উৎস : ব্যাখ্যেয় অংশটুকু প্রকৃতির কবি জীবনানন্দ দাশ বিরচিত ‘বনলতা সেন’ শীর্ষক কবিতা থেকে চয়ন করা হয়েছে।
প্রসঙ্গ : দিন শেষের ঘনায়মান আবছা অন্ধকারের মধ্যে কাঙ্ক্ষিত নারীসত্তার মুখোমুখি হয়ে কবি মনে যে অনুভূতির সৃষ্টি হয়েছে সে প্রসঙ্গে কবি একথা বলেছেন।
বিশ্লেষণ : হাজার বছর ধরে পৃথিবীর পথে হাঁটতে হাঁটতে কবি সন্ধান পেয়েছেন তাঁর কাঙ্ক্ষিত নারীসত্তার। তিনি ঘুরে বেড়িয়েছেন বিম্বিসার ও অশোকের কাল অতিক্রম করে বিদর্ভ নগরে এসেও তিনি সন্ধান পাননি তার। অবশেষে জীবন যখন ক্লান্ত- শ্রান্ত হয়ে ঝিমিয়ে পড়তে বসেছে তখন তিনি উত্তরবঙ্গের নাটোর শহরে এসে তাঁর প্রিয়তমাকে খুঁজে পেয়েছেন। মুখে তার শ্রাবস্তীর কারুকার্য আর চুলে দেখেছেন বিদিশার অন্ধকার। সমুদ্র বক্ষের হালভাঙা নাবিক যেমন দারুচিনি দ্বীপ দেখে আহ্লাদিত হয় কবিও তেমনি বনলতা সেনকে দেখে আনন্দিত হয়েছেন। দীর্ঘদিনের প্রত্যাশিত প্রেমিকার সান্নিধ্য তাঁর দেহ ও মনের ক্লান্তি দূর করে দিয়েছে। সব পাখি যখন ঘরে ফিরে, সব নদী যখন বয়ে চলেছে, জীবনের সব লেনদেন যখন ফুরিয়ে আসে তখন পুরুষের জীবনে নেমে আসে সন্ধ্যার অন্ধকার। সে সময় কেউ তার পাশে থাকে না, একমাত্র তার প্রেয়সী ছাড়া।
মন্তব্য : জীবনের সবকিছু শেষ হয়ে এলে শান্তি দাত্রী প্রেয়সীকে অন্ধকারের মধ্যে মুখোমুখি পেয়ে কবির অন্তরে উথলে উঠেছে পরম সুখ ও শান্তির লহরী