অথবা, রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকারের অসুবিধা কী কী? অথবা, রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকারের নেতিবাচক দিক কী কী?
অথবা, রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকারের দোষসমূহ সংক্ষেপে আলোচনা কর।
উত্তরঃ ভূমিকা : পৃথিবীর যে কোন সরকার ব্যবস্থার যেমন ভালো, মন্দ, সুবিধা-অসুবিধা, উপকার-অপকার রয়েছে তেমনি রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকার ব্যবস্থাও এর ব্যতিক্রম নয়। রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকারেরও রয়েছে কিছু অসুবিধা। এখানে সর্বময় ক্ষমতা রাষ্ট্রপ্রধানের হাতে থাকে বলে বিভিন্ন ধরনের অনিয়ম হয়ে থাকে, যা রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকারকে বাধাগ্রস্ত করে।
রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকারের অসুবিধা নিয়ে রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকারের অসুবিধা /ত্রুটি/নেতিবাচক দিকসমূহ আলোচনা করা হলো:
১. শাসন বিভাগের স্বৈরাচারিতার সম্ভবনা মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে রাষ্ট্রপতিকে পদচ্যুতি করা যায় না বলে এই ব্যবস্থায় রাষ্ট্রপতির স্বেচ্ছাচারিতার সম্ভবনা থাকে। রাষ্ট্রপতি স্বৈরাচারী হলে আইনসভার পক্ষে তাকে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয় না।
২. বিচার বিভাগের ক্ষমতা বৃদ্ধির আশঙ্কা: শাসন বিভাগ ও আইন বিভাগের বিরোধের সুযোগটিকে রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকারে বিচার বিভাগ কাজে লাগানা। উভয়ের ক্ষমতার দ্বন্দ্ব উপস্থিত হলে বিচার বিভাগই সেই দ্বন্দ্বের মীমাংসার ভার নেয়।ফলে এই শাসনব্যবস্থায় বিচার বিভাগের ক্ষমতা বৃদ্ধির সম্ভাবনা থাকে।
৩. জাতীয় স্বার্থের সুষ্ঠুসংরক্ষণ সম্ভব নয় : র্কন যুক্তরাষ্ট্রের মতো রাষ্ট্রপতি শাসিত ব্যবস্থায় রাষ্ট্রপতিকে জাতীয় স্বার্থের প্রতীক বলা যেতে পারে কি না এ সম্পর্কে সন্দেহ আছে। কেননা রাষ্ট্রপতির আইন প্রণয়নে কোন ভূমিকা নেই। তাই রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকার দ্বারা জাতীয় স্বার্থের সংরক্ষণ সম্ভব নয়।
৪. জরুরি অবস্থায় অক্ষম : জরুরি পরিস্থিতিতে দেশের সংকট মোকাবিলার জন্য যে ধরনের বিচক্ষণতা, দৃঢ়তা, দূরদর্শিতা প্রভৃতি গুণাবলি থাকা দরকার তা এ অবস্থায় রাষ্ট্রপতির থাকে না। তাই এ সরকার তারুরি অবস্থা মোকাবিলায় ব্যর্থ।
৫.অনমনীয়তা : অনমনীয়তা রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকারের একটি অন্যতম ত্রুটি। এর সরকার ব্যবস্থায় সংবিধানের যে
কোন ধারা সহজে পরিবর্তন করা সম্ভব হয় না। এতে জনগণের স্বার্থের ক্ষতি হওয়ার আশা থাকে।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায়, বাহ্যিক দৃষ্টিতে রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকারের কিছু সমস্যা থাকলেও বাস্তবে রাষ্ট্রপতি শাসনব্যবস্থা খুব সময় উপযোগী শাসনব্যবস্থা, যার কোন বিকল্প নেই।