উৎস : ব্যাখ্যেয় অংশটুকু প্রকৃতির কবি জীবনানন্দ দাশ বিরচিত ‘বনলতা সেন’ কবিতা থেকে চয়ন করা হয়েছে।
প্রসঙ্গ : বনলতা সেনের দেখা পেয়ে কবির মনে যে প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছিল তা এখানে প্রকাশ পেয়েছে।
বিশ্লেষণ : কবির নীড়হারা মন হাজার বছরের পথ ধরে এগিয়ে চলছিল পৃথিবীর পথে। নীড়ের সন্ধানে তিনি ঘুরেছেন প্রাচীন ভারতের সর্বত্র। সিংহল সমুদ্র মালয় সাগর বিম্বিসার ও অশোকের রাজত্ব, বিদর্ভ নগরী এর কোথাও তিনি নীড়ের সন্ধান পাননি অবশেষে জীবন সমুদ্রের বেলাভূমিতে এসে উত্তরবঙ্গের নাটোরে এসে তিনি খুঁজে পেয়েছেন তার কাঙ্ক্ষিত নীড়। এখানে তিনি সন্ধান পেয়েছেন তার প্রিয়তমা বনলতা সেনের। সমুদ্রের বুকে নাবিক জাহাজের হাল ভেঙে গেলে দিশেহারা হয়ে পড়ে। জীবনের সব আশা ও সম্ভাবনা তাঁর শেষ হয়ে যায়। জাহাজটি তখন বাতাস ও স্রোতের ইচ্ছা মতো ভাসতে থাকে। হঠাৎ অদূরে সবুজ ঘাসে ভরা দারুচিনি দ্বীপ দেখতে পেলে নাবিক আনন্দে আত্মহারা হয়ে পড়ে। অনিশ্চিত জীবনের হতাশার গ্লানি দূর হয়ে তার মুখ প্রশান্তিতে উদ্ভাসিত হয়ে উঠে। কবিও হাল ভাঙা নাবিকের মতো হঠাৎ করে বনলতা সেনের দেখা পেয়ে জীবনের নিশ্চয়তাজনিত সুখ ও স্বস্তি ফিরে পেয়েছেন।
মন্তব্য: হাজার বছরের পথ অতিক্রম করতে করতে হঠাৎ করে বনলতা সেনের দেখা পেয়ে কবি হালডাঙা নাবিকের মতো জীবনের নিশ্চয়তার সন্ধান পেয়েছেন।