অথবা, র্যাডিক্যাল নারীবাদ সম্পর্কে মেরিলিন ফ্রেন্স এর মতবাদ সংক্ষেপে ব্যাখ্যা কর।
অথবা, মেরিলিন ফ্রেন্সের র্যাডিক্যাল নারীবাদ সংক্ষেপে আলোচনা কর।
অথবা, মেরীলিন ফ্রেন্সের র্যাডিক্যাল নারীবাদ সম্পর্কে তুমি কী জান?
অথবা, ফ্রেলের র্যাডিক্যাল নারীবাদ সংক্ষেপে ব্যাখ্যা কর।
অথবা, মেরিলিন ফ্রেন্স র্যাডিক্যাল নারীবাদ সম্পর্কে কী বলেছেন? সংক্ষেপে লিখ।
উত্তর৷ ভূমিকা : মেরিলিন ফ্রেন্স হচ্ছেন আমূল নারীবাদী দার্শনিক, যার চিন্তাধারা ছিল একটু ভিন্ন। ফ্রেন্স তাঁর অন্যতম গ্রন্থ “Beyond Power On Women, Men and Morals” প্রকাশ করেন ১৯৮৫ সালে। যেখানে তিনি তাঁর নারীবাদী চিন্তাধারা উপস্থাপন করেন।
মেরিলিন ফ্রেন্স এর অভিমত : ফ্রেন্স বলেন, সকল প্রকার নির্যাতনের মূলে রয়েছে পিতৃতন্ত্র। পুরুষতন্ত্র নারীর উপর পুরুষের আধিপত্যের ন্যায্যতা যদি প্রমাণ করা সম্ভব হয় তাহলে অন্যান্য সকল ধরনের আধিপত্যের ন্যায্যতা প্রমাণ করা সম্ভব হবে বলে তিনি বিশ্বাস করেন। মেরিলিন মনে করেন নারীর উপর পুরুষের স্তরবিন্যাস সকল শ্রেণির স্ত
রবিন্যাসের সূত্রপাত ঘটায়। আর একটি অভিজাত শ্রেণি জনগণের উপর আধিপত্য চালায়। ফ্রেন্স মনে করেন আদিম সমাজ ছিল মাতৃতান্ত্রিক এবং মা-ই প্রকৃতির সাথে মানুষের খাপখাইয়ে নেয়ার শিক্ষা প্রদান করতো। জনসংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রকৃতির উপর শত্রুতা বৃদ্ধি পেল এবং নারীর উপর পুরুষের নিয়ন্ত্রণ শুরু হলো। ফলে পুরুষ প্রকৃতি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে নারী ও প্রকৃতির উপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার আকাঙ্ক্ষা থেকে পুরুষতন্ত্রের জন্ম দেয়। বিংশ শতাব্দীর ৬০-এর দশকে এই নারীবাদী ধারার উদ্ভব ঘটে পাশ্চাত্যে। রেডিক্যাল নারীবাদ নারীর পুনঃউৎপাদন বা প্রজননমূলক ভূমিকা এবং এর বিস্তৃতিস্বরুপ সন্তান লালন-পালন ও সাংসারিক কর্মকাণ্ডে আবদ্ধ থাকাটাকেই নারীর অধস্ত নতার মূল কারণ রূপে বিবেচনা করে। বিশ্বাস করে যে উৎপাদন ব্যবস্থা বা সমাজকাঠামো নয়, নারী ও পুরুষের মধ্যকার বৈষম্য তাদের শারীরিক বাস্তবতা থেকে উদ্ভূত। এই নারীবাদের মূল কথা হলো, পুরুষ নারীকে শোষণ করে লৈঙ্গিক পীড়নের (Sexual opperssion) মাধ্যমে। পুরুষের শারীরিক শক্তি, আগ্রাসন মনোভাব ও নির্যাতনের ক্ষমতা নারী নিপীড়কে মদদ দেয় এবং নারীর অধস্তনতার সৃষ্টি করে।
উপসংহার : আলোচনার আলোকে আমরা বলতে পারি, মেরিলিন ফ্রেন্স পুরুষতন্ত্রের অবদান কামনা করেছেন আর তিনি ফায়ারস্টোনের মতো নারী ও পুরুষকে পুরুষসুলভ ও নারীসুলভ বৈশিষ্ট্যের মধ্য দিয়ে উভয় লিঙ্গিক সমাজের বাসিন্দা করে তুলতে চেয়েছেন।