শিশু কল্যাণ কী? বাংলাদেশ সরকারের শিশুকল্যাণ কর্মসূচির সংক্ষিপ্ত বিবরণ দাও।

উত্তর : ভূমিকা ঃ বাংলাদেশ একটি উন্নয়নশীল দেশ। এখানে প্রতিবছর লাখ লাখ শিশুর জন্ম হচ্ছে। শিশুদের বিকাশ নিশ্চিতকরণে বাংলাদেশের আগামী ভবিষ্যৎ হবে সুদৃঢ়। শিশুরাই পারে নিত্য নতুন উপায় অবলম্বন করে গোটা বাংলাদেশের উন্নয়ন সাধন করতে। শিশুদের শিক্ষা পুষ্টি, স্বাস্থ্য ও সুষ্ঠু সামাজিকীরণের লক্ষ্যে বাংলাদেশে শিশুকল্যাণ কর্মসূচি পরিচালিত হচ্ছে। সরকারের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় এতিম, অনাথ, দরিদ্র শিশুরা মৌল মানবিক চাহিদা পূরণে সক্ষম হচ্ছে। দেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থার প্রেক্ষাপটে শিশুরা বিভিন্ন জোরপূর্বক শ্রম ও যৌন নির্যাতনেরও শিকার হচ্ছে। এগুলো থেকে উদ্ধারে ও গঠনমূলক ব্যবস্থাদির মাধ্যমে শিশুকল্যাণ কাজ করে যাচ্ছে। তাই শিশুকল্যাণ কর্মসূচি এখন বাংলাদেশে বেশ সমাদৃত ।
→ শিশুকল্যাণ ঃ শিশুকল্যাণ প্রত্যয়টি ব্যাপক’। শিশুকল্যাণ বলতে জন্মের পূর্ব থেকে শুরু করে কৈশোর পর্যন্ত শারীরিক, মানসিক, আর্থিক, সামাজিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশ ও কল্যাণের উদ্দেশ্যে পরিচালিত কর্মসূচিকে বুঝায়। কোনোরূপ বৈষম্য ব্যতীত দেশের সব শিশুর প্রতিভা ও সুষ্ঠু সামাজিকীকরণের এটি কাজ করে থাকে।
সাধারণ অর্থে ঃ সাধারণ অর্থে কতিপয় শিশুর কল্যাণ সাধনের নিমিত্তে যে সকল ব্যবস্থাবলি গৃহীত ও পরিচালিত হয়
তাদের সমষ্টিকে শিশুকল্যাণ বলে। দায়িত্বশীল ও সুনাগরিক গড়ে তোলার লক্ষ্যে শিশুকল্যাণ কর্মসূচি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে ।
@ প্রামাণ্য সংজ্ঞা :
হ্যাজেল ফ্রেডারিকসেন বলেছেন, “শিশুকল্যাণ বলতে সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান কর্তৃক গৃহীত সেসব সামাজিক, অর্থনৈতিক ও দৈহিক কার্যক্রমকে বুঝায় যেগুলো সকল শিশুর দৈহিক, বুদ্ধিবৃত্তিক, মানসিক ও আবেগের উন্নতি ও সার্বিক কল্যাণে নিয়োজিত।” সমাজকর্ম অভিধানের সংখ্যানুযায়ী, “শিশুকল্যাণ হচ্ছে মানব সেবা ও সমাজকল্যাণ কর্মসূচির অংশবিশেষ এবং
শিশুর সংরক্ষণ, পরিচর্যা ও সুস্থ বিকাশের আদর্শমুখী।” ভারতীয় সমাজকর্ম বিশ্বকোষ এর সংজ্ঞানুযায়ী, “শিশুকল্যাণ বলতে শিশুদের সামগ্রিক কল্যাণকে নির্দেশ করে। এটি শিশুর দৈহিক, বুদ্ধিবৃত্তিক, আবেগীয় ও সামাজিক সুপ্ততার পরিপূর্ণ বিকাশে নিশ্চিতকরণে প্রয়োজনীয় সকল সেবাকে অন্ত
ভুক্ত করে।”
শব্দগত অর্থে ঃ শিশুকল্যাণের ইংরেজি শব্দরূপ হলো “Child Welfare”। তাই শব্দগত অর্থে শিশুকল্যাণ বলতে শিশুদের কল্যাণের নিমিত্তে প্রচেষ্টার বাস্তবায়ন।
বিশেষ সংজ্ঞা ঃ শিশুকল্যাণ প্রত্যয়টির বিশেষ সংজ্ঞায়ন করেছেন Dr. Md. Ali Akbar তাঁর Elements of social welfare নামক গ্রন্থে এভাবে “শিশুকল্যাণ বলতে কোন শিশুর জন্মের পূর্বের ও পরের শৈশবকালের ও স্কুল পূর্বে হতে বয়ঃসন্ধিকাল পর্যন্ত যত্ন ও রক্ষণাবেক্ষণকে বুঝায়।”
