উত্তর: ভুমিকা:রোশাক কালির ছাপ বা “রোশাক কালির ছাপের সংজ্ঞা” হলো একটি মূল্যাংকন পদ্ধতি, যা সাধারণভাবে কোনও সংক্ষেপ বা সারসংক্ষেপ দেওয়ার জন্য ব্যবহৃত হয়। এই পদ্ধতিতে একটি বিষয়টির গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্যগুলি সাংক্ষেপে উল্লিখন করা হয় যাতে এটি সর্বোপরি সম্পর্কপূর্ণ তথ্য দেয়। এটি সাধারণভাবে নিউজ, সারাংশ, ব্রিফিং, বা একটি বিশেষ বিষয়ের সংক্ষেপ হতে পারে। সুতরাং, রোশাক কালির ছাপের সংজ্ঞা এটি ব্যবহার করে একটি বিষয় বা ঘটনার গুরুত্বপূর্ণ পার্টিকুলার তথ্য বা সারসংক্ষেপ দেয় যা পাঠকদের সমস্ত প্রধান বিষয়ের সাথে সংক্ষিপ্তভাবে পরিচিত করে।
রোশাক কালির ছাপ অভীক্ষা : ১৯২১ সালে সুইজারল্যান্ডের মনোচিকিৎসক হারম্যান রোশাক এ অভীক্ষাটি আবিষ্কার করেন। এই অভীক্ষাটি বিভিন্ন প্রকৃতি ও রঙের ১০টি কালির ছাপবিশিষ্ট কার্ড নিয়ে এ অভীক্ষাটি গঠিত। তাঁর নামানুসারে এই অভীক্ষাটি রোশাক কালির ছাপ নামে পরিচিত। রোশাক অভীক্ষার ১০টি কালির ছাপের মধ্যে ৫টি কালো ও ধূসর বর্ণের, ২টি কালো ও লাল বর্ণের এবং অবশিষ্ট ৩টি অন্যান্য বর্ণের। কার্ডগুলো ১ থেকে ১০ পর্যন্ত সংখ্যা দ্বারা চিহ্নিত। অভীক্ষার্থীকে একটি করে কার্ড দেওয়া হয় এবং সে কি দেখেছে তা বলতে বলা হয়। সে যতক্ষণ খুশি তা দেখতে পারে তবে একটি কার্ড দেখতে কত সময় লাগে তা লিখে রাখা হয়। এভাবে অভীক্ষার্থীকে ১০টি কার্ড দেখানো শেষ হলে তাকে দ্বিতীয়বার কার্ডগুলো দেখিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় এবং কার্ডের কোন অংশ দেখেছে তা নির্দেশ করতে বলা হয়। অভীক্ষার্থীর উত্তরগুলো তিনটি বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে মূল্যায়ন করা হয় । যথা :
১. পরীক্ষণপাত্র সমগ্র ছবিটির বর্ণনা করেছে, নাকি ছবিটির আংশিক বর্ণনা করেছে : কোনো ব্যক্তি যদি সম্পূর্ণ ছবির ওপর গুরুত্ব প্রদান করে তাহলে বুঝা যাবে সে বিমূর্ত চিন্তা ও তাত্ত্বিক জ্ঞান পছন্দ করে। আর যদি সে আংশিক বিষয়ের ওপর গুরুত্ব প্রদান করে, তাহলে বুঝা যাবে সে খুঁটিনাটি বা সামান্য বিষয় নিয়ে ব্যস্ত থাকতে পছন্দ করে।
২. ছবির আকৃতি রং বা কোনোকিছু দ্বারা তার প্রতিক্রিয়া প্রভাবিত হয়েছে কি না : কোনো ব্যক্তি যদি অধিক রঙের ওপর গুরুত্ব দিয়ে থাকে তাহলে বুঝা যাবে তারমধ্যে অসংযত আবেগ বিদ্যমান। কিন্তু সে যদি রং এবং আকৃতি উভয়ের ওপর গুরুত্ব দিয়ে থাকে তাহলে বুঝা যাবে তার আবেগের প্রকৃতি অবাধ ও সাবলীল।
৩. পরীক্ষণপাত্র এ ছবিগুলোকে কি হিসেবে দেখেছে : ব্যক্তি যদি মানুষের ছবি বা গতিশীল মানুষের ছবি দেখে থাকে তাহলে তার অধিক বুদ্ধিমত্তার পরিচয় পাওয়া যাবে। আর যদি জীবজন্তুর ছবি দেখে থাকে তাহলে বুঝা যাবে, তার চিন্তার পরিধি খুবই সীমিত।
উপসংহার : উপরিউক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায় যে, উপযুক্ত কর্মে উপযুক্ত কর্মী নিয়োগের জন্য ব্যক্তিত্ব মূল্যায়নের গুরুত্ব অপরিহার্য। সাম্প্রতিককালে কর্মের ক্ষেত্রে ভিন্নতা এবং বৈচিত্র্যের মাত্রা বৃদ্ধি পাওয়াতে বিশেষ বিশেষ কর্মে সাফল্য অর্জনের জন্য এসব কর্মের উপযোগী মানসিক সংগঠন বা ব্যক্তিত্বসম্পন্ন লোকের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম বলে প্রমাণিত হয়েছে। পরিশেষে বলা যায় যে, কোনো বিশেষ কর্মের জন্য কি ধরনের ব্যক্তিত্বসম্পন্ন লোক যথার্থ তা নির্ধারণের জন্য ব্যক্তিত্ব পরিমাপ করা জরুরি।