মৌলিক গণতন্ত্র, গণ অভ্যুত্থান, ছয়দফা:
মৌলিক গণতন্ত্র:
মৌলিক গণতন্ত্র হলো একটি রাজনৈতিক ব্যবস্থা যা শেখ মুজিবুর রহমান প্রস্তাব করেছিলেন। এই ব্যবস্থার মূল নীতিগুলো হলো:
- সর্বোচ্চ ক্ষমতার অধিকার জনগণের হাতে থাকবে।
- নির্বাচন স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ হবে।
- মৌলিক মানবাধিকার নিশ্চিত করা হবে।
- আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হবে।
- শক্তি বিভাজনের নীতি মেনে চলা হবে।
- স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা শক্তিশালী করা হবে।
মৌলিক গণতন্ত্রের লক্ষ্য ছিলো একটি ন্যায়সঙ্গত ও সমৃদ্ধ সমাজ প্রতিষ্ঠা করা।
গণ অভ্যুত্থান:
১৯৭১ সালে পাকিস্তানের সামরিক শাসন থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের জন্য সংঘটিত জনগণের সশস্ত্র সংগ্রামকে গণ অভ্যুত্থান বলা হয়। এই অভ্যুত্থানে শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধ পরিষদ গঠিত হয়েছিল এবং তারা স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র প্রচার করেছিল।
গণ অভ্যুত্থানের ফলে পাকিস্তানী সেনাবাহিনী পরাজিত হয় এবং বাংলাদেশ স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে।
ছয়দফা:
১৯৫০ সালে শেখ মুজিবুর রহমান ছয়টি দাবি উত্থাপন করেছিলেন যা বাংলার স্বায়ত্তশাসন অর্জনের লক্ষ্যে প্রণীত হয়েছিল। এই ছয়টি দাবি হলো:
- একক, নিরপেক্ষ ও সংসদীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা।
- বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি।
- অর্থনৈতিক নীতিতে স্বায়ত্তশাসন।
- বিদেশ নীতিতে স্বাধীনতা।
- আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় বাংলা বিভাগের পুলিশ বাহিনী গঠন।
- মুদ্রা নীতিতে স্বায়ত্তশাসন।
ছয়দফা বাংলা জাতীয়তাবাদের ভিত্তি স্থাপন করেছিল এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল।
মৌলিক গণতন্ত্র, গণ অভ্যুত্থান এবং ছয়দফা এই তিনটি ধারণা বাংলাদেশের ইতিহাস ও রাজনীতিতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। এই ধারণাগুলো আজও বাংলাদেশের রাষ্ট্র ও সমাজের ভিত্তি স্থাপন করে চলেছে।