অথবা, রেমিট্যান্স কাকে বলে? প্রবাসীদের রেমিট্যান্স প্রেরণে প্রতিবন্ধকতাগুলো বিশ্লেষণ কর।
অথবা, রেমিট্যান্স কী? প্রবাসীদের রেমিট্যান্স প্রেরণে বাধাসমূহ তুলে ধর।
উত্তর৷ ভূমিকা : রেমিট্যান্সকে ধরা হয় অন্যতম প্রভাবক হিসেবে যেসব উপাদান অর্থনীতিকে শক্তিশালী করতে পারে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সৃষ্টি, বেকারত্ব হ্রাসসহ বিভিন্ন অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে রেমিট্যান্সের ব্যাপক ভূমিকা রয়েছে।
রেমিট্যান্স : প্রবাসে অবস্থানরত বাংলাদেশিদের দ্বারা তাদের আয়কৃত অর্থ বৈদেশিক মুদ্রায় দেশে প্রেরণ করা হলে তাকে বলা হয় রেমিট্যান্স । এ রেমিট্যান্স যে কোনো দেশের অর্থনীতিতে বিরাট ভূমিকা রাখতে পারে।
প্রবাসীদের রেমিট্যান্স প্রেরণে প্রতিবন্ধকতাসমূহ : নিম্নে প্রবাসীদের রেমিট্যান্স প্রেরণে প্রতিবন্ধকতাসমূহ
আলোচনা করা হলো : বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সমীক্ষা ২০১১ এ প্রকাশিত সরকারি তথ্য অনুযায়ী ১৯৭৬ সাল থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত প্রায় ৭০ লক্ষ জনশক্তি রপ্তানি হয়েছে। এর মধ্যে অধিকাংশ লোকই অদক্ষ এবং অশিক্ষিত। তারা কিভাবে বৈধভাবে টাকা পাঠাতে হয় তা জানে না। অনেক ক্ষেত্রে তারা অবৈধভাবে টাকা পাঠায়। এছাড়া ব্যাংকের নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে অবৈধ উপায়ে প্রেরিত বৈদেশিক মুদ্রায় মূল্যও অধিক পাওয়া যায়। প্রবাসীদের বহুবিধ সমস্যাগুলোর ভিতরে অন্যতমগুলো হলো :
১. বৈধ উপায়ে অর্থ প্রেরণের দীর্ঘসূত্রতা;
২. বিদেশি মিশনগুলোর সহযোগিতার অভাব;
৩. বৈধ চ্যানেলে প্রেরিত বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হারের পার্থক্য;
৪. বৈধ উপায়ে অর্থ প্রেরণের জন্য পর্যাপ্ত ব্যাংকিং সুবিধার অভাব ও
৫. বিদেশে কর্মরতদের ব্যাংকের মাধ্যমে লেনদেনের অজ্ঞতা। বৈধ উপায়ে প্রেরিত রেমিট্যান্স জাতীয় অর্থনীতিতে যেভাবে সরাসরি সমৃদ্ধ করে অবৈধ উপায়ে প্রেরিত রেমিট্যান্স ততটা ভূমিকা রাখতে পারবে না। তাই রেমিট্যান্সের বৈধ প্রবাহ বৃদ্ধি ও নিশ্চিত করার জন্য আমাদের প্রয়োজনীয় কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করা আবশ্যক। যেমন-
১. যেসব দেশ থেকে বৈধ উপায়ে অর্থ প্রেরণের সুবিধা নেই বা অপ্রতুল সুবিধা রয়েছে সেসব দেশে মিশনগুলোকে উক্ত দেশের ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে অর্থ প্রেরণের প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে এবং তৎসংক্রান্ত তথ্যাদি প্রবাসী বাংলাদেশিদের সরবরাহ করতে হবে।
২. আধুনিক ব্যাংকিং প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে দ্রুততর সময়ের মধ্যে দেশে অর্থ পৌছানোর ব্যবস্থা নিতে হবে।
৩. অদক্ষ ও অশিক্ষিত শ্রমিকদের বিদেশে গমনের পূর্বে বৈধ উপায়ে অর্থ প্রেরণ সম্পর্কে প্রশিক্ষিত ও উদ্বুদ্ধ করতে হবে।
৪. বৈদেশিক মুদ্রার সর্বোচ্চ বিনিময় হার নিশ্চিত করতে হবে এবং
৫. ব্যাংকিং পদ্ধতির সহজতর করে এটার প্রসার ঘটাতে হবে।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, উপর্যুক্ত প্রতিবন্ধকতাসমূহ দূর করার মাধ্যমে আমরা রেমিট্যান্স প্রেরণের জটিলতাসমূহ কমিয়ে আনতে পারি।