→ বাংলাদেশ সরকারের শিশুকল্যাণ কর্মসূচি ঃ বাংলাদেশ একটি কল্যাণমূলক রাষ্ট্র। এখানে সরকার অনাথ, অসহায় ছিন্নমূল শিশুদের সুষ্ঠু সামাজিকীকরণ ও আদর্শ নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে শিশুকল্যাণ কর্মসূচি পরিচালনা করছে। বাংলাদেশ সরকারের শিশুকল্যাণ কর্মসূচির বিবরণ নিম্নরূপ :
১. শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র ঃ বর্তমান অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটে একটি পরিবারের বাবা-মা উভয়কেই কর্মের দিকে ধাবিত হতে হয়। সরকারের প্রচেষ্টায় শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র স্থাপিত হয়েছে। যেখানে কর্মজীবী মায়েরা সকাল ৭ টাকা থেকে বিকাল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত শিশুদের রাখতে পারে। পেশাদার সমাজকর্মীর তত্ত্বাবধানে শিশুরা খেলাধুলা, নাচ, গান, বিশ্রাম, লেখাপড়া, ছবি আঁকাসহ তাদের যাবতীয় কাজ করতে পারে। প্রতিটি শিশুর জন্য ৩৭০ টাকা মাসিক ফি হিসেবে গ্রহণ
করা হয়।
২. সরকারি শিশুদান ঃ বাংলাদেশ সরকার মাতা-পিতাহীন শিশু যাদের প্রতিপালনের দায়িত্বভার নেওয়ার মত কেউ নেই, তাদের রক্ষণাবেক্ষণ, পুনর্বাসন ও সামাজিকীকরণের লক্ষ্যে সরকারি শিশু সদন স্থাপন করেছেন। বর্তমানে বাংলাদেশে প্রায় ৭৩টি শিশুসদন বিরাজমান। ঐসব সদনে শিশুদের বিনামূল্যে থাকা-খাওয়া, লেখাপড়া ও বৃত্তিমূলক
প্রশিক্ষণ গ্রহণের সুযোগ সুবিধা সৃষ্টি করা হয়েছে।
৩. প্রাক-বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ঃ বাংলাদেশ সরকারের অধীনে শিশুদের আর্থ-সামাজিকভাবে স্বাবলম্বী করে
তোলার জন্য ৫টি এতিমখানায় প্রাক-বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র পরিচালিত হচ্ছে। এগুলো চাঁদপুর, বাগেরহাট, রাজশাহী,
তেজগাঁও এবং ঢাকার সলিমুল্লাহ এতিমখানা অবস্থিত। এখানে বয়স্ক এতিম কিশোর কিশোরীদেরকে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ দানের ব্যবস্থা করা হয়।
• ৪. শিশু সংরক্ষণ কেন্দ্র ঃ এতিম, পরিত্যক্ত, অবহেলিত শিশুদের রক্ষণাবেক্ষণ, ভরণপোষণ, লেখাপড়া, খেলাধুলা ও সুচিকিৎসা প্রদানের লক্ষ্যে সারাদেশে ৬টি শিশুসংরক্ষণ কেন্দ্র পরিচালিত হচ্ছে। এখানে ০-৫ বছর বয়সী শিশুদের স্থান দেওয়া। এই বয়স ছাড়িয়ে গেলেই শিশু সদনে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়। ১৯৬২ সালে সর্বপ্রথম ঢাকার আজিমপুরে শিশুসংরক্ষণ কেন্দ্রের যাত্রা শুরু হয়।
৫. শিশু পরিবার ৪ বাংলাদেশের হাজার হাজার এতিম শিশুকে পরিবারের ছত্রছায়ার আদলে লালন-পালনের জন্য সরকার শিশু পরিবার গঠনে উদ্যোগী হন। এর ধারাবাহিকতায় সমগ্র বাংলাদেশে ১১২টি শিশু পরিবারের সৃষ্টি হয়। শিশুপরিবার সাধারণত দু’রকমের হয়ে থাকে। এক; ০ – ১০ বছর বয়সী শিশুদের নিয়ে ১৫ সদস্য বিশিষ্ট একটি
