অথবা, মোট সুদ ও নীট সুদের মধ্যে পার্থক্যসমূহ নির্দেশ কর।
উত্তর: মূলধন ব্যবহারের দামকে সুদ বলে। সুদকে দুভাগে ভাগ করা হয়। মোট সুদ ও নীট সুদ উভয়ের মধ্যে বৈশিষ্ট্যগত দিক থেকে কিছু পার্থক্য রয়েছে। নিম্নে উভয়ের মধ্যে পার্থক্য দেখান হলঃ
১. সংজ্ঞাগত : ঋণ গ্রহীতা নির্দিষ্ট সময়ান্তে ঋণদাতাকে আসলের অতিক্তি মোট যে পরিমাণ অর্থ প্রদান করে তাকে মোট সুদ বলে। পক্ষান্তরে, কেবলমাত্র মূলধনের উৎপাদন ক্ষমতা ব্যবহারের জন্য ঋণ গ্রহীতা ঋণ দাতাকে যে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ প্রদান করে, তাকে নিট সুদ বলা হয়।
২. উপাদানঃ মোট সুদের উপাদান হল কয়েকটি
১. নিট সুদ
২. ঋণের ঝুঁকি,
৩. ব্যবস্থাপনা ব্যয়
৪. ঋণ আদায়ের অন্যান্য ব্যয়
৫. ঋণের সুযোগ ব্যয়।
অপরদিকে, নিট সুদের মধ্যে মাত্র একটি উপাদান। তাহল মূলধনের উৎপাদন ক্ষমতা ব্যবহারের পারিতোষিক, বিশুদ্ধ সুদ।
৩. সুদের হারের ভিন্নতাঃ সময়, পরিস্থিতি ও স্থানভেদে মোট সুদ ভিন্ন হতে পারে। কিন্তু, একটি দেশে সর্বত্র নাঁট সুদ একই থাকতে পারে।
৪. ধারণার গভীরতার: মোট সুদ একটি প্রসারিত ধারণা। পক্ষান্তরে, মোট সুদের একটি অংশ হল নীট সুদ। তাই এর ধারণা অপেক্ষাকৃত কম প্রসারিত।
৫. হিসাবের জটিলতাঃ মোট সুদ হিসাব করা সহজ। অপরদিকে, নীট সুদ হিসাব করা সে তুলনায় জটিল।
৬. পরিমাণঃ মোট সুদের পরিমাণ বেশি হয়। পক্ষান্তরে, নীট সুদের পরিমাণ তুলনামূলক কম হয়।
৭. সময়ঃ মোট সুদ নির্ণয়ে কম সময় প্রয়োজন হয়। অপরদিকে, নীট সুদ নির্ণয়ে অধিক সময় প্রয়োজন হয়।
৮. গুরুত্বঃ মোট সুদের অর্থনৈতিক গুরুত্ব কম। কিন্তু, নীট সুদের অর্থনৈতিক গুরুত্ব বেশি।
৯. উদাহরণ: ৫০০০ টাকা এক বছরের ঋণ হিসেবে নিয়ে বছর শেষে ৫৫০০ টাকা প্রদান করে। এক্ষেত্রে মোট সুদ (৫৫০০-৫০০০)। টাকা = ৫০০ টাকা। পক্ষান্তরে উক্ত ৫০০ টাকার মধ্যে ঝুঁকির জন্য ১০০ টাকা, ব্যবস্থাপনা ১০০ টাকা, ঋণ আদায়ের পারিতোধিক ১২০ টাকা, মূলধনের উৎপাদন ক্ষমতা ব্যবহার জনিত ১০০ টাকা ধরা হয়। এক্ষেত্রে নীট সুদ = ৫০ (১০০ + ১২০ + ১০০) = ১৮০ টাকা।