অথবা, বাংলাদেশের নারী শিক্ষা সম্পর্কে আলোচনা কর।
অথবা, শিক্ষা ক্ষেত্রে বাংলাদেশের নারীর অবস্থা তুলে ধর।
অথবা, বাংলাদেশের নারী শিক্ষা সম্পর্কে সংক্ষেপে বর্ণনা দাও।
উত্তর৷ ভূমিকা : শিক্ষা একটি মানবিক অধিকার এবং সমতা, উন্নয়ন ও প্রগতির লক্ষ্য অর্জনে এক অপরিহার্য সুযোগ থেকে বঞ্চিত। আর শিক্ষাহীনতার কারণেই নারীদের সামাজিক অবস্থান অধস্তন বা নিচু ।
বাংলাদেশের নারী শিক্ষা : বাংলাদেশে নারীরা ঐতিহাসিকভাবেই শিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত। বাংলাদেশের সংবিধানের ১৭ (ক) অনুচ্ছেদ এ রাষ্ট্র পরিকল্পনার প্রাথমিক নীতি হিসেবে একটি অভিন্ন, গণমুখী এবং সার্বজনীন শিক্ষা ব্যবস্থার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। অর্থাৎ শিক্ষা লাভের অধিকারকে মৌলিক মানবাধিকার হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষায় মেয়েদের ভর্তির হার বাড়লেও মাধ্যমিক থেকে উচ্চশিক্ষার পথ পাড়ি দেয়ার আগে ঝরে পড়ছে অনেক মেয়ে। এর একটি অন্যতম কারণ, কেবল শিক্ষায় মেয়েদের অংশগ্রহণ বৃদ্ধিকেই একমাত্র লক্ষ্য হিসেবে দেখা হচ্ছে এবং এর জন্য প্রয়োজনীয় ইতিবাচক পরিবেশ তৈরি এবং পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র ও প্রতিষ্ঠানকে নারী বান্ধব করার জন্য যথাযথ উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে না। তবে বাংলাদেশের আনুষ্ঠানিক শিক্ষার সকল পর্যায়ে লিঙ্গীয় অসমতা রয়েছে। এ দেশে নারী সাক্ষরতার হার পুরুষের তুলনায় অনেক কম। ১৯৬১ সালের শুমারি অনুযায়ী এ দেশে পুরুষের সাক্ষরতার হার ২৯.৩% এবং নারীর সাক্ষরতার হার ৯.৬%। ২০০০ সালের হিসাব অনুসারে পুরুষ ও নারীর এ হার দাঁড়ায় যথাক্রমে ৫৩.৯% ও ৩৬.১% ২০০৬ সালের তথ্য অনুযায়ী পুরুষ ৫৫.৮%, নারী ৪৯.১%। তাই নারীদের শিক্ষা গ্রহণের হার বাড়লেও বৃদ্ধির হার অত্যন্ত কম। বাংলাদেশ সরকার নারী শিক্ষার প্রসারের জন্য বহুমুখী কার্যক্রম গ্রহণ করেছে।
উপসংহার : উপর্যুক্ত আলোচা থেকে বলা যায় যে, একটি দেশে উন্নয়ন সে দেশের নারী সমাজের উন্নয়নের উপর নির্ভরশীল। আর নারী সমাজের উন্নয়ন সম্ভব শিক্ষার প্রসারের মাধ্যমে। তাই এ দেশের সমাজ ব্যবস্থার সার্বিক বিকাশের স্বার্থে নারী শিক্ষাকে অবশ্যই অগ্রাধিকার দিতে হবে।