সংসারের অসংখ্য ভীরু ও দুর্বল নরনারীর মধ্যে এত বড় বুকের পাটা আর এমন একটা জোরালো শরীর নিয়া শুধু একটা হাতের অভাবে সে যে মরিয়া আছে। এমন কপালও মানুষের হয়?”- ব্যাখ্যা কর।

উৎস : ব্যাখ্যেয় গদ্যাংশটুকু ত্রিশোত্তর বাংলা সাহিত্যের অন্যতম প্রাণপুরুষ মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় বিরচিত ‘প্রাগৈতিহাসিক’ শীর্ষক ছোটগল্প থেকে চয়ন করা হয়েছে।
প্রসঙ্গ : এখানে ভিখু তার বর্তমান বৈচিত্র্যহীন জীবনের অসহায় অবস্থার জন্য আপসোস প্রকাশ করেছে।
বিশ্লেষণ : ডাকাত সর্দার ভিখুর বিগত জীবন ছিল উদ্দাম ও ঘটনাবহুল। দলবল নিয়ে সে এ গ্রামে ও গ্রামে ডাকাতি করে বেড়াত। কেউ তার সামনে প্রতিবন্ধক হিসেবে দাঁড়ালে দায়ের এক কোপে তার মাথাটা ধড় থেকে বিচ্ছিন্ন করে দিয়ে আসত। মানুষের রক্ত দেখে সে উল্লসিত হতো। যখন তখন পরনারী অপহরণ করে দেহের ক্ষুধা মেটাত। অথচ ডান হাতটা হারানোর জন্য এখন তাকে রাস্তায় বসে ভিক্ষে করতে হচ্ছে। মানুষ খুন করতে যার ভালো লাগত সে আজ ভিক্ষে না দিয়ে চলে যাওয়া পথচারীকে একটু টিটকারী দিয়ে মনের জ্বালা মেটায়। দেহের শক্তি তার এখনো অক্ষুণ্ন আছে। কিন্তু একটা হাত দিয়ে ভিক্ষে করা ছাড়া আর কিছু করার উপায় নেই। সংসারের অসংখ্য ভীরু ও দুর্বল নরনারীর মধ্যে এতবড় বুকের পাটা এবং এমন একটা জোরালো শরীর নিয়ে শুধু ঐ একটা হাতের অভাবে তাকে মরে থাকতে হচ্ছে। এমন পোড়া কপালও মানুষের হয়। ডান হাতটাতে অন্ধকারে হাত বুলিয়ে ভিখুর আপসোসের সীমা থাকে না।
মন্তব্য : পঙ্গু ভিখুর অসহায় অবস্থার বর্ণনা প্রসঙ্গে উল্লিখিত বাক্য দুটিই যথেষ্ট।

https://topsuggestionbd.com/%e0%a6%aa%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a6%be%e0%a6%97%e0%a7%88%e0%a6%a4%e0%a6%bf%e0%a6%b9%e0%a6%be%e0%a6%b8%e0%a6%bf%e0%a6%95-%e0%a6%97%e0%a6%b2%e0%a7%8d%e0%a6%aa-%e0%a6%ae%e0%a6%be%e0%a6%a8%e0%a6%bf/