অথবা, লিঙ্গভিত্তিক অসমতার মনস্তাত্ত্বিক কারণসমূহ লেখ।
অথবা, লিঙ্গভিত্তিক অসমতার মনস্তাত্ত্বিক কারণসমূহের সংক্ষিপ্ত পরিচয়
দাও।
অথবা, লিঙ্গভিত্তিক অসমতার মনস্তাত্ত্বিক কারণগুলো বিশ্লেষণ করে বুঝিয়ে
দাঁও।
উত্তর৷ ভূমিকা : প্রকৃতিগতভাবেই নারী-পুরুষ অসম ভিত্তি নিয়ে জন্মগ্রহণ করে। এর অন্যতম প্রধান কারণ হচ্ছে নারী পুরুষের জৈবিক পার্থক্য বিভিন্ন উপাদানে পরিলক্ষিত হয়। পাশাপাশি লিঙ্গভিত্তিক অসমতার জন্য মনস্তাত্ত্বিক কারণও অন্যতম দায়ী।
লিঙ্গভিত্তিক অসমতার মনস্তাত্ত্বিক কারণ : স্বাভাবিকভাকেই বয়স্ক যে কোন নারী-পুরুষের ব্যক্তিত্বের মধ্যে পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়। কিন্তু কেন এ পার্থক্য এর মূলে কি জৈবিক নাকি আর্থসামাজিক কারণ দায়ী? তবে এক্ষেত্রে মনোবিজ্ঞানিগণ মানব শিশুদের উপর নানা গবেষণা ও পরীক্ষা নিরীক্ষার মাধ্যমে লক্ষ্য করেন যে, শিশুদের কোন কোন জৈবিক উপাদানের প্রভাবে তাদের ব্যক্তিত্ব বিকাশের মধ্যে ভিন্নতা দেখা দেয়। অতি অল্প বয়স্ক শিশুরা সমাজের সংস্পর্শে এসে তেমন কিছু শিখতে পারে না। এজন্য তাদের ব্যক্তিত্ব বিকাশের ক্ষেত্রে জৈবিক উপাদানের প্রভাব অধিক হারে লক্ষ্য করা যায়। অতএব নিঃসন্দেহে একথা বলা যায় যে, কেবল শারীরিক কাঠামোগত কারণে নয়, বরং মনস্তাত্ত্বিক কারণেও লিঙ্গভিত্তিক অসমতার সৃষ্টি হতে পারে। তাছাড়া অন্য একটি গবেষণায় লক্ষ্য করা গেছে যে, অল্পবয়সী পুরুষ ও মহিলা শিশুদের মধ্যে চাল-চলন, আচারব্যবহার, স্নেহ-মমতা, সাহস প্রভৃতি ক্ষেত্রে সুস্পষ্ট পর্থক্য পরিলক্ষিত হয়। নারী শিশুরা পুরুষ শিশুদের তুলনায় সহজেই হাসে এবং স্নেহের পরশে বেশ সংবেদনশীলতার পরিচয় দেয়। কিন্তু অপরদিকে পুরুষ শিশুরা বেশি ক্রিয়াশীল বা চঞ্চল এবং শক্ত প্রকৃতির। তারা সহজেই হাসে না কিংবা সহসাই কোন স্নেহ আদরের প্রতি সংবেদনশীলতা দেখায় না। এজন্য অধিকাংশ ক্ষেত্রে লক্ষ্য করা যায় যে, পিতামাতা মহিলা শিশুদেরকে আদর ও স্নেহভাবে বুকে টেনে নেয়, অপরদিকে পুরুষ শিশুর ক্ষেত্রে সেটি না করে বাহবা বা সাবাস বলে কাছে টেনে নেয়।
উপসংহার : উপর্যুক্ত আলোচনা শেষে বলা যায় যে, লিঙ্গভিত্তিক অসমতা বলতে নারী-পুরুষের মধ্যে বিদ্যমান বৈষম্যমূলক সম্পর্ককে বুঝায়। প্রায় সকল সমাজেই এ বৈষম্য বা অসমতা লক্ষ্য করা যায়। একক কোন কারণে এরকম বৈষম্যমূলক সম্পর্কের সৃষ্টি হয় না। বস্তুত এর পিছনে জৈবিক, মনস্তাত্ত্বিক, সাংস্কৃতিক প্রভৃতি কারণ সমভাবে দায়ী।