অথবা, মোট উৎপাদন ও প্রান্তিক উৎপাদনের যোগসূত্র দেখাও।
উত্তর: ভূমিকা: মোট প্রান্তিক উৎপাদন খুবই নিকট সম্পর্ক যুক্ত। কারণ মোট উৎপাদন (TPL) রেখা থেকেই প্রান্তিক উৎপাদন (MPL) রেখার উৎপত্তি। উপকরণের পরিমাণের পরিবর্তন হলে মোট উৎপাদনের (IPL) পরিবর্তন হার প্রান্তিক উৎপাদন MPL দ্বারা প্রকাশ পায়। আবার মোট উৎপাদন (TP) যখন বাড়তে থাকে প্রান্তিক উৎপাদন (MP) ও বাড়তে থাকে। (TP) রেখা যখন সর্বোচ্চ হয় (MP) তখন শুন্যে পরিণত হয়। আবার TP রেখা যখন কমতে থাকে MP রেখা তখন ঋণাত্মক হয়। নিচে চিত্রের সাহায্যে ব্যাখ্যা করা হলো।
চিত্রের সাহায্যে ব্যাখ্যাঃ
চিত্রে মোট উৎপাদন রেখার কয়েকটি অংশ বিবেচনার দ্বারা প্রান্তিক উৎপাদনের প্রকৃতি ব্যাখ্যা করা হয়েছে। মূল বিন্দু (০) থেকে A বিন্দুর পূর্ব পর্যন্ত মোট উৎপাদন যখন ক্রমবর্ধমান হারে বাড়ে, তখন প্রান্তিক উৎপাদন বাড়ে এবং প্রান্তিক উৎপাদন রেখা ঊর্ধ্বগামী হয়। A বিন্দু থেকে বিন্দুর পূর্ব পর্যন্ত মোট উৎপাদন বাড়ছে ক্রমহ্রাসমান হারে এবং প্রান্তিক উৎপাদন বাড়ছে ক্রমহ্রাসমান হারে এবং প্রান্তিক উৎপাদন রেখা ডানদিকে নিম্নগামী হয়। A বিন্দুকে ইনফ্লেকশন বিন্দু বলে। এখানে মোট উৎপাদন ক্রমবর্ধমান হার থেকে ক্রমহ্রাসমান হারে বৃদ্ধির দিকে মোড় নেয়। অর্থাৎ ইনফ্লেকশন বিন্দুতে প্রান্তিক উৎপাদন সর্বোচ্চ হয়।
তাই A বিন্দু প্রান্তিক উৎপাদনের সর্বোচ্চ অবস্থান নির্দেশ করে। উপকরণ No নিয়োগের ক্ষেত্রে তা দেখান হয়েছে। N₂ নিয়োগের ক্ষেত্রে C বিন্দুতে মোট উৎপাদন যখন সর্বোচ্চ, প্রান্তিক উৎপাদন তখন শূন্য হয়। উপরিউক্ত আলোচনার প্রেক্ষিতে মোট উৎপাদন (TP) এবং প্রান্তিক উৎপাদন MP এর মধ্যে নিম্মোক্ত সম্পর্ক পরিলক্ষিত হয়।
প্রথমত, মোট উৎপাদন ক্রমবর্ধমান হারে বাড়লে প্রান্তিক উৎপাদন বাড়বে। দ্বিতীয়ত, মোট উৎপাদন ক্রমহ্রাসমান হারে বাড়লে প্রান্তিক উৎপাদন কমে।
তৃতীয়ত, মোট উৎপাদন (TP) রেখার ইনফ্লেকশন বিন্দুতে প্রান্তিক উৎপাদন সর্বোচ্চ।
চতুর্থত, মোট উৎপাদন সর্বোচ্চ অবস্থায় প্রান্তিক উৎপাদন শুন্য। পঞ্চমত, মোট উৎপাদন (TP) কমলে প্রান্তিক উৎপাদন ঋণাত্মক হয়।
উপসংহার : উপরোক্ত আলোচনার পরিশেষে আমরা বলতে পারি TP ও MPএর মধ্যে ঘনিষ্ট সম্পর্ক বিদ্যমান। TP এর উপর MP অনেকটা নির্ভর করে। যার ফলে TP রেখার প্রভাবে MPরেখা প্রভাবিত হয়।