অথবা, যোগদর্শনের অষ্ট অঙ্গ কী কী?
অথবা, যোগদর্শনে অষ্ট অঙ্গগুলো লিখ।
অথবা, যোগে দর্শনে অষ্টবিধ অনুশীলন লিখ।
অথবা, যোগে দর্শনে অষ্টবিধ যোগাঙ্গ লিখ।
উত্তর৷ ভূমিকা : মহর্ষি পতঞ্জলি ‘যোগদর্শনের’ প্রবর্তক এবং প্রতিষ্ঠাতা। পতঞ্জলির নামানুসারে ‘যোগদর্শনকে’ পাতঞ্জলদর্শনও বলা হয়। যোগদর্শনের আদিম গ্রন্থ হলো ‘যোগসূত্র’ বা ‘পাতঞ্জল সূত্র’। বেদব্যাস রচিত ‘যোগভাষ্য’ যোগসূত্রের একটি মূল্যবান ভাষ্য। যোগদর্শন চারি পাদে বা অধ্যায়ে বিভক্ত। আত্মা ও অধ্যাত্মবিষয়ের সাক্ষাৎ উপলব্ধির
জন্য যোগের বিশেষ প্রয়োজনীয়তা বেদে, উপনিষদে, স্মৃতিতে, পুরাণে এবং প্রায় সব ভারতীয় দর্শনে স্বীকৃত হয়েছে। আর
যোগদর্শনে আত্মোপলব্ধির জন্য অষ্ট অঙ্গের উদ্ভব হয়েছে। নিম্নে ‘অষ্ট অঙ্গ’ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
যোগের অষ্ট অঙ্গ : (The Eight fold Means of Yoga) : সাংখ্য ও যোগদর্শন মতে আত্মার উপলব্ধিই মুক্তির কারণ। কিন্তু আত্মোপলব্ধি করতে হলে প্রয়োজন শুদ্ধ, স্থির ও শান্ত চিত্তের। চিত্তকে শুদ্ধ ও শান্ত করার জন্য
যোগদর্শনে অষ্টবিধ অনুশীলনের উপদেশ দেয়া হয়েছে। যথা :
২. নিয়ম,
১. যম,
৩. আসন,
৫. প্রত্যাহার,
৪. প্রাণায়াম,
৭. ধ্যান ও
৬. ধারণা,
৮. সমাধি।
এ অনুশীলনগুলোকে যোগাঙ্গও বলা হয়। এ অষ্টবিধ যোগাঙ্গ আত্মজ্ঞান তথা মুক্তি লাভের সহায়ক। অষ্টবিধ যোগাঙ্গকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়। বহিরঙ্গ সাধন এবং অন্তরঙ্গ সাধন। যম, নিয়ম, আসন, প্রাণায়াম এবং প্রত্যাহার এ
পাঁচটি বহিরঙ্গ সাধন এবং ধারণা, ধ্যান ও সমাধিকে অন্তরঙ্গ সাধন বলা হয়।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, যোগ সাধনার বিভিন্ন স্তরে যোগী বিভিন্ন অলৌকিক শক্তি লাভ করেন। যোগদর্শন মতে সিদ্ধি লাভ যোগ সাধনার চরম লক্ষ্য নয়; আত্মজ্ঞান বা মুক্তি লাভই যোগ সাধনার প্রকৃত উদ্দেশ্য। অষ্টবিধ যোগাঙ্গকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়। বহিরঙ্গ সাধন এবং অন্তরঙ্গ সাধন। যম, নিয়ম, আসন, প্রাণায়াম এবং প্রত্যাহার এ
পাঁচটি বহিরঙ্গ সাধন এবং ধারণা, ধ্যান ও সমাধিকে অন্তরঙ্গ সাধন বলা হয়।