মৌলিক গবেষণার শ্রেণিবিভাগ লিখ ।

অথবা, মৌলিক গবেষণার শ্রেণিভিভাগ আলোচনা কর।
অথবা, বিজ্ঞানভিত্তিক মৌলিক গবেষণা আলোচনা কর।
অথবা, মৌলিক গবেষণা কত রকমের আলোচনা কর।
অথবা, শ্রেণিভিত্তি মৌলিক গবেষণার ব্যাখ্যা লিখ।
অথবা, মৌলিক গবেষণার প্রকারভেদ আলোচনা কর।
উত্তর৷ ভূমিকা :
নির্দিষ্ট কোন বিষয় সম্পর্কে তথ্যসংগ্রহের জন্য বৈজ্ঞানিক ও সুসংঘবদ্ধ অনুসন্ধান প্রক্রিয়াকে গবেষণা বলা হয়। গবেষণা সেসব কর্মকাণ্ড, যা জ্ঞান অনুসন্ধানের আদর্শে মানসম্মত পদ্ধতির প্রয়োগ করে বিকাশলাভ করে। সামাজিক ঘটনাবলিকে সুশৃঙ্খল, যুক্তিপূর্ণ ও বিজ্ঞানভিত্তিক পদ্ধতিতে অনুসন্ধানই সামাজিক গবেষণা। অনুসন্ধান কাজের সুবিধার জন্য সামাজিক গবেষণাকে কয়েক ভাগে ভাগ করা যায় ।
গবেষণার শ্রেণিবিভাগ : গবেষণাকে প্রধানত দু’টি শ্রেণিতে ভাগ করা হয়। যথা ঃ
১.মৌলিক গবেষণা ও
২. ফলিত ব্যবহারিক গবেষণা।
১. মৌলিক গবেষণা : মৌলিক গবেষণার সংজ্ঞায় Kenneth D. Baily বলেছেন, “বিশুদ্ধ গবেষণা তত্ত্ব অনুমানের বিকাশ ও পরীক্ষা ঘটিয়ে থাকে, যা অনুসন্ধানকারীর নিকট বুদ্ধিভিত্তিক দিক দিয়ে আগ্রহোদ্দীপক এবং যার ভবিষ্যৎ সামাজিক কার্যকারিতা থাকলেও বর্তমানে সামাজিক সমস্যার ক্ষেত্রে কোন কার্যকারিতা থাকে না।” (Pure research
(sometime called basic research) involves developing and testing theories and hypothesis that are
intellectually interesting to the investigator might thus have some social application in the future
but no application to the social problems in the present time.) এ গবেষণার মূল উদ্দেশ্য হলো বিশ্বের বিভিন্ন মৌলিক নীতি ও সত্য আবিষ্কার করে তত্ত্বের পরীক্ষা ও উন্নয়ন ঘটানো। এর তাৎক্ষণিক কোন ব্যবহার না থাকলেও পরবর্তীতে ফল লাভ হয়। এ গবেষণা আবার দু’ধরনের কাজ করে থাকে। যথা ঃ
ক. নতুন তত্ত্ব আবিষ্কার ও
খ. প্রচলিত তত্ত্বের উন্নয়ন।
ক. নতুন তত্ত্ব আবিষ্কার : যার কোন অস্তিত্ব পূর্বে ছিল না এরকম জ্ঞান আবিষ্কার করা মৌলিক গবেষণা দ্বারা সম্ভব। গবেষকদের নিজস্ব ধারণা থেকে উদ্ভূত বলে যার প্রতিভা যত বেশি তার প্রদত্ত জ্ঞান তত বেশি উৎকৃষ্ট। প্রকৃতি প্রদত্ত জ্ঞান নিয়ে যারা জন্মগ্রহণ করেন তাদের জ্ঞানের মহিমায় বিশ্ব নতুন আলোর পথ দেখতে পায়। এ সম্পর্কে গ্যালিলিও, নিউটন, আইনস্টাইন, স্টিফেন হকিন্স প্রমুখের কথা উল্লেখযোগ্য। এদের অবদান মৌলিক এবং নিজ নিজ ক্ষেত্রে বলীয়ান।
খ. প্রচলিত তত্ত্বের উন্নয়ন : প্রচলিত তত্ত্বের কিছু কিছু অনুমান বা জ্ঞানের সংশোধন বা পরিমার্জন করে উন্নতি সাধন করে। এটি আবার পুরাতন তত্ত্বের ভিত্তিতে নতুন তত্ত্বের বিকাশ ঘটায়। তত্ত্ব অনুমিতির উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠে বলে এর পরিবর্তন হ্রাস অথবা নতুন কোন অনুমিতির সাহায্য গ্রহণের সুযোগ এ গবেষণায় বিদ্যমান। ফলে প্রচলিত তত্ত্বের পূর্ণ ব্যাখ্যা করে নতুন তত্ত্ব লাভ করা যায়। তবে সকল তত্ত্বের অনুমিতিগুলো সুসংজ্ঞায়িত হতে হবে। মৌলিক গবেষণার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হলো তাৎক্ষণিক নিয়ম আবিষ্কার, ফলে বাস্তব প্রয়োগ কম থাকে। সাধারণীকরণের জন্য মানব
উপসংহার : উপর্যুক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায় যে, সামাজিক বিজ্ঞানে আচরণ সম্পর্কিত গবেষণাকে মৌলিক গবেষণা বলে। জটিল সমস্যা নিখুঁত পদ্ধতি, উত্তম উপকরণ, উচ্চতর নিয়ন্ত্রণ ও বিশ্লেষণ সবই মৌলিক গবেষণার জন্য প্রয়োজন। এসব কারণে মৌলিক গবেষণা গবেষণার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।