পরিবার। দুই; ১১ – ১৮ বছরের শিশুদের নিয়ে ২৫ সদস্যবিশিষ্ট আরেকটি পরিবার। প্রতিটি পরিবারেই সার্বিক তত্ত্বাবধানের জন্য ১জন করে যা, বড় ভাই ও বড় আপা হিসেবে সমাজকর্মীকে নিয়োগদান করা হয়।
৬. দুর্দশাগ্রস্ত শিশুদের প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ঃ ৫০ জন দরিদ্র, অসহায়, এতিম, বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ উপযোগী শিশু ও বাহিরের দুর্দশাগ্রস্ত আরো ৫০ জন শিশুকে একত্রে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ দেবার জন্য আশ্রয়, যত্ন, রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিচর্যার ব্যবস্থা করা হয় এ কেন্দ্রে। বর্তমানে এটা চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় এ ধরনের একটি কেন্দ্র কাজ করে যাচ্ছে।
৭. প্রতিবন্ধী শিশুদের কল্যাণ কেন্দ্র ঃ বাংলাদেশে বহুসংখ্যক শিশু শারীরিক ও মানসিকভাবে বিকলাঙ্গ, দুর্বল। তাদের শিক্ষা, স্বাস্থ্যের উন্নতি সাধনে সরকার বেশ তৎপর। প্রতিবন্ধী শিশুদের সার্বিক কল্যাণ বিশেষ করে শিক্ষাদান নিশ্চিত করতে সরকার ঢাকা, রাজশাহী, চট্টগ্রাম ও খুলনায় ৫টি করে অন্ধ স্কুল, ৭টি করে মূক ও বধির স্কুল এবং ৫টি
করে বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপনের ব্যবস্থা করেছে।
৮. মাতৃমঙ্গল ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র ঃ মায়ের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করা গেলেই সুস্থ-সবল শিশুর জন্ম হবে। আর সে লক্ষ্যেই দেশের ৬৮টি জেলা সদর হাসপাতালে মাতৃমঙ্গল ও শিশুকল্যাণ কেন্দ্রের সহায়তায় দুর্বল, অসহায় গর্ভবতী মায়েদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা, প্রসূতি সেবা ও পৃথক পৃথক মা ও শিশু শয্যার ব্যবস্থা করা হয়। ফলে শিশুর স্বাস্থ্যগত উন্নতি ঘটে।
৯. সরকারি এতিমখানা : বাংলাদেশের এতিম অনাথ শিশুদের লালন-পালনের জন্য সরকারের অনুমোদনে ৪৮টি এতিমখানা কর্মরত রয়েছে। সাধারণ মানুষের সহায়তা ও বেশ কিছু এতিমখানা পরিচালিত হচ্ছে। এই
এতিমখানাগুলোতে শিশুদের থাকা-খাওয়া ও সাধারণ শিক্ষার ব্যবস্থা গৃহীত হয়ে থাকে ।
১০. শান্তি নিবাস ঃ প্রবীণদের সাথে শিশুদের এক আনন্দঘন ও প্রীতিপূর্ণ পরিবেশ হলো এই শান্তি নিবাস। এখানে বৃদ্ধ ও বৃদ্ধার সাথে শিশুদের রাখার ব্যবস্থা করা হয়। বর্তমানে ৬টি বিভাগে ৬টি শান্তি নিবাস রয়েছে যার আওতায় শিশু কিশোরদেরকে খাদ্য, চিকিৎসা, প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসনের সুবন্দোবস্ত করা হয়ে থাকে। তাই এর গুরুত্বটা একটু বেশি
শিশুদের জীবনে।
১১. শিশু-কিশোরদের নিরাপদ আবাসন ঃ শিশু-কিশোরী যারা বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের জন্য কিশোর আদালতের
মাধ্যমে সাজাপ্রাপ্ত হয় তাদের জন্য শিশু-কিশোরী নিবাসন। এতে তাদেরকে খাদ্য, চিকিৎসা, শিক্ষাদানের পাশাপাশি নৈতিকতা
গঠন ও বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণদানের ব্যবস্থা করা হয়। ফলে তারা আদর্শ নারীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে শেখে ।
১২. মানসিক প্রতিবন্ধী শিশুদের কল্যাণ প্রতিষ্ঠান ঃ বাংলাদেশে বহু শিশু মানসিকভাবে প্রতিবন্ধী। যারা স্বাভাবিক
জীবনযাপনে ব্যর্থ। তাদের কল্যাণের নিমিত্ত বাংলাদেশ সরকার মানসিক প্রতিবন্ধী শিশুদের শিক্ষা, চিকিৎসা, কারিগরি প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করে থাকে। বাংলাদেশে চট্টগ্রামের রাউফাবাদে প্রায় ১০০ আসন বিশিষ্ট এ ধরনের একটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে।
১৩. দুস্থ শিশুদের পুনর্বাসন কেন্দ্র ঃ ১৯৭২ সালের পর হাজার হাজার শিশুদের রক্ষণাবেক্ষণ, প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসনের লক্ষ্যে ৫৬টি কেন্দ্রের মাধ্যমে দুঃস্থ শিশু পুনর্বাসন কেন্দ্র নির্মাণ করা হয়। এই পুনর্বাসন কেন্দ্রগুলোর সফলতা অচিরেই প্রতিফলিত হতে থাকে। ফলশ্রুতিতে ১৯৮৪ সালে গাজীপুরে ৪০০টি আসন বিশিষ্ট বিশেষ পুনর্বাসন কেন্দ্র গড়ে তোলা হয়। সমাজের দুর্বল, দুস্থ অসহায় শিশুদের বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ দানের মাধ্যমে দৈহিক ও মানসিক দিক দিয়ে যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে
তোলা হয়।
১৪. কিশোর অপরাধ সংশোধন কেন্দ্র ঃ চলমান আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপটে বৃহৎ পরিবারের ভাঙ্গন স্বামী স্ত্রীর বিচ্ছিন্নতা, হঠাৎ দুর্ঘটনাজনিত কারণ পরিবারের কর্তার মৃত্যু অহরহ ঘটছে। ফলে এসব পরিবারের শিশুরা নিরাপত্তাহীন হয়ে পড়ছে, নিঃসঙ্গতা এড়াতে খারাপ বন্ধুদের সাথে মিশে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। বাবা-মার কোলাহলো তাদের মাঝে অপরাধবোধ জাগ্রত করছে। তাই যখন তখন কিশোর অপরাধ সংঘটনের মাত্রা বেড়ে যাচ্ছে। এসব নিরীহ শিশু ‘কিশোরদেরকে সমাজে সুন্দর স্বাভাবিক জীবনযাপনে সহায়তার লক্ষ্যে সংশোধনের সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। আর সে লক্ষ্যে গাজীপুরের টঙ্গীতে একটি কিশোর অপরাধ সংশোধন কেন্দ্রের মাধ্যমে কিশোরদেরকে সংশোধনের ও পুনর্বাসনের চেষ্টা চালানো হচ্ছে।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, বাংলাদেশে শিশুদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, আবাসন ও কর্মমুখী প্রশিক্ষণ প্রদান ও পুনর্বাসনের লক্ষ্যে পরিচালিত কর্মসূচিকে শিশুকল্যাণ কর্মসূচি বলে। জাতি, ধর্ম, বর্ণ, দরিদ্র, নির্বিশেষে সব শিশুর সুষ্ঠু সামাজিকীকরণ ও উন্নত মানসিকতা বিকাশের লক্ষ্যেই শিশুকল্যাণের অগ্রযাত্রা। যদিও শিশুকল্যাণ কর্মসূচি বাস্তবায়নে কিছুটা আর্থিক সমস্যার সৃষ্টি হয় তবুও এ কর্মসূচি থেমে নেই। ত নাথ, এতিম, অসহায় ও ছিন্নমূল শিশুদেরকে জীবনের
শুরু থেকে যৌবনে পদার্পণ পর্যন্ত সুষ্ঠু ও সুন্দর ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে আদর্শ জাতি গঠনে শিশুকল্যাণ কর্মসূচির গুরুত্ব সত্যিই অতুলনীয় ও ব্যাপক