রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির মূলনীতিগুলো লিখ।

উত্তর ঃ ভূমিকা ঃ আর্তমানবতার সেবায় নিয়োজিত প্রতিষ্ঠান হিসেবে রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির পরিচিতি বিশ্বব্যাপী এটি প্রতিষ্ঠার পর থেকে দুঃস্থ, পীড়িত, অসহায় ও বিপদাপন্ন জনগোষ্ঠীর উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। ১৯৬৫ সালের অক্টোবরে অনুষ্ঠিত ২০তম আন্তর্জাতিক রেডক্রস সম্মেলনে রেডক্রস ও রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির মূলনীতি
সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয় ।
→ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির মূলনীতি ঃ ১৯৬৫ সালের অক্টোবরে ভিয়েনায় অনুষ্ঠিত ২০তম আন্তর্জাতিক রেডক্রস সম্মেলনে রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির ৭টি মূলনীতি সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়। নিম্নে উক্ত নীতিগুলো আলোচনা করা হলো :
১. মানবতা ঃ কোনো প্রকার ভেদাভেদ ছাড়া যুদ্ধক্ষেত্রে আহতদের সাহায্যের উদ্দেশ্যে সৃষ্ট আন্তর্জাতিক রেডক্রস ও রেডক্রিসেন্ট আন্দোলন, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে সর্বত্র মানুষের দুঃখ, দুর্দশা প্রতিরোধ ও উপশম করার চেষ্টা করে।
২. পক্ষপাতহীনতা ঃ এই আন্দোলন জাতি, গোত্র, ধর্মীয় বিশ্বাস, শ্রেণি বা রাজনৈতিক মতবাদের মধ্যে কোনো বৈষম্য করে না।
৩. নিরপেক্ষতা ঃ সকলের বিশ্বাসভাজনের উদ্দেশ্যে এ আন্দোলন সংঘর্ষকালে কোনো পক্ষ অবলম্বন করে না বা কোনো সময় রাজনৈতিক, গোত্রগত, ধর্মীয় বা আদর্শগত মতবিরোধে অংশগ্রহণ করে না।
৪. স্বাধীনতা ঃ মানবসেবামূলক কাজে সরকারের সহায়ক হিসেবে জাতীয় সোসাইটি নিজ নিজ দেশের আইনের অধীনে ন্যস্ত থাকলেও আন্দোলনের নীতিমালা অনুযায়ী কাজ করার জন্য তাদেরকে অবশ্যই নিজস্ব স্বাধীনতা বজায় রাখতে হবে।
৫. স্বেচ্ছামূলক সেবা ঃ একটি স্বেচ্ছামূলক ত্রাণ আন্দোলন হিসেবে এই আন্দোলনের কোনো প্রকার স্বার্থ বা লাভ অর্জনের উদ্দেশ্য নেই।
৬. একতা ঃ কোনো দেশে কেবলমাত্র একটি রেডক্রস বা রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি থাকতে পারে। সকলের জন্য এর দ্বার অবারিত থাকতে হবে। দেশের সর্বত্র এর মানবসেবামূলক কর্মকাণ্ড বিস্তৃত হতে হবে।
৭. সার্বজনীনতা ঃ সমমর্যাদাসম্পন্ন এবং পরস্পরকে সাহায্যের জন্য সমান দায়িত্ব ও কর্তব্যের অধিকারী জাতীয় সোসাইটিসহ গঠিত বিশ্বব্যাপী আন্তর্জাতিক রেডক্রস ও রেডক্রিসেন্ট আন্দোলন সার্বজনীন।
উপসংহার ঃ পরিশেষে বলা যায় যে, রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি তার কার্যক্রম মূলনীতির নীতিমালা অনুসারে পরিচালনা
করে। বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি যুদ্ধবিধ্বস্ত ও প্রাকৃতিক দুর্যোগে জর্জরিত বাংলাদেশের পুনর্গঠনে ও দুঃস্থ মানবতার সেবায় বহুমুখী ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে।