উৎস : ব্যাখ্যেয় গদ্যাংশটুকু মননশীল প্রাবন্ধিক মোতাহের হোসেন চৌধুরী বিরচিত ‘সংস্কৃতি কথা’ শীর্ষক প্রবন্ধ থেকে চয়ন
প্রসঙ্গ : এখানে প্রাবন্ধিক ‘কালচারের কেন্দ্রে নারী’ একথা ব্যাখ্যা করতে গিয়ে পুরুষের জীবনে নারীর গুরুত্ব কতখানি তা তুলে ধরেছেন।
বিশ্লেষণ : কোন কোন ধর্ম নারীকে দেখেছে বিষের নজরে-নরকের দ্বার হিসেবে। এ ধারণা ঠিক নয় । সংস্কৃতি নারীকে দেখে শ্রদ্ধার চোখে । নারীর চোখ, মুখ, শ্রী ও লজ্জা নিয়েই সংস্কৃতির বাহন শিল্প-সাহিত্যের কারবার। ইন্দ্রিয়ের জাগরণ ও নিয়ন্ত্রণের মূলেও নারী। জীবনে শক্তি, সাহস ও সাধনার প্রেরণা নারী থেকেই আসে। তাই কবির মুখে শুনতে পাওয়া যায়, “আমি হব না তাপস, হব না হব না, যদি না পাই তপস্বিনী।” জীবনে তপস্যা করতে চায় বলেই সংস্কৃতিবান লোকের কাছে নারী এত কাম্য। বৈরাগীরা নারীকে পর করে সংস্কৃতিকেও পর করে দেয়। তাই তাদের জীবনে বৃদ্ধি নেই, তারা নিঃস্ব-নতুন নতুন বৃদ্ধি ও প্রীতির স্বাদ থেকে বঞ্চিত। কী মানসিক, কী সাংসারিক সর্বপ্রকার সমৃদ্ধির গোড়ায় নারী। যাত্রাপথে নারীর জয়ধ্বনিই পুরুষের জীবন পথের শ্রেষ্ঠ পাথেয়। যে জাতি নারীকে সম্পূর্ণরূপে আলাদা রাখতে চায় সে জাতি জীবনে মৃত্যুর আরাধনা করে- ইতিহাসের খাতায় মরাজাতি হিসেবে তার নাম লেখা থাকে।
মন্তব্য : নারীকে অবহেলার দৃষ্টিতে দেখা আত্মপ্রবঞ্চনার সামিল। নারী ছাড়া পুরুষের জীবনযুদ্ধে জয়ী হওয়া সম্ভব নয়।