীন ব্যবস্থা সাময়িকভাবে কাজে লাগে।তবে এটা সমস্যা সমাধানের কোন স্থায়ী ব্যবস্থা নয়।