উত্তর : হরপ্রসাদ শাস্ত্রী বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের একজন নিষ্ঠাবান গবেষক ও অন্যতম প্রবন্ধকার রূপে প্রসিদ্ধি লাভ করেছেন। তৈল’ প্রবন্ধে প্রাবন্ধিকের সুচিন্তিত সিদ্ধান্তমুখী মানসিকতা, রচনার মধ্যে বিশুদ্ধ কৌতুক রসের পরিবেশনা প্রবন্ধটিকে উপভোগ্য করে তুলেছে। প্রাবন্ধিক তৈলের যে শক্তি তা তিনি বিভিন্ন ভাবে পর্যবেক্ষণ করেছেন এবং সেই পর্যবেক্ষণযাত অভিজ্ঞতাকে এখানে তুলে এনেছেন। প্রাবন্ধিক দেখেছেন তৈলের সর্বশক্তিমত্তার প্রকাশ। যেখানে সবকিছু ব্যর্থ— সেখানে তৈল কীভাবে কাজ করে সফল হয়। প্রবান্ধিক মনে করেন স্নেহ ভালোবাসা এবং তৈল দেওয়ার মধ্যে প্রকৃত অর্থে তেমন কোনো পার্থক্য নেই। যাকে আমরা স্নেহ বলি তা এক অর্থে তৈল— কেননা তৈল স্নেহজাতীয় পদার্থ। আমরা একে অপরকে ভালোবাসি-স্নেহ করি এর অর্থও দাঁড়ায় আমরা একে অপরকে তৈলদান করে থাকি। স্নেহ ভালোবাসা মানুষকে স্নিগ্ধ করে এবং ঠাণ্ডা করে, অন্যদিকে তৈলও মানুষকে স্নিগ্ধ করে, মাথাকে ঠাণ্ডা করে- সুতরাং উভয়ের কার্যাদি এবং পরিণতি এক। আর এ কারণেই সংস্কৃত কবিরা মনুষ্যকেই সমানরূপে স্নেহ বা তৈল দিতে বলেছেন।