অথবা, যোগান পরিবর্তনের জন্য দায়ী বিষয়সমূহ উল্লেখ কর।
উত্তর: ভূমিকা: যে উপাদানের প্রভাবে যোগানের পরিবর্তন হয় তাকে যোগানের পরিবর্তনের কারণ বলা হয়। যোগানের পরিবর্তন শুধুমাত্র নিজ দ্রব্যের দামের উপর নির্ভর করে না। আর অনেক উপাদানের উপর ও যোগান নির্ভর করে। সেই সকল উপাদানগুলোকে বলা হয় যোগান পরিবর্তনের কারণ। এছাড়া আরও বিভিন্ন কারণে যোগানের পরিবর্তন হতে পারে। যে সব কারণে যোগানের পরিবহন হতে পারে তা নিম্নে আলোচনা করা হলোঃ
১. উৎপাদন ব্যয়ের পরিবর্তনঃ উৎপাদন ব্যয়ের হ্রাস-বৃদ্ধি ঘটলে যোগানের হ্রাস-বৃদ্ধি ঘটে।
২. নিজস্ব চাহিদার পরিবর্তনঃ উৎপাদনকারী যদি উৎপাদিত দ্রব্য নিজেই অধিক পরিমাণে ভোগ করে তবে বাজারে যোগান হ্রাস পায়। যেমন- গুড় উৎপাদনকারী যদি বেশি পরিমাণে গুড় নিজের ব্যবহারের জন্য ব্যয় করে তাবে বাজারে গুড়ের যোগান কমে যাবে।
২. আবহাওয়া ও জলবায়ুঃ কৃষি পণ্যের যোগান আবহাওয়া ও জলবায়ুর উপর নির্ভরশীল। প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে ফসলের উৎপাদন ও যোগান কমে যায়। আবার অনুকূল আবহাওয়ার কারণে ফসলের উৎপাদন ও যোগান বৃদ্ধি করে।
৪. প্রযুক্তির পরিবর্তনঃ প্রযুক্তি ও কলাকৌশলের উন্নয়ন ঘটলে দ্রব্যের উৎপাদন ও যোগানের পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে।
৫. কর ও ভর্তুকি: দ্রব্যের উপর বিক্রয় কর ধার্য’ করলে বিক্রেতা সাধারণত পূর্বাপেক্ষা কম দাম পায়। ফলে দ্রব্যের যোগান কমবে। ভর্তুকির ক্ষেত্রে এর বিপরীত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় এবং যোগান বাড়ে।
৬. বিকল্প দ্রব্যের দামের পরিবর্তন: বিকল্প পণ্যের মূল্যের পরিবর্তনের উপর কোন দ্রব্যের যোগান নির্ভর করে। কোন দ্রব্যের বিকল্প দ্রব্যের দাম কমলে সে দ্রব্যের যোগান বাড়বে। অনুরূপভাবে কোন দ্রব্যের বিকল্প দ্রব্যের দাম বাড়লে সে দ্রব্যটির যোগান কম হবে।।
৭. অন্যান্য পণ্যের মূল্যঃ পণ্যের যোগান অন্যান্য পণ্যের মূল্যের উপর ও নির্ভর করে। অর্থাৎ অন্যান্য পণ্যের মূল্য বেড়ে গেলে উৎপাদনের উপকরণগুলো সেসব পণ্যের উৎপাদনে নিয়োজিত হবে। ফলে এ দ্রব্যের বিকল্প দ্রব্যের দাম বাড়লে সে দ্রব্যটির যোগান কম হবে।
উপসংহার : উপরিউক্ত আলোচনার পরিশেষে আমরা বলতে পারি উপরোক্ত উপাদানগুলোর প্রভাবেই যোগানের পরিবর্তন হয়। সাধারণত এছাড়া আরও অনেক উপাদান থাকলেও উপরোক্ত উপাদানগুলোই প্রধান।