অথবা, মোট সুদ ও নীট সুদ বলতে কি বুঝ?
উত্তর : ভূমিকা : অর্থনীতিতে সুদ ধারণাটি উৎপাদন কার্যে ব্যবহৃত মূলধনের সাথে সম্পর্কিত। উৎপাদন কার্যে ব্যবহৃত মূলধনের জন্য তার মালিককে যে পাওনা প্রদান করতে হয় তাকে সুদ বলা হয়। সাধারণত শতকরা হারে সুদ হিসেব করা হয়।
সুদকে প্রধানত দুইভাগে ভাগ করা যায়। যথা-
১. মোট সুদ (Gross Interest)
২.নীট সুদ (Net Interest)
১. মোট সুদঃ ঋণ ব্যবহারের জন্য ঋণ গ্রহিতা নির্দিষ্ট মেয়াদান্তে বা সময়ান্তে ঋণ দাতাকে আসলের অতিরিক্ত যে পরিমাণ অর্থ প্রদান করে তাকে মোট সুদ বলে।
অন্যভাবে বলা যায়, মূলধনের উৎপাদন ক্ষমতা ও আনুষঙ্গিক কারণে এর মালিককে যে অর্থ দেওয়া হয়, তাই মোট সুদ। মোট সুদ কতগুলো উপাদানের সমষ্টি। তাহল:
(ক) মূলধন ব্যবহারের জন্য নীট সুদ:
(খ) ঝুঁকি বহনের পারিতোষিক।
(গ) ঋণের ব্যবস্থাপনা ব্যয়:
(ঘ) ঋণ আদায়ের জন্য অন্যান্য ব্যয় এবং
(৩) ঋণের সুযোগ ব্যয়।
সুতরাং মূলধনের উৎপাদন ক্ষমতা ও অন্যান্য কারণে ঋণদাতাকে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য যে অতিরিক্ত অর্থ প্রদান করা হয়, তার সমষ্টিকে (Gross Interest) মোট সুদ বলে।
উদাহরণঃ জনাব আশিক সাহেবের নিকট থেকে জনাব রাশিদ মিয়া ৫,০০০ টাকা এক বছরের জন্য ঋণ নিয়ে বছর শেষে ৫৫০০ টাকা প্রদান করে।
এক্ষেত্রে মোট সুদ = (৫৫০০-৫০০০। টাকা = ৫০০ টাকা।
২. নীট সুদ (Net Interest): কেবল মূলধন ব্যবহারের জন্য তার মালিককে যে অর্থ দেওয়া হয়, তাকে নীট সুদ বলে। ঋণদাতার অপরাপর প্রত্যাশিত আনুষঙ্গিক প্রাপ্তি বিবেচনার বাইরে রেখে শুধুমাত্র ঋণ হিসেবে গৃহীত আর্থিক
মূলধন ব্যবহারের বিনিময়ে যে সুদ ঋণ গ্রহীতা ঋণদাতাকে প্রদান করে, তাকে নীট সুদ বলে। এক্ষেত্রে, মোট সুদের একটি অংশ হল নীট সুদ। মোট কথা মোট সুদ হতে ঋণের ঝুঁকি, ঋণ ব্যবস্থাপনার খরচসহ অন্যান্য খরচ বাদ দিলে যা অবশিষ্ট থাকে, তাই নাট সুদ। উদাহরণ: মনে করি, ১০,০০০ টাকার এক বছরের মোট সুদ ১.০০০ টাকা। এর মধ্যে ঋণের আনুষঙ্গিক ব্যয় অর্থাৎ
(খ) ব্যবস্থাপনার জন্য ২০০ টাকা
(ক) ঝুঁকি গ্রহনের জন্য ১০০ টাকা (ঘ) মূলধনের উৎপাদন ক্ষমতা ব্যবহারের জন্য ১০০ টাকা ধরা হয়।
(গ) ঋণ আদায়ের পারিতোষিক ১০০ টাকা।
সুতরাং এ ক্ষেত্রে নীট সুদ = ১০০০- (১০০ + ২০০ + ১০০ + ১০০)। টাকা = ১০০০ – ৫০০ টাকা = ৫০০ টাকা। এখানে উল্লেখ্য, অর্থনীতিতে সুদ বলতে মূলত নীট সুদকেই বুঝায়।