উত্তর : ভূমিকা : হিন্দু ধর্মের সংস্কার ও বিভিন্ন দিকের সংঘাত হতে এ ধর্মকে রক্ষা বা মুক্ত করার জন্য শ্রীচৈতন্যকে প্রয়োজন ছিল। তিনি ছিলেন তৎকালীন সময়ের অসাধারণ একজন বিজ্ঞ সাধক। তিনি বাংলার ধর্ম ও সমাজ জীবনে সুদূরপ্রসারী সংস্কার সাধন করেন। নিম্নে শ্রী চৈতন্যের পরিচয় তুলে ধরা হলোঃ
→ শ্রীচৈতন্যের পরিচয় : ১৪৮৫ সালে পশ্চিমবঙ্গের নবদ্বীপে শ্রীচৈতন্যের জন্ম। তাঁর পিতার নাম জগন্নাথ মিশ্র। তাদের আদি
বাসস্থান ছিল শ্রীহট্ট জেলার (বর্তমান সিলেট জেলায়) ঢাকা দক্ষিণ নামক গ্রামে। শিশুকাল হতে শ্রীচৈতন্য বিদ্যানুরাগী ও ধর্মভাবাপন্ন ছিলেন। তার আদি নাম ছিল বিশ্বম্বর। পরিবার পরিজন তাকে নিমাই বলে ডাকতেন। পিতার মৃত্যুর পর হিন্দু শাস্ত্রে মতে গয়াতে পিতার পিণ্ডদান করতে গিয়ে তিনি ঈশ্বরপুরী নামক এক সন্ন্যাসির সান্নিধ্যে আসেন এবং তার নিকট হতে কৃষ্ণমন্ত্র গ্রহণ করেন। এর পরই তার জীবনের গতি-প্রকৃতি সম্পূর্ণভাবে পরিবর্তিত হয়ে যায়। তিনি কেশব ভারতীয় এর নিকট সন্ন্যাস ধর্ম গ্রহণ করেন। চব্বিশ বছর বয়সে তিনি সংসার ধর্ম ত্যাগ করেন । তিনি ঈশ্বর প্রেমে বিভোর হয়ে উত্তর ও দক্ষিণ ভারতের বিভিন্ন স্থান পরিভ্রমণ করেন। জীবনের শেষ কয়েক বছর তিনি পুরীতে ছিলেন।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, ভক্তিবাদের প্রচারকদের মধ্যে শ্রীচৈতন্যই সর্বাধিক প্রসিদ্ধ। অদ্বৈত ও নিত্যানন্দ ছিলেন
তার ঘনিষ্ঠ দুইজন শিষ্য। তাদের সাহায্য নিয়ে শ্রীচৈতন্য বাংলার ধর্ম ও সমাজ জীবনে সুদূরপ্রসারী সংস্কার সাধন করেছিলেন। এই
সাধক তার সাধনা দ্বারা আজও খ্যাত হয়ে আছেন। তার প্রদর্শিত পথে পরবর্তীতে অনেক শিষ্য আগমন করে ও এই চিন্তা ও ধর্মমতকে উন্নতির চরম সোপানে নিয়ে যান। শ্রীচৈতন্যকে আজও মানুষ শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে থাকে।