অথবা, ‘মৌলিক গণতন্ত্রে’ জেলা কাউন্সিলের গঠন ও প্রকৃতি উল্লেখ কর।
অথবা, মৌলিক গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় জেলা কাউন্সিলের গঠন উল্লেখ কর।
অথবা, মৌলিক গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় জেলা কাউন্সিলের গঠন বর্ণনা কর।
অথবা, মৌলিক গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় জেলা কাউন্সিলের গঠন ও প্রকৃতি বর্ণনা কর।
অথবা, মৌলিক গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় জেলা কাউন্সিলের গঠন সম্পর্কে যা জান লিখ।
অথবা, মৌলিক গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় জেলা কাউন্সিলের গঠন আলোচনা কর।
অথবা, ‘মৌলিক গণতন্ত্রে’ জেলা কাউন্সিল সম্পর্কে কী বলা হয়েছিল?
ভূমিকা : পাকিস্তান আমলে ১৯৫৯ সালের ৭ অক্টোবর পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ফিল্ড মার্শাল আইয়ুব খান এক অধ্যাদেশ বলে (রাষ্ট্রপতি আদেশ নং ১৮) সমগ্র পাকিস্তানে নতুন ধরনের শাসনব্যবস্থা প্রবর্তন করেন। উক্ত শাসনব্যবস্থার নাম ছিল “মৌলিক গণতন্ত্র” এ আদেশ অনুযায়ী স্থানীয় ইউনিয়ন কাউন্সিলের সদস্যগণ নির্বাচকমণ্ডলীতে
পরিণত হয়। এ নির্বাচকমণ্ডলী প্রেসিডেন্ট, কেন্দ্রীয় পরিষদ ও প্রাদেশিক পরিষদের সদস্যদের নির্বাচন করতেন।
‘মৌলিক গণতন্ত্রে’ জেলা কাউন্সিলের গঠন ও প্রকৃতি : মৌলিক গণতন্ত্র অধ্যাদেশ অনুযায়ী স্থানীয় স্বায়ত্তশাসিত সরকারের চারটি স্তর ছিল। এই চারটি স্তর হলো : ১. ইউনিয়ন কাউন্সিল, ২. থানা কাউন্সিল, ৩. জেলা কাউন্সিল ও ৪. বিভাগীয় কাউন্সিল। জেলা পর্যায়ে স্থানীয় স্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে জেলা কাউন্সিল গঠন করা হয়। পূর্বে এর নাম ছিল জেলা বোর্ড। জেলা কাউন্সিলের সদস্য সরকারি ও বেসরকারি উভয় ধরনের ছিল। সরকারি সদস্যদের মধ্যে জেলা প্রশাসক, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক, সিভিল সার্জন, জেলা কৃষি অফিসার, স্কুল পরিদর্শক ছিলেন। বেসরকারি সদস্যগণ ইউনিয়ন কাউন্সিল ও টাউন কমিটির চেয়ারম্যান নির্বাচিত করতেন। জেলা প্রশাসক পদাধিকার বলে জেলা কাউন্সিলের সদস্য ও চেয়ারম্যান ছিলেন। তিনি সকল সভার সভাপতিত্ব করতেন। কাউন্সিলের যাবতীয় প্রশাসনিক কার্যাবলি তার মাধ্যমে সম্পাদিত হতো। তিনি যে কোনো কর্মচারীকে নিয়োগ, বদলি ও অপসারণ করতে পারতেন। প্রত্যেক কাউন্সিলের একজন ভাইস চেয়ারম্যান ও একজন সেক্রেটারি ছিলেন। জেলা কাউন্সিল নিজস্ব তহবিল গঠনের জন্য রেট, ফি, কর ইত্যাদি নির্ধারণ ও আদায় করতে পারত। সরকারি অনুদান ছিল জেলা কাউন্সিলের অন্যতম একটি আয়ের প্রধান উৎস। কাউন্সিলের অর্থ দ্বারা কর্মচারীদের বেতন প্রদান, ঋণ পরিশোধ, অর্থ আদায় জনিত ব্যয়, নির্বাহ করা হতো। জেলা কাউন্সিলকে বিশেষ বিশেষ কার্যে পরামর্শ ও পরিকল্পনা গ্রহণের কাজে সাহায্য করার জন্য কিছু কমিটি ছিল। যেমন- ওয়ার্কাস কমিটি, অর্থ কমিটি, টেন্ডার কমিটি, শিক্ষা কমিটি ইত্যাদি। মূলত জেলা কাউন্সিলের তিন প্রকার কাজ ছিল। যথা : ১. বাধ্যতামূলক কাজ, ২. ইচ্ছামূলক কাজ এবং ৩. সমন্বয়সাধনমূলক কাজ।
উপসংহার : উপর্যুক্ত আলোচনার প্রেক্ষিতে বলা যায় যে, মৌলিক গণতন্ত্রে জেলা পর্যায়ে স্থানীয় স্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে জেলা কাউন্সিল গঠিত হলেও সঠিকভাবে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়নি। থানা কাউন্সিলসমূহের কাজের সমন্বয়সাধন করাই ছিল এ কাউন্সিলের অন্যতম উদ্দেশ্